পুষ্টিনিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য সচেতনতা সবচেয়ে বেশি জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এমপি। পুষ্টি বিষয়ে সব জনগণ বিশেষ করে তরুণরা সচেতন হলেই পুষ্টি নিরাপত্তা অর্জন করা সম্ভব হবে। দেশের জনসংখ্যার একটা বিরাট অংশ তরুণ। এ তরুণ জনগোষ্ঠীর শক্তিকে কাজে লাগাতে হবে। পুষ্টিবিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধি, পুষ্টিসম্মত জীবনযাপন অনুশীলন ও কর্মসূচিতে তরুণদের সম্পৃক্ত করতে পারলে পুষ্টিসমৃদ্ধ জাতি গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
গতকাল কৃষিমন্ত্রী গতকাল সকালে ‘নিউট্রিশন অলিম্পিয়াড ২০২০’-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। তবে সচেতনতার পাশাপাশি স্বল্প বা কম আয়ের মানুষের আয়ের পথও বাড়াতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে টাকার অভাবে স্বল্প আয়ের বা প্রান্তিক গরিব মানুষরা পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার কিনতে পারে না। সেজন্য তাদের আয়ের পথকে প্রশস্ত করতে হবে এবং সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর কর্মসূচিকে আরো শক্তিশালী করতে হবে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষের জন্য পুষ্টিসম্মত ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে সরকার বদ্ধপরিকর। পুষ্টি খাতকে বিশেষ প্রাধান্য দিয়ে ‘খাদ্যনিরাপত্তা ও পুষ্টিনীতি ২০২০’ এবং জাতীয় পুষ্টি কর্মপরিকল্পনা ২০১৬-২৫সহ বিভিন্ন সেক্টরাল পলিসির আওতায় বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। সরকার পুষ্টি সংবেদনশীল কৃষিনীতি ও কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে পুষ্টিনিরাপত্তা নিশ্চিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
বিড (বিআইআইডি) ফাউন্ডেশন, গেইন, আইসিটি বিভাগ, নিউট্রিশন ক্লাব যৌথভাবে করোনা মহামারীর কারণে ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে এবারের অলিম্পিয়াড আয়োজন করে। ‘তরুণদের নেতৃত্বে পুষ্টিসমৃদ্ধ ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ’ এই থিম নিয়ে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হচ্ছে ‘নিউট্রিশন অলিম্পিয়াড ২০২০’। কভিড-১৯ মহামারীর কারণে এবার অনলাইনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এই অলিম্পিয়াড।
ড. রাজ্জাক আরো বলেন, আমাদের দেশে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাপক উন্নয়ন এবং ব্যবহার তরুণদের জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে কার্যকর ভূমিকা পালন করছে। আমাদের তরুণরা তথ্যপ্রযুক্তি খাতের মতো আধুনিক বিষয়গুলোয় যে দক্ষতা প্রদর্শন করেছে, পুষ্টি খাতেও এটির প্রতিফলন ঘটলে পুষ্টিসমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে উঠবে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কাজী জেবুন্নেছা বেগমের সভাপতিত্বে কানাডার রাষ্ট্রদূত বেনওয়া প্রিফন্তেইন, পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক নাজমা শাহীন, আইসিটি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আরশাদ আলী, অতিরিক্ত সচিব রুহুল আমিন তালুকদার, বিড ফাউন্ডেশনের সিইও শহীদ উদ্দিন আকবর, গেইনের কান্ট্রি ডিরেক্টর রুদাবা খন্দকার বক্তব্য রাখেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক এমএ সাত্তার মন্ডল।
কিশোর-কিশোরী এবং তরুণদের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে পুষ্টিসমৃদ্ধ সমাজ গঠনে সম্মিলিত উদ্যোগের বার্ষিক জাতীয় অনুষ্ঠান হলো ‘নিউট্রিশন অলিম্পিয়াড’। বাংলাদেশে নিউট্রিশন ক্লাবের পথচলা শুরু ২০১৫ সালে। প্রথমে ইউনিভার্সিটি লেভেল থেকে শুরু করা হলেও বর্তমানে সাড়ে চার হাজারেরও বেশি স্কুল, কলেজ ও ইউনিভার্সিটিতে সক্রিয় নিউট্রিশন ক্লাব রয়েছে, যার মাধ্যমে স্বল্প পরিসরে হলেও নিউট্রিশন নিয়ে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছে শিক্ষার্থীরা।