দেশে কভিড-১৯-এ দৈনিক আক্রান্ত প্রথম দুই হাজার ছাড়িয়েছিল গত ২৮ মে। পরদিনই তা আড়াই হাজার ছাড়িয়ে যায়। একদিন বিরতি নিয়ে এরপর টানা সাতদিন ধরে প্রতিদিন দুই হাজারের বেশি মানুষ করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হচ্ছে। এই সাতদিনের মধ্যে পাঁচদিনই দৈনিক সংক্রমণ ছিল আড়াই হাজারের ওপরে। প্রতিদিন বিপুলসংখ্যক মানুষের করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ায় মোট রোগীর সংখ্যা জ্যামিতিক হারে বাড়ছে। রোগীর সংখ্যা ১ থেকে ১০ হাজারে যেতে যেখানে ৫৭ দিন সময় লেগেছিল, সেখানে সংখ্যাটি ৫০ হাজার থেকে ৬০ হাজারে যেতে সময় নেয় মাত্র তিনদিন।
গতকাল দেশে নতুন করে আরো ২ হাজার ৬৩৫ জন ভাইরাসটিতে আক্রান্ত বলে শনাক্ত হয়েছেন। ফলে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে নিশ্চিতভাবে আক্রান্ত হওয়া রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৩ হাজার ২৬। যদিও এর মধ্যে ১৩ হাজার ৩২৫ জন সুস্থ হওয়ার দাবি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। রেফারেন্স ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য বলছে, যেসব দেশে এখনো করোনাভাইরাসের সংক্রমণ অব্যাহত রয়েছে, সেসব দেশের মধ্যে নতুন করে সংক্রমিত শীর্ষ দেশগুলোর তালিকায় বাংলাদেশ রয়েছে সপ্তম অবস্থানে। শেষ ২৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা করা হয় ১২ হাজার ৪৮৬টি। শনাক্তের হার ২১ দশমিক ১ শতাংশ। অর্থাৎ পরীক্ষা হওয়া প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজনের শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ছে।
করোনাভাইরাসে দেশে নতুন করে আরো ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখন পর্যন্ত ভাইরাসটিতে ভুগে ৮৪৬ জনের মৃত্যু হলো। গতকাল যাদের মৃত্যু হয়েছে তাদের ২৮ জন পুরুষ, সাতজন নারী। মৃতদের পাঁচজনের বয়স ৩০ বছরের নিচে। এর মধ্যে ১০ থেকে ২০ বছরের মধ্যে দুজন ও ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে তিনজনের মৃত্যু হয়। বাকিদের মধ্যে ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে দুজন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে তিনজন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১০ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে পাঁচজন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে নয়জন এবং মৃত্যু হওয়া একজনের বয়স ছিল ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে। মৃতদের মধ্যে শুধু ঢাকা বিভাগেরই বাসিন্দা ছিলেন ২০ জন। এর বাইরে চট্টগ্রাম বিভাগে আটজন, সিলেটে দুজন, রাজশাহীতে তিনজন ও বরিশাল বিভাগে করোনাভাইরাসে দুজনের মৃত্যু হয়।
গত ২৪ ঘণ্টায় দক্ষিণ এশিয়ায় করোনাভাইরাসে ৩৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশে মারা গেছেন ৩৫ জন। অর্থাৎ দক্ষিণ এশিয়ায় শেষ ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের ১০ দশমিক ৫৪ শতাংশ বাংলাদেশী।