পুঁজিবাজারে লেনদেন দেড় হাজার কোটি টাকায় নিতে চায় কমিশন

বর্তমানে পুঁজিবাজারে ১ হাজার কোটি টাকার আশপাশে লেনদেন হচ্ছে, যা এ বছরের মধ্যেই দেড় হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত উত্তীর্ণ করতে হবে। এ লক্ষ্যে কমিশন কাজ করছে। গতকাল বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ উপলক্ষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) লিমিটেড আয়োজিত ওয়েবিনারে এসব কথা বলেন পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম। ‘ডিলিং উইথ ইনভেস্টার্স’ শীর্ষক এ ওয়েবিনারে সভাপতিত্ব করেন ডিএসইর চেয়ারম্যান মো. ইউনুসুর রহমান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, তিন বছরের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ একটি বাজার আমরা উপহার দেব। বর্তমান কমিশনের মাত্র চার মাস সময় হলেও এরই মধ্যে বেশকিছু পুনর্গঠনের কাজ শুরু করা হয়েছে। এর ফলাফল আপনারা ইতোমধ্যে দেখতে শুরু করেছেন। পুনর্গঠনের সব কাজ ভালোভাবে সম্পন্ন হলে বর্তমান কমিশনের মেয়াদের দুই বছরের মধ্যেই একটি আধুনিক পুঁজিবাজার দেখা যাবে।

তিনি আরো বলেন, বাজারে ত্রুটি থাকলে বিএসইসি সেটা ধরে সংশোধনের কাজ করতে পারে। বাজারে বিভিন্ন খাতের দাম বৃদ্ধি পাওয়া ও কমার বিষয় নিয়ে অনেকেই আমাদের ফোন করেন, ফেসবুকে লেখেন, ই-মেইল করেন, চিঠি লেখেন। জানতে চান, এই সেক্টর কেন বাড়ছে, ওই সেক্টর কেন কমছে। সত্যিকার অর্থে আমরা যদি কেনা-বেচার দিকে নজর দিতে যাই, তাহলে বাজারে বিনিয়োগ করে শান্তি পাওয়া যাবে না।

তিনি আরো বলেন, পুঁজিবাজার টিকে থাকে বিনিয়োগকারীদের জন্য। তারা এখানে বিনিয়োগ করেন বলেই বিভিন্ন কোম্পানি এখান থেকে অর্থ সংগ্রহের সুযোগ পায়। এবং সেই অর্থ দিয়ে শিল্পায়ন হয়। এতে কোম্পানি যেমন লাভবান হচ্ছে, তেমনি বিনিয়োগকারীরা লাভবান হচ্ছেন। সর্বোপরি দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। তাই দেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণের জন্য পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ দরকার। যারা আমাদের ওপর আস্থা রেখে এখানে বিনিয়োগ করছেন, তাদের সুরক্ষা দেয়া আমাদের দায়িত্ব। আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করছি।

ডিএসই চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান বলেন, আজকের যারা বিনিয়োগকারী তারা ব্যবসায়ের ভাষায় কাস্টমার। তাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে হবে। কাস্টমারের কথা এমনভাবে মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে, যাতে তারা বুঝতে পারে আপনি তাদের কথা শুনছেন। যখন মনে হবে কোনো ভুল হয়েছে, তখন কাস্টমারের কাছে দুঃখ প্রকাশ করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। বিনিয়োগের মাধ্যমেই উন্নত রাষ্ট্রের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে। বিএসইসি, স্টক এক্সচেঞ্জ, ট্রেকহোল্ডার সবারই দায়িত্ব আছে। সবাইকে বিনিয়োগকারীদের প্রতি সংবেদনশীল হতে হবে। বিনিয়োগকারীদের সন্তুষ্টি অত্যন্ত জরুরি।

ডিএসই পরিচালক মো. রকিবুর রহমান বলেন, বর্তমান কমিশনের নেতৃত্বে আমি স্বপ্ন বাস্তবায়ন হতে দেখছি। এর আগে ৪০ বছর শুধু স্বপ্নই দেখেছি। এ কমিশনের নেতৃত্বে আমি অভিভূত। তাদের প্রতিটি পদক্ষেপ বাজারের জন্য কার্যকর ভূমিকা রাখছে। তারা মাত্র চার মাসেই বাজারের জন্য অনেক ভূমিকা রেখেছেন। তবে এখনো কিছু সমস্যা রয়ে গেছে। এগুলো সমাধানে তাদের কিছুটা সময় দিতে হবে।

ওয়েবিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী ছানাউল হক। প্যানেল আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মোহাম্মদ রেজাউল করিম, ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট শরীফ আনোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানির ভাইস প্রেসিডেন্ট রিয়াদ মাহমুদ, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের প্রেসিডেন্ট নিহাদ কবির এবং ডিএসইর পরিচালক মো. শাকিল রিজভী। অনুষ্ঠানে সঞ্চালক হিসেবে ছিলেন ডিএসইর প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা এম সাইফুর রহমান মজুমদার এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডিএসইর প্রধান অর্থ কর্মকর্তা আব্দুল মতিন পাটওয়ারী।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *