পশ্চিমবঙ্গে করোনায় নারীদের মৃত্যুহার বেশি, ব্যাখ্যা খুঁজছেন বিশেষজ্ঞরা

নভেল করোনাভাইরাসের এখন পর্যন্ত যে চরিত্র বৈশিষ্ট্য দেখা গেছে তাতে পুরুষের আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার বেশি পরিলক্ষিত হয়েছে। এর নানা ব্যাখ্যাও দেয়ার চেষ্টা করেছেন বিজ্ঞানীরা। এর জন্য পুরুষদের অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন পদ্ধতি এবং নিকোটিন অ্যালকোহন সেবন প্রবণতাকেই মূলত দায়ী করা হচ্ছে।

তবে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের পরিসংখ্যান বলছে ভিন্ন কথা। এখানে মৃত্যুহার নারীদের মধ্যে বেশি। অবশ্য এর পেছনে সামাজিক কারণ আছে বলে অনেকে অনুমান করছেন।

গতকাল সোমবার পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিনে মৃত্যুর যে পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়েছে তাতে জানানো হয়েছে, করোনাভাইরাসে মৃতদের মধ্যে কো-মরবিডিটি (ডায়াবেটিস, উচ্চরক্ত চাপ ইত্যাদি) ছিল, এমন রোগীর সংখ্যা ২৬৬ জন। শতাংশের হিসাবে যা ৬৫ দশমিক ৬ শতাংশ। কো-মরবিডিটি নেই এমন রোগীর সংখ্যা ১৩৯, অর্থাৎ ৩৪ দশমিক ৪ শতাংশ। বয়স এবং লিঙ্গের ভিত্তিতে মৃত্যুর পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, মৃতদের মধ্যে ৭৫ বছরের ঊর্ধ্বে থাকা ব্যক্তিদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি— ২১.০৭ শতাংশ, ৬০-৭৫ বছর বয়সীরা ১৫ দশমিক ৩৯ শতাংশ, ৪৫-৬০ বছর বয়সীরা ৭ দশমিক ০৩ শতাংশ।

বুলেটিনের তথ্য অনুয়ায়ী, আক্রান্ত পুরুষদের মধ্যে মৃত্যুর হার যেখানে ৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ, সেখানে নারীদের মধ্যে তা ৫ দশমিক ৪০ শতাংশ। 

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের একাংশের ধারণা, সামাজিক কারণে নারীদের করোনাভাইরাস পরীক্ষা সম্ভবত কম হচ্ছে। এ কারণেই আক্রান্ত শনাক্তের হিসাবে তারা অনেক পড়ে এসে যুক্ত হচ্ছেন। ফলে চিকিৎসায়ও দেরি হচ্ছে। আর দেরিতে চিকিৎসা পাওয়ায় তাদের বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনাও কম থাকছে।

পশ্চিমবঙ্গে স্বাস্থ্য বুলেটিনে আরেকটি তথ্য উঠে এসেছে। এখানে কো-মরবিডিটির মধ্যে উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যায় যারা আগে থেকে ভুগছিলেন তাদের মৃত্যুর হার বেশি। মৃত পুরুষদের ক্ষেত্রে ২৭ শতাংশ এবং নারীর মধ্যে ২৯ শতাংশের উচ্চ রক্তচাপ ছিল। কো-মরবিডিটি বিবেচনায় ৩১-৪৫ বছরের মধ্যে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপের প্রকোপ উদ্বেগজনক।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *