পাল্টা কর্মসূচি বাম গোষ্ঠীদেরও

নির্বাচনে পরাজয় কিছুতেই মেনে নিতে রাজি নন ক্ষমতাসীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। হাতে কোনো অকাট্য তথ্য-প্রমাণ না থাকলেও তিনি নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ করে আসছেন। এবার তার এ অভিযোগের সমর্থনে ওয়াশিংটন ডিসিতে সমাবেশ করেছেন তার লাখো সমর্থক। খবর রয়টার্স ও বিবিসি।

৩ নভেম্বরের নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেনের জয় নিশ্চিত হওয়ার সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও ট্রাম্প হার মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে যাচ্ছেন। নির্বাচনের ফলাফল পাল্টে দেয়ার লক্ষ্যে বেশ কয়েকটি রাজ্যে তার আইনজীবীরা একের পর এক আইনি লড়াইয়ের সূচনাও করেছেন।

তবে মার্কিন নির্বাচনী কর্মকর্তারা ট্রাম্পের ভোট জালিয়াতির দাবি প্রত্যাখ্যান করে আসছেন। ভোটে গুরুতর কোনো অনিয়ম দেখেননি বলেও জানিয়েছেন তারা।

শনিবার ট্রাম্প অনুসারীরা তাদের ‘মিলিয়ন মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন মার্চ’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা হাতে হোয়াইট হাউজের নিকটবর্তী ফ্রিডম প্লাজা থেকে ক্যাপিটল হিলের সুপ্রিম কোর্ট ভবন পর্যন্ত এলাকাজুড়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন। এ সময় তাদের অনেকে ‘চুরি থামাও’ বলে স্লোগান দেন।

সমাবেশের এক পর্যায়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাড়িবহর সমর্থকদের ভিড়ের মধ্য দিয়েই ভার্জিনিয়ার স্টার্লিংয়ে তার গলফ কোর্সের দিকে এগিয়ে যায়। ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ স্লোগান লেখা লাল বেসবল ক্যাপ পরা প্রেসিডেন্টকে দেখতে পেয়ে এ সময় বিক্ষোভকারীরা উল্লসিত হয়ে ওঠেন। ট্রাম্পকেও এ সময় তার প্রেসিডেন্সিয়াল লিমুজিন থেকে সমর্থকদের উদ্দেশে হাত নাড়তে দেখা যায়। পরে এক টুইট বার্তায় ট্রাম্প বিক্ষোভকারীদের প্রসঙ্গে লেখেন, ‘তারা কারচুপি ও দুর্নীতির নির্বাচনের পক্ষে নেই।’

ট্রাম্প দাবি করেন, শনিবার লাখ লাখ মার্কিন তার অভিযোগের প্রতি সমর্থন জানিয়ে ওয়াশিংটনের বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নিয়েছে। তবে সমাবেশে উপস্থিত মানুষের সংখ্যার বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে নুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। আর প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, সমাবেশে যত মানুষ হবে বলে ট্রাম্প আশা করেছিলেন, বাস্তবে জনসমাগম তার চেয়ে অনেক কম ছিল।

ফ্লোরিডার ওয়েস্ট পাম বিচ থেকে সমাবেশে যোগ দিতে আসা ডোনাল্ড টারসা জুনিয়র বলেছেন, ‘আমার মনে হয়েছে এ নির্বাচনে অনেক জায়গাতেই কারচুপি হয়েছে। পাশাপাশি গণমাধ্যমও অনেক ক্ষপাতিত্ব করেছে। তারা লাখ লাখ নাগরিককে বাইডেনের পক্ষে ভোট দিতে উৎসাহিত করেছে।’

এ সমাবেশে কট্টর ডানপন্থী প্রাউড বয়েজ গোষ্ঠীর অনেক সদস্যকেও দেখা গেছে। তাদের বেশির ভাগেরই পরনে ছিল কালো পোশাক। তাদের কারো মাথায় হেলমেট ও গায়ে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেটও ছিল।

একই দিন ওয়াশিংটনে সুপ্রিম কোর্টের কাছে বাম ঘরানার কিছু গোষ্ঠীও পাল্টা ছোট ছোট কর্মসূচি করেছে, যেগুলোয় কট্টরপন্থী হিসেবে পরিচিত অ্যান্টিফার সদস্যদেরও দেখা গেছে। পাল্টা-প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নেয়া অনেককে কালো ছাতা ও হাতে বানানো ঢাল বহন করতে দেখা গেছে। ট্রাম্প সমর্থকরা যেন পেছন দিক থেকে এসে চড়াও হতে না পারেন, সেজন্য অনেকে সারি সারি বাইসাইকেল রেখে ব্যারিকেড

তৈরি করেন।

ওয়াশিংটন ডিসিতে এসব পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির কারণে বেশকিছু ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। তবে বড় ধরনের কোনো সহিংসতা ঘটেনি। অবশ্য এ সময় ছুরিকাঘাতের একটি ঘটনা ঘটে। এক ব্যক্তি ছুরিকাহত হওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে তাকে একটি ট্রমা সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *