চীনা প্রতিরক্ষা ও প্রযুক্তি কোম্পানিতে বিনিয়োগে নিষেধাজ্ঞা বাইডেনের

চীনের প্রতিরক্ষা ও নজরদারি প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোতে মার্কিন বিনিয়োগ বন্ধে এক নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয় প্রায় ৫৯টি কোম্পানির তালিকা করেছে, যারা এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকবে। বাইডেন প্রশাসনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের বরাতে এ তথ্য নিশ্চিত হয়েছে। খবর রয়টার্স।

এক নির্বাহী আদেশে বাইডেন জানান, চীনের সেনা-শিল্প কমপ্লেক্স, সেনাবাহিনী, গুপ্তচরবৃত্তি এবং নিরাপত্তা গবেষণা ও উন্নয়ন প্রকল্পে বিনিয়োগের মাধ্যমে সহায়তা করা যাবে না।

তিনি আরো বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের (পিআরসি) নজরদারি প্রযুক্তি অন্যান্য দেশেও ব্যবহার হচ্ছে এবং তা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মারাত্মক মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে ও জনমত দমন করা হচ্ছে।

নতুন করে নিষেধাজ্ঞার তালিকায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক পূর্বের নিষেধাজ্ঞা ঘোষিত কোম্পানিগুলোও রয়েছে। এর আগে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক যেসব প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল, সেগুলো হচ্ছে এভিয়েশন ইন্ডাস্ট্রি করপোরেশন অব চায়না (এভিআইসি), চায়না মোবাইল কমিউনিকেশনস গ্রুপ, চায়না ন্যাশনাল অফশোর ওয়েল করপোরেশন, হ্যাংঝু হাইকভিশন ডিজিটাল টেকনোলজি কোম্পানি লিমিটেড, হুয়াওয়ে টেকনোলজিস লিমিটেড, সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশন (এসএমআইসি)। স্থানীয়ভাবে চীনের চিপ খাতকে শক্তিশালী করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছিল এসএমআইসি।

পূর্বে কোম্পানিগুলোর নাম আলোচনায় এলেও নিষিদ্ধ তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে নেই তার মধ্যে রয়েছে কমার্শিয়াল এয়ারক্রাফট করপোরেশন অব চায়না (কোম্যাক), গোউইন সেমিকন্ডাক্টর করপোরেশন ও লিউকুং টেকনোলজি করপোরেশন। বোয়িং ও এয়ারবাসের সঙ্গে টেক্কা দিতে চায় কোম্যাক, এমন অভিমত এভিয়েশন সংশ্লিষ্টদের। সিনোক্যাম এর আগের তালিকায় থাকলেও হোয়াইট হাউজের সর্বশেষ তালিকায় বাদ পড়েছে। এছাড়া গত মে মাসে চীনা ফোন নির্মাতা কোম্পানি শাউমির বিরুদ্ধে ট্রাম্প প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞার বিপক্ষে রায় দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের তালিকাকরণকে উড়িয়ে দিয়েছেন চীনা বিনিয়োগকারীরা। এমনকি গতকাল সকালের দিকে শেয়ারদর বেড়েছে তালিকায় নতুন করে যুক্ত হওয়া কিছু কোম্পানির। সুচু সিকিউরিটিজ কোম্পানির পোর্টফলিও ম্যানেজার অউ ক্যান বলেন, (নিষেধাজ্ঞায়) তালিকাভুক্ত বেশির ভাগ কোম্পানিই প্রতিরক্ষা ও সেমিকন্ডাক্টরের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতে কাজ করছে। এগুলো চীন সরকারের বড় আকারের সহায়তা পাবে, এ কারণে বৈদেশিক বিনিয়োগকারীরা সেখানে বিনিয়োগে মুখিয়ে থাকবে।

তাছাড়া বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে নিতেও বিনিয়োগকারীরা হাতে যথেষ্ঠ সময় পাচ্ছেন। বর্তমানে যেসব তালিকাভুক্ত কোম্পানিতে মার্কিন বিনিয়োগ রয়েছে তা প্রত্যাহারে বিনিয়োগকারীরা অন্তত ৩৬৫ দিন সময় পাবেন।

বাইডেন প্রশাসনের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, আমরা আগামী দিনগুলোতে আরো কিছু কোম্পানিকে এ নিষেধাজ্ঞার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করব।

চীনের প্রতি মার্কিন নীতির বেশ কয়েকটি দিক পুনর্মুল্যায়ন করে দেখছে বাইডেন প্রশাসন। ট্রাম্প প্রশাসনের গৃহীত নীতি কার্যকরের পাশাপাশি নতুন পলিসি ফ্রেমওয়ার্ক তৈরিতে কাজ করছে হোয়াইট হাউজ।

গত মাসের শেষ দিকে বাইডেনের ইন্দো-প্যাসিফিক পলিসি কো-অর্ডিনেটর কার্ট ক্যাম্বেল বলেন, চীনের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতের নীতি এড়িয়ে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে প্রতিযোগিতার ওপর জোর দেয়া হবে।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *