বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য সমর্থন অব্যাহত রাখবে জাপান। কারণ এটি বঙ্গোপসাগর এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের সামগ্রিক স্থিতিশীলতার জন্য সরাসরিভাবে সহায়ক বলে জানিয়েছেন ঢাকায় জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি। বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত হিসেবে ইতো নাওকির এক বছরপূর্তিতে গণমাধ্যমে পাঠানো বার্তা থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
ইতো নাওকি বলেন, ‘আমি জাপানের রাষ্ট্রদূত হিসেবে এসেছি এক বছর হয়ে গেছে। গত এক বছর দ্বিপক্ষীয় উন্নয়নের দিকে ফিরে তাকালে দেখা যায়, বিভিন্ন উচ্চ পর্যায়ের মতবিনিময় এবং আলোচনাগুলোয় অনেক অগ্রগতি দেখা গেছে। ২০১৯ সালের অক্টোবরে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং তার স্ত্রী জাপানের নতুন সম্রাট নারুহিতোর পদগ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দেন। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমেদ একই মাসে জাপান সফর করেন। ২০১৯ সালের রাগবি বিশ্বকাপ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেলও জাপান সফর করেন এবং ২০২০ সালের আগস্টে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে একটি টেলিফোন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।’
রাষ্ট্রদূত বলেন, করোনাভাইরাস মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বাংলাদেশকে সমর্থন অব্যাহত রেখেছে জাপান। আগস্টে জাপান সরকার বাংলাদেশকে কভিড-১৯ সংকট মোকাবেলায় জরুরি সহায়তা ঋণ হিসেবে ৩৫ বিলিয়ন ইয়েন বা প্রায় ৩৩ কোটি মার্কিন ডলার দেয়ার জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করে। এছাড়া চিকিৎসা সরঞ্জাম কিনতে অবদান রেখেছে এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর মাধ্যমে জরুরি সহায়তা প্রদান করেছে জাপান।
জাপানের রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘২০২০ সালে লক্ষণীয় ছিল বাংলাদেশের জন্য জাপানের অফিশিয়াল উন্নয়ন সহায়তা (ওডিএ)। আগস্টে সর্ববৃহৎ বার্ষিক ওডিএ ঋণ প্যাকেজ ৩৩৮ বিলিয়ন ইয়েন, যা প্রায় ৩২০ কোটি মার্কিন ডলার স্বাক্ষরিত হয়। এ বছর ঋণের প্যাকেজটিতে ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি), হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বর্ধিতকরণ, যমুনা রেলওয়ে সেতু নির্মাণ, এবং চট্টগ্রাম-কক্সবাজার হাইওয়ে উন্নয়নসহ সহায়তাগুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়। মাতারবাড়ীতে চলমান গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের পাশাপাশি এ বৃহৎ আকারের অবকাঠামো প্রকল্পগুলো বাংলাদেশী শিল্পের বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় এবং এগুলো সম্পন্ন হয়ে গেলে বাংলাদেশের ভবিষ্যতের প্রতীক হবে। বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য সমর্থন অব্যাহত রাখবে জাপান, কারণ এটি বঙ্গোপসাগর এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের সামগ্রিক স্থিতিশীলতার জন্য সরাসরিভাবে সহায়ক।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ৩০০টিরও বেশি জাপানি সংস্থা কাজ করছে এবং গত ১০ বছরে এ সংখ্যা তিন গুণ বেড়েছে। জাপানের সরাসরি বিনিয়োগও গত আট বছরে দ্বিগুণ হয়েছে। আমরা জাপান ও বাংলাদেশের মধ্যে আরো শক্তিশালী সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য আপনাদের মতামত এবং সহযোগিতা কামনা করছি।’