আগামী ৯ সেপ্টেবর আলোচিত পুলিশ সদস্য এসআই জাহিদুর রহমান জাহিদসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে পুলিশি হেফাজতে জনি নামে এক যুবক হত্যার মামলায় রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেছেন আদালত। গতকাল ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কেএম ইমরুল কায়েশ রায় ঘোষণার এ তারিখ ঠিক করেন।
এর আগে এ মামলায় আদালত ২১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। এরপর আত্মপক্ষ ও যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে বিচারক রায় ঘোষণার দিন ঠিক করলেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন পল্লবী থানার এসআই রাশেদুল ইসলাম ও এসআই কামরুজ্জামান মিন্টু এবং পুলিশের সোর্স রাশেদ ও সুমন। আসামিদের মধ্যে এসআই জাহিদ ও সুমন কারাগারে এবং অন্য আসামিরা জামিনে আছেন। মামলাটিতে ২০১৬ সালের ১৭ এপ্রিল আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন আদালত। পরে হাইকোর্টে আসামিদের আবেদনে দীর্ঘদিন মামলাটির বিচার বন্ধ ছিল।
পুলিশ হেফাজতে নির্যাতন করে মারার অভিযোগে ২০১৪ সালের ৭ আগস্ট নিহতের ভাই ইমতিয়াজ হোসেন রকি ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে এ মামলা দায়ের করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে পল্লবী থানার ইরানি ক্যাম্পে বিল্লাল নামের একজনের গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান ছিল। নিহত জনি, তার ভাই মামলার বাদী রকিসহ অন্য সাক্ষীরা সে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। রাত ২টার দিকে পুলিশের সোর্স এ মামলার ৭ নম্বর আসামি সুমন মদ খেয়ে স্টেজে উঠে মেয়েদের উত্যক্ত করছিলেন। জনি তাকে প্রথমে স্টেজ থেকে নামিয়ে দেন। কিন্তু দ্বিতীয়বার সুমন একই কাজ করলে সুমনের সঙ্গে তার কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে জনি সুমনকে থাপ্পড় দিলে সে আধাঘণ্টা পর এসআই জাহিদসহ ২৫-২৬ জন পুলিশ নিয়ে বিয়ে বাড়িতে এসে ভাংচুর করে নিহত জনি, রকিসহ বেশ কয়েকজনকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর এসআই জাহিদসহ অন্য আসামিরা তাদের পল্লবী থানা হাজতে হকিস্টিক ও ক্রিকেটের স্টাম্প দিয়ে বেদম প্রহার করেন। জাহিদ জনির বুকের ওপর চড়ে লাফালাফি করেন। জনি এ সময় একটু পানি খেতে চাইলে জাহিদ তার মুখে থুথু ছুড়ে মারে। নির্যাতনে মামলার বাদী রকি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তার বড় ভাই জনিকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ঢাকা ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশি নির্যাতনে মৃত্যুর ঘটনা ধামাচাপা দিতে ইরানি ক্যাম্প ও রহমত ক্যাম্পের মধ্যে মারামারির মিথ্যা কাহিনী দেখিয়ে জনি নিহত হয় বলে দেখানো হয়।
উল্লেখ্য, ঝুট ব্যবসায়ী সুজনকে পুলিশ হেফাজতে একইভাবে হত্যার ঘটনার আরেক মামলায়ও আসামি এসআই জাহিদুর রহমান জাহিদ। ওই মামলা বর্তমানে উচ্চ আদালতের নির্দেশে স্থগিত আছে।