তাঁতিদের জন্য উদ্যোক্তা পল্লী তৈরি করবে সরকার

দেশের তাঁতিদের আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও তাঁত শিল্পে নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরির জন্য তাঁত বোর্ডের নিজস্ব জমিতে আলাদা করে একটি উদ্যোক্তা পল্লী তৈরি করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ পল্লীতে একই স্থানে মেলা ও প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হবে। যেখানে তাঁত বস্ত্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তাদের জন্য আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন ব্যবসার স্থান সংকুলান করা হবে।

গতকাল দুপুরে ফার্মগেটের জেডিপিসির সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড আয়োজিত ‘তাঁত নীতিমালা-২০২০’ বিষয়ক কর্মশালায় এসব কথা বলেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব লোকমান হোসেন মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. শাহ আলম, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম, বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের সদস্য রেজাউল করিমসহ তাঁত বোর্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অংশীজনরা।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বলেন, তাঁতিদের আর্থসামাজিক উন্নয়ন এবং মূলধন জোগানের কষ্ট দূর করার জন্য সরকার উদ্যোক্তা পল্লী করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এখানে তাঁত বস্ত্রের আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে রফতানির জন্য ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু করা হবে। তাঁত পণ্যের বাজারজাত সুবিধা সৃষ্টি করা হবে এবং পরিবর্তিত বাজারে ভোক্তার চাহিদার সঙ্গে সংগতি রেখে নতুন নতুন ডিজাইন উদ্ভাবন এবং দক্ষ ডিজাইনার ও মানবসম্পদ তৈরি করতে কাজ করা হবে।

তাঁত শিল্প ও তাঁতিদের উন্নয়ন করাই বর্তমান সরকারের মূল লক্ষ্য উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, কোন পরিকল্পনা বা নীতিমালা প্রণয়ন করলে তাঁতিদের জীবনমান উন্নয়ন করা সম্ভব, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সেরূপ নীতিমালা প্রণয়ন করবে। আমি আশা করি, এ কর্মশালার মাধ্যমে তাঁতিদের জন্য যুগোপযোগী, কার্যকর ও সহায়ক একটি নীতিমালা প্রণয়ন করা সম্ভব হবে।

বাংলাদেশের বস্ত্র খাতের অধিকাংশ জোগান আসে তাঁত শিল্প থেকে। তাঁত শিল্প বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ কুটির শিল্প। জাতীয় অর্থনীতিতে তাঁত শিল্পের ভূমিকা অপরিসীম। সর্বশেষ তাঁতশুমারি অনুযায়ী, দেশের অভ্যন্তরীণ বস্ত্র চাহিদার ৪০ শতাংশ তাঁত শিল্প জোগান দিয়ে থাকে।

এ শিল্পের বার্ষিক উৎপাদনের পরিমাণ ৬৮ দশমিক ৭০ শতাংশ। আর জাতীয় অর্থনীতিতে মূল্য সংযোজনের দিক থেকে তাঁত শিল্প খাতের অবদান ১ হাজার ২২৭ কোটি টাকার বেশি। এ শিল্পে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ১৫ লাখ মানুষ জড়িত। দেশে বর্তমানে বিদ্যমান ১ লাখ ৮৩ হাজার ৫১২টি তাঁত ইউনিটে মোট হস্তচালিত তাঁতের সংখ্যা ৫ লাখ ৫ হাজার ৫৫৬টি। এর মধ্যে চালু তাঁতের সংখ্যা ৩ লাখ ১১ হাজার ৮৫১টি।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *