স্টিভ বাকনার। ক্রিকেটের ইতিহাসের অন্যতম সেরা আম্পায়ার। কিন্তু তারও বাজে সিদ্ধান্ত দেয়ার দুর্নাম আছে। ভারতীয় ব্যাটিং কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকারকে টেস্টে দু’বার ভুল আউট দিয়েছিলেন। একবার ২০০৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে গ্যাবা টেস্টে। আরেকবার ২০০৫ সালে ইডেন গার্ডেন টেস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে। বাকনার মনে করেন, আম্পায়াররা যেহেতু মানুষ, ভুল তাদের হবেই। তবে প্রযুক্তি কল্যাণে এখন ভুলটা এখন মাঠেই শুধরে নেয়া যায়।
আম্পায়াররাও তাই কম অনুশোচনায় পুড়েন বলে মনে করেন তিনি।
বার্বাডোজে এক প্রোগ্রামে ক্যারিবিয়ান আম্পায়ার বাকনার বলেন, ‘আমি নিশ্চিত নই, এটা (প্রযুক্তির ব্যবহার) আম্পায়ারদের আত্মবিশ্বাসে কোনো প্রভাব ফেলেছে কি না। কিন্তু আমি জানি, প্রযুক্তি আম্পায়ারিংয়ের উন্নতি সাধন করেছে। কারণ একটা সময় ছিল, যখন আমরা বলতাম ব্যাটসম্যান ডাউন দ্য লাইনে এসে খেললে তাকে লেগ বিফোর দেয়া যাবে না। কিন্তু প্রযুক্তি বলে- বল যদি উইকেটে হিট করে আপনাকে আউট দিতে হবে। কাজেই আমরা টেকনোলজি থেকে শিখছি।’
অনেক আম্পায়ারই মনে করেন, ডিআরএস, হটস্পট এসবের ব্যবহারের কারণে আম্পায়ারিং উপভোগ করতে পারছেন না তারা। তবে বাকনার এমনটা মানতে নারাজ। তিনি বলেন, ‘আম্পায়ারদের মধ্যে যারা টেকনোলজির ব্যবহার উপভোগ করতে পারছেন না, আমি মনে করি এতে তাদের মত পাল্টনোর সুযোগ থাকে। কোনো ভুল করলে তা মাঠেই সংশোধন করা যায়।’
এরপর বাকনার বলেন, ‘আমার কথা ভাবুন। আমি আম্পায়ারিং করার সময় একজন ব্যাটসম্যানকে আউট দিয়ে দিলাম। যদিও সে নট আউট। বুঝতে পারলাম যে ভুল আউট দিয়েছি। আর এ কারণে রাতে আমার ঘুমাতে দীর্ঘ সময় লাগলো। এখন আপনি দ্রুত ঘুমাতে পারবেন। কারণ সঠিক সিদ্ধান্তটা তাৎক্ষণিক দিয়ে দেয়া হয়।’
শচীনকে ভুল আউট দেয়ার ব্যাপারে বাকনার বলেন, ‘টেন্ডুলকারের ক্ষেত্রে দুবার এমনটা ঘটেছে। আমি মোটেও মনে করি না কোনো আম্পায়ার ভুল করতে চাইবে। ভুলটা তার সঙ্গে থেকে যায়, তার ক্যারিয়ারকেও হুমকিতে ফেলে। তবে মানুষ মাত্রই ভুল। একটা ভুল করেছিলাম অস্ট্রেলিয়ায়। তাকে লেগ বিফোর দিই (বোলার জেসন গিলেস্পি)। কিন্তু বলটা মূলত স্টাম্পের উপর দিয়ে চলে যাচ্ছিল। আরেকবার ভারতে তাকে কট বিহাইন্ড দিয়েছিলাম (বোলার আব্দুল রাজ্জাক)। বলটা ব্যাটের পাশ ঘেঁষে চলে যায়, যদিও স্পর্শ করেনি। কিন্তু ইডেনে ১ লাখ দর্শকের চেঁচামেচির কারণে ভুলটা হয়ে যায়। ওই দুটি ভুল আমাকে খুব পুড়িয়েছে। আসলে ভুল করা এবং ভুল মেনে নেয়া- দুটোই মানব জীবনেই অংশ।’