নারীর শরীরের ওপর দিয়ে পুরোহিত ও ওঝারা হেঁটে গেলেই সন্তানলাভ!

আমরা নিজেদের যতই আধুনিক বলি না কেন, মানুষের মনে এখনো থেকে গিয়েছে এমন কিছু অন্ধবিশ্বাস যার ফল ভুগতে হয় মানুষকেই। এমনকী কোনো কোনো ক্ষেত্রে হয় মৃত্যুও। তবে এই অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কারের থেকে তাদের বের করার কাজটা বেশ কঠিন। বিশেষ করে যতক্ষণ না মানুষের মন ভুলতে পারছে এই বিশ্বাসগুলিকে, ততক্ষণ পর্যন্ত তাদেরকে এর কুপ্রভাব সম্পর্কে বোঝানোটা কার্যত সময়ের মুখাপেক্ষী। ৫০০ বছর ধরে ছত্তীসগঢ়ের এক গ্রামের বাসিন্দারা এমন এক রীতি মেনে আসছে যার কোনো ব্যাখ্যা খুঁজে পাননি বিজ্ঞানীরা।

আজকালকার যুগে যেখানে চিকিৎসা বিজ্ঞান এতটাই উন্নত যে কোনো দম্পতি নিজেরা সন্তানলাভ না করতে পারলে সারোগেসিরও পদ্ধতির আশ্রয় নেওয়া যায়, সেখানেও ধমতরী জেলার নারীরা কুসংস্কারে ডুবে মানেন এক অদ্ভুত রীতি যেখানে তারা নিজেরাই নিজেদের কষ্ট দেন। নারীরা রাস্তার উপর শুয়ে থাকেন উপুড় হয়ে। তাদের পিঠের উপর দিয়ে চলে যান পুরোহিত ও ওঝার একটি দল। ছত্তীসগঢ়ের এক মেলায় হয় এমনই অদ্ভুত ব্যাপার। এভাবেই নাকি সন্তানের ইচ্ছেপূরণ করে সেখানকার আদিবাসী নারীরা। মহামারির মধ্যেও তারা ভোলেননি এই প্রথা মানতে। শারীরিক দূরত্ববিধি বা মাস্কের নিয়ম এড়িয়েই চলেছে এই প্রথা। ৫২টি গ্রাম থেকে আশা নিয়ে আসেন এই বিবাহিতা নারীরা।

এই রীতির মূল উদ্দেশ্য হলো অঙ্গারমতী দেবীর আরাধনা যাতে সন্তানের মুখ দেখেন নিঃসন্তান বিবাহিতা এই নারীরা। এই সময়েই রাস্তায় শুয়ে থাকা ওই মেয়েরা প্রার্থনা জানায় দেবী অঙ্গারমতীর কাছে। দীপাবলির পর প্রথম শুক্রবার বসে এই মেলা। মেলাটির নাম মড়ই। সুপ্রাচীন এই নিষ্ঠুর প্রথা নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও নিজেদের ঐতিহ্য ধরে রাখতে বদ্ধপরিকর বাসিন্দারা। তাদের ধারণা যে অনেকেরই সন্তানলাভ হয়েছে এর ফলে। তাই তারা সেই ঐতিহ্যকেই এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের প্রথা নারীদের স্বাস্থ্যের পক্ষেও নাকি ক্ষতিকারক হতে পারে। কিভাবে স্থানীয়দের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত না করেই তাদের সুপথে চালিত করা হয়, সেদিকেই এগোচ্ছে নানা সামাজিক সংগঠনগুলি। তবে বিশ্বাসে মেলায় বস্তু। তাই গ্রামবাসীদের বিশ্বাস মেটানোটা বেশ কঠিন।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *