‘পরিচালনার বিষয়টি উপভোগ করেছি’

প্রায় দুই দশক ধরে ছোট পর্দায় অভিনয় করছেন অভিনেত্রী গোলাম ফরিদা ছন্দা। অভিনয় দক্ষতার জন্য দর্শকদের প্রশংসাও পেয়েছেন। সম্প্রতি অভিনয়ের পাশাপাশি নির্মাতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন তিনি। পঁচাত্তরে জাতির পিতার মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনাকে উপজীব্য করে নির্মাণ করেছেন নাটক ‘জোছনা’। বর্তমানে নাটকটির পোস্ট প্রডাকশনের কাজ চলছে। সম্প্রতি টকিজের সঙ্গে এ অভিনেত্রী নির্মাণের অভিজ্ঞতাসহ খুঁটিনাটি নানা বিষয় শেয়ার করেছেন। কথোপকথনের শুরুতেই নির্মাতা হিসেবে নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে অভিনেত্রী ছন্দা বলেন, ‘এটি আমার প্রথম পরিচালনা। এছাড়া নাটকে আমি নাম ভূমিকায়ও অভিনয় করেছি। দীর্ঘদিন ধরে অভিনয় করছি। সেই অভিজ্ঞতা, অন্যদের সঙ্গে বন্ধুত্ব সবকিছুই সাহায্য করেছে কাজটি করতে গিয়ে। যারা কাজ করেছেন, প্রত্যেকেই খুব ভালো অভিনয়শিল্পী। তারা জানেন আমি কী চাই, তাই কাজটি করা আমার জন্য সহজ হয়েছে। তাদের সহযোগিতা আমার অনেক কাজে দিয়েছে। সব মিলিয়ে পরিচালনার বিষয়টি আমি উপভোগ করেছি।’ তবে বৃষ্টি কাজের ক্ষেত্রে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটিয়েছে জানিয়ে অভিনেত্রী বলেন, ‘শুটিংয়ের প্রথম দিন থেকেই বৃষ্টি ছিল। কিছুক্ষণ পর পরই বৃষ্টি হচ্ছিল। এতে কাজের কিছুটা ব্যাঘাত ঘটেছে। আবার নিজে একই সঙ্গে অভিনয় ও পরিচালনা করে একটা নির্দিষ্ট সময়কে ধারণ করাও বেশ কঠিন ছিল।’

‘জোছনা’ নাটকটির গল্প বঙ্গবন্ধুকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়েছে। নাটকে সেই সময়ের আবহ তুলে ধরা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ছন্দা বলেন, ‘শুটিংয়ের সময় আমি বাসা থেকে তিনটি লাগেজ, একটি বড় ট্রাঙ্ক, তিন-চারটা ব্যাগ, পোর্ট্রেট, বিভিন্ন ফ্রেম নিয়েছিলাম। শম্পা আপা (শম্পা রেজা) ছাড়া প্রত্যেক নারী চরিত্রের কস্টিউমও আমি নিয়ে গিয়েছি। এখানে আর্ট ডিরেক্টর আলাদা করে ছিল না। ফলে এসব আমিই দেখেছি। সে সময়ের একটা আবহ আনার জন্য বিশেষভাবে চেষ্টা করেছি।’ পরিচালনার পাশাপাশি নাটকটির নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন গোলাম ফরিদা ছন্দা। নিজের পরিচালিত নাটকে নিজেকে কীভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন? “ক্রাউন এন্টারটেইনমেন্ট থেকে বলা হলো, ‘আপা ‘জোছনা’ চরিত্রটা আপনিই করবেন।’’ ভাবছিলাম পরিচালনা করে অভিনয় করা মুশকিল হয়ে যাবে। পরে বিষয়টা অন্যভাবে ভেবে দেখি। চরিত্রটা তো কাউকে না কাউকে বোঝাতেই হবে, সেক্ষেত্রে আমি কী চাই সেটা আমিই সবচেয়ে ভালো বুঝব। তাছাড়া বোঝানোর ঝামেলা থেকেও মুক্তি পাব। আর একটা কারণ হচ্ছে, যেহেতু এতকাল অভিনয় করছি, তাই ভালো চরিত্র করার প্রতি লোভ তো থাকেই। এ কারণেও চরিত্রটি করা’—অভিনেত্রী বলেন। শোকের মাসের নাটক সাধারণত ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসকে ঘিরে নির্মিত ও প্রচারিত হয়। আপনারটা এত পরে যে? এ প্রশ্নের উত্তরে অভিনেত্রী ছন্দা বলেন, ‘আসলে আগেই করতে চেয়েছিলাম। করোনা, ঈদের ব্যস্ততা, তার ওপর বাদ সাধল বন্যা। সব মিলিয়ে শুটিংয়ের সময় ঠিক করেও পেছাতে হয়েছে। ঈদ শেষ হতে না হতেই তো শুরু করা যায় না। সবার আসার ব্যাপার আছে। সব মিলিয়ে একটু দেরি হয়ে গেছে।’ করোনাকালে শুটিং হয়েছে। তাই সেটে স্বাস্থ্যবিধির বিষয়টিও সমানভাবে খেয়াল রাখতে হয়েছে তাকে। বললেন, ‘আসলে অভিনয়ের সময় মাস্ক ব্যবহার করা যায় না। তবে আমরা ঘন ঘন হাত স্যানিটাইজ করেছি, সাবান দিয়ে ধুয়েছি। ঢাকার বাইরে মানুষ কম। আমরা ভিড় এড়াতে পেরেছি। আর গ্রামের জীবন একটা শক্তি দেয়। আমি দেখেছি সেখানকার মানুষ ভীত না, কাজ করছে। আমার ক্ষেত্রে এ বিষয়টিও সাহস জুগিয়েছে।’ পরিচালকের খাতায় নাম লেখালেন। সামনের দিনগুলোয় কি দর্শকরা নির্মাতার ভূমিকায় নিয়মিত দেখতে পাবেন আপনাকে, এমন প্রশ্নে তার উত্তর, ‘ভালো কাজ পেলে অবশ্যই করব।’ সম্প্রতি গোলাম ফরিদা ছন্দা অভিনীত জাতীয় শোক দিবসের একটি নাটক প্রচারিত হয়েছে। এছাড়া তিনি জিটিভিতে নিয়মিত একটি রান্নার অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করছেন।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *