নির্বাচনের কারচুপির অভিযোগ নিয়ে উত্তাল বেলারুশ। বর্তমান ও পুনর্নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ বাড়ছেই। এ অবস্থার মধ্যেই গতকাল রাশিয়া জানিয়েছে, লুকাশেঙ্কোর সহায়তার জন্য প্রয়োজনে দেশটি সামরিক সহায়তা দিতেও প্রস্তুত। ক্রেমলিন জানিয়েছে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন টেলিফোনে লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে কথা বলেছেন। এ সময় প্রয়োজনে একটি সম্মিলিত সামরিক চুক্তি অনুসারে বেলারুশকে সহায়তা করা হবে বলে তিনি জানান। খবর রয়টার্স।
নির্বাচনের পর প্রথমবারের মতো গতকাল রাজধানী মিনস্কে জড়ো হয় লুকাশেঙ্কোর সমর্থকরা। এর আগে মধ্য মিনস্কের এ স্থানেই বিরোধী দলের সমর্থকরা বিক্ষোভ করে। গতকালও তাদের বিক্ষোভ আয়োজন করার কথা ছিল। ফলে সংঘর্ষ এড়াতে গতকাল সেখানে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। জমায়েতে এক বক্তা লুকাশেঙ্কোপন্থীদের উদ্দেশে বলেন, আমাদের মাতৃভূমি বিপদে রয়েছে। পাল্টা জমায়েত থেকে তখন ‘আমরা ঐক্যবদ্ধ ও অবিভাজ্য’ বলে স্লোগান দেয়া হয়। এ সময় ৬৮ বছর বয়সী অ্যালা জর্জিয়েভনা নামে একজন বলেন, আমি এখানে লুকাশেঙ্কোর জন্য এসেছি। আমি বুঝতে পারছি না যে কেন মানুষ তার বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছে। আমরা তো নির্দিষ্ট সময়ে আমাদের বেতন ও অবসর ভাতা পাচ্ছি এবং এজন্য তাকে ধন্যবাদ দেয়া উচিত। এছাড়া জাতীয় পতাকা নিয়ে ‘বেলারুশের জন্য! কিংবা ‘বাটকার জন্য’ স্লোগান দেন অনেকেই। উল্লেখ্য, বাটকা হলো লুকাশেঙ্কোর ডাকনাম।
এদিকে ৬৫ বছর বয়সী লুকাশেঙ্কো অভিযোগ করেছেন, তাকে ক্ষমতা থেকে অপসারণের জন্য বিদেশী শক্তি কলকাঠি নাড়ছে। তিনি বলেন, বেলারুশের সীমান্ত থেকে মাত্র ১৫ মিনিটের দূরত্বে ন্যাটো ট্যাংক ও যুদ্ধবিমান মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া প্রতিবেশী দেশগুলো নতুন করে নির্বাচন করার জন্য নির্দেশ দিচ্ছে। কিন্তু তিনি কিছুতেই ফের নির্বাচন আয়োজন করবেন না। কারণ তার মতে, তিনি ৮০ শতাংশ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন এবং এক্ষেত্রে কোনো কারচুপি হয়নি।
এরই মধ্যে রাজধানী মিনস্কে লুকাশেঙ্কোবিরোধী বিক্ষোভে অন্তত দুজন মারা গেছেন। আন্দোলন থামাতে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ওপর চড়াও হলে আহত হয় কয়েকশ মানুষ। গ্রেফতার হয় ৬ হাজার ৭০০ জনেরও বেশি। বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশ চড়াও হওয়ার ঘটনায় দেশটির ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা ভাবছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।