দক্ষিণ চীন সাগরে উত্তেজনা

নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা খাতে সহযোগিতা জোরালো করবে জাপান ও ভিয়েতনাম। গতকাল দুই দেশ নীতিগতভাবে চুক্তিতে উপনীত হয়েছে যে টোকিও থেকে প্রতিরক্ষা সামগ্রী ও প্রযুক্তি আমদানি করবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটি। খবর এএফপি।

জাপান ও ভিয়েতনামের মধ্যকার এ চুক্তিটা চীনের জন্য বড়ই অস্বস্তিকর। কেননা দক্ষিণ চীন সাগরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এমনিতেই এ অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে চীনের রাজনৈতিক টানাপড়েন চলছে। দক্ষিণ চীন সাগরে নিজেদের আধিপত্য ও উপস্থিতি বাড়াতে সাম্প্রতিক সময়ে বেশ তত্পর বেইজিং। এরই মধ্যে জাপানের সঙ্গে প্রতিরক্ষা খাতের সরঞ্জামাদি ক্রয়ের চুক্তি করল জাপান। এতে দক্ষিণ চীন সাগরে উত্তেজনা বাড়বে।

জাপানি সংবাদ সংস্থা কিওদোর মতে, এ চুক্তির আওতায় জাপান থেকে টহল প্লেন, রাডারসহ অনেক সামরিক সরঞ্জামাদি কিনবে ভিয়েতনাম।

গতকাল হ্যানয়ে দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষাসংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। জাপানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেয়ার পর প্রথম বিদেশ সফরে হ্যানয় গেলেন ইওশিহিদো সুগা। গতকাল তিনি বলেন, আমরা প্রতিরক্ষা সরঞ্জামাদি ও প্রযুক্তি বিনিময়ের নীতিগত চুক্তিতে উপনীত হয়েছি, যা দুই দেশের মধ্যকার নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতাকে এগিয়ে নেবে। আমি বিশ্বাস করি, এটি সামনে আরো বৃদ্ধি পাবে।’

প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ দক্ষিণ চীন সাগরের পুরোটাই নিজেদের বলে দাবি করছে বেইজিং। যদিও তাদের এ দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া, ব্রুনেই ও তাইওয়ান। তারাও দক্ষিণ চীন সাগরে নিজেদের অধিকারের দাবি করছে।

শুধু দাবি করেই বসে নেই চীন। দক্ষিণ চীন সাগরে বিতর্কিত অঞ্চলে ভাসমান দ্বীপ তৈরি করে সেখানে সামরিক স্থাপনা নির্মাণ করেছে এবং সেনা ঘাঁটি স্থাপন করেছেন বিশ্ব পরাশক্তি। সম্প্রতি সেখানে ক্ষেপণাস্ত্র মহড়াও দিয়েছে চীনা সামরিক বাহিনী। আগস্টে দক্ষিণ চীন সাগরে সামরিক মহড়া দিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের দুটি যুদ্ধজাহাজ। সেখানে নতুন করে উত্তেজনা নিয়ে এল জাপান ও ভিয়েতনাম।

চুক্তি নিয়ে সুগা বলেন, দক্ষিণ চীন সাগর ইস্যুসহ আঞ্চলিক চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলার পরিপ্রেক্ষিতে দুই দেশ সহযোগিতা জোরদার করতে রাজি হয়েছি।

উত্তর কোরিয়া কর্তৃক জাপানি নাগরিক অপহরণের ইস্যুটি নিয়েও কাজ করবে দুই দেশ। টোকিও সন্দেহ করে, উত্তর কোরিয়া তাদের নিজ দেশের গুপ্তচরদের জাপানি ভাষা ও সংস্কৃতিতে ট্রেনিং দিতে ১৯৭০ ও ১৯৮০-এর দশকে তাদের প্রায় ডজনখানেক নাগরিককে অপহরণ করেছে।

কভিড-১৯ মহামারীর কারণে জাপান ও ভিয়েতনামের মধ্যে বিমান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এখন নতুন করে বাণিজ্যিক ফ্লাইট চালুর বিষয় নিয়েও দুই দেশের মধ্যে চুক্তি হয়েছে।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *