ফ্রান্স ও ইতালিতে বন্যা ও ভূমিধসে নিহত অন্তত ২

ফ্রান্সের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল ও ইতালির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে আঘাত হানা একটি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় শেষে দেখা দেয়া বন্যা ও ভূমিধসে অন্তত দুজন নিহত হয়েছেন। এছাড়া অন্তত ২০ জন এখনো নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানা গেছে। খবর বিবিসি ও এএফপি।

বন্যা ও ভূমিধসে ফ্রান্সের নিস শহরের বেশ কয়েকটি গ্রাম মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানকার সড়ক, সেতু ও অনেক বাড়িঘর নষ্ট হয়ে গেছে। ইতালির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে দেখা দেয়া বন্যাকে ‘ঐতিহাসিক’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। সেসিয়া নদীর ওপরে নির্মিত একটি সেতুর অংশবিশেষ ভেঙে পড়েছে।

দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা মোকাবেলায় সেনাবাহিনী মোতায়েন এবং জরুরি সেবা পাঠিয়েছেন ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী জ্যঁ কাতে। প্রায় ২০ জনের মতো নিখোঁজ রয়েছেন বা তাদের সঙ্গে যোগাযোগে ব্যর্থ হয়েছেন তাদের আত্মীয়-স্বজনরা। ফ্রান্সের রুকোবিলিয়ে গ্রামে দুই বয়স্ক মানুষ পানিতে তলিয়ে যায়। তাদের ঘর ধসে পড়লে তারা বানের জলে তলিয়ে যায় এবং তাদের পরিণতি এখনো জানা যায়নি।

নিহতের একজন ইতালির অ্যায়োস্তা ভ্যালে ফায়ার সার্ভিসের সদস্য। অপরজন পিয়েডমোন্ট অঞ্চলের বাসিন্দা। বন্যার পানিতে ৩০ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির গাড়ি নদীতে ভেসে গেলে তার মৃত্যু হয়। তার এক ভাই অবশ্য গাড়ি থেকে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হয়।

অ্যালেক্স নামের এ ঝড়ে বন্যা দেখা দিয়েছে। ফ্রান্সের নিস শহরের বেশকিছু গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানকার মেয়র এটিকে তার স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা বলে দাবি করেছেন।

হেলিকপ্টারে বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের পর নিস শহরের মেয়র ক্রিশ্চিয়ান এস্ট্রোসি ফরাসি চ্যানেল বিএফএমকে বলেন, রাস্তাঘাট ও প্রায় ১০০ বাড়ি ভেসে গেছে অথবা আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ২০০ জনকে আশ্রয় দিয়েছে এবং বন্যায় বিচ্ছিন্ন বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দাদের খাদ্য ও পানির বোতল সরবরাহ করেছে।

ফ্রান্সের আবহাওয়া সংস্থা মেতেও-ফ্রান্স জানায়, দেশটির কিছু অঞ্চলে ২৪ ঘণ্টায় ৪৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। কিন্তু বছরের এ সময়ে চার মাসে সমপরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়। শুক্রবার শুরু হওয়া এ ঝড় এবং বন্যা এখন ফ্রান্স পেরিয়ে ইতালির ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে। উত্তর ইতালিতে নদীর পানি বেড়ে গেছে। বন্যার পানিতে রাস্তাঘাট ও ব্রিজ ভেসে গেছে।

রাতারাতি এ বন্যায় নিখোঁজ ২৫ জনের মধ্যে ইতালির উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের ১৭ জন।

স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নিখোঁজ ব্যক্তিদের মধ্যে একদল জার্মান ট্রেকারও রয়েছেন, তারা পাহাড়ে ভ্রমণের পর আর ফিরে আসেননি। অন্যদিকে ফ্রান্সের আটজন নিখোঁজ হয়েছেন বলে জানা গেছে।

ইতালির পিয়েডমোন্ট অঞ্চলের বেশকিছু গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এছাড়া উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের লোম্বার্ডি ও লিগুরিয়া অঞ্চলও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কর্তৃপক্ষ এটিকে খুবই ‘সংকটপূর্ণ পরিস্থিতি’ বলে উল্লেখ করেছেন।

বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় এরই মধ্যে সাহায্যকর্মী পাঠানো হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে লোম্বার্ডি ও লাইগুরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভেন্তিমিগিলার রোজা নদী বন্যায় প্লাবিত হয়ে গেছে। এর মধ্যে ইতিবাচক খবর হলো ফ্রান্স সীমান্ত এলাকায় নিখোঁজ ২০ ইতালীয়কে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *