চলছে আয়োজনের প্রস্তুতি: একুশে বইমেলা নিয়ে সিদ্ধান্ত আজ

নিউজ ডেস্ক: দেশে আবার বাড়তে শুরু করেছে করোনার সংক্রমণ। এজন্য জনসমাগম সীমিত করতে গতকাল বেশকিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। করোনা সংক্রমণের এ ঊর্ধ্বমুখী পরিস্থিতির মধ্যে কীভাবে অমর একুশে গ্রন্থমেলা আয়োজন করা হবে, সে বিষয়ে আজ সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। বইমেলার আয়োজক বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহম্মদ নূরুল হুদা বণিক বার্তাকে জানিয়েছেন, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বইমেলার ভবিষ্যৎ কী হবে, মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করে আজ তা ঠিক করা হবে।

করোনা মহামারীর কারণে গত বছর দেড় মাস পিছিয়ে আয়োজন করা হয়েছিল অমর একুশে গ্রন্থমেলা। ১৮ মার্চ মেলা শুরু হয়ে শেষও করা হয়েছিল নির্ধারিত সময়ের আগেই। মেলায় মানুষের ভিড় কমাতে সে বছর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রতিটি স্টলের সামনে ফাঁকা জায়গা রেখে তৈরি করা হয় প্রায় ১৫ লাখ বর্গফুটের বিশাল প্রাঙ্গণ।

গত বছর বইমেলা পিছিয়ে গেলেও এবার ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন থেকে মেলা আয়োজনের জন্য এরই মধ্যে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে বাংলা একাডেমি। স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখার সুবিধার্থে এবারো প্রতিটি স্টলের সামনে ফাঁকা রেখে মেলা প্রাঙ্গণ তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। সরেজমিন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ঘুরে শ্রমিকদের মেলার স্টল তৈরি করতে দেখা গেছে। এক সপ্তাহ ধরেই এসব কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন কর্মরত শ্রমিকরা।

মেলা আয়োজনের বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, ১ ফেব্রুয়ারি থেকেই একুশে বইমেলা আয়োজনের জন্য আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। স্টল তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। চলতি সপ্তাহ থেকে স্টল বরাদ্দও শুরু করে দেয়ার পরিকল্পনা আমাদের। তবে দেশে যেহেতু করোনা মহামারীর প্রকোপ আবার বাড়তে শুরু করেছে এবং গতকাল জনসমাগম এড়াতে অনেকগুলো বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে, সেহেতু মেলা আয়োজনের বিষয়ে আমরা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বসব। সেখানে সামগ্রিক বিষয়গুলো পর্যালোচনা করে মেলা আয়োজনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে এখন পর্যন্ত ১ ফেব্রুয়ারি মেলা আয়োজনের লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করছি।

বাঙালির প্রাণের মেলা অমর একুশে গ্রন্থমেলা। ২০২০ সালে বইমেলা শেষ হওয়ার পর পরই বাংলাদেশে বিশ্ব মহামারী নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটে। এতে থমকে যায় সবকিছু। ২০২১ সালেও মেলা আয়োজন নিয়ে ছিল নানা দোলাচল। বাংলা একাডেমি প্রথমে অনলাইনে বইমেলা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়। এতে প্রকাশকরা তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি জানান। এ পরিপ্রেক্ষিতে বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন মার্চে করোনাভাইরাসের দাপট কমে আসতে পারে। এমন পরামর্শে গত বছর প্রথমবারের মতো অমর একুশে গ্রন্থমেলা ফেব্রুয়ারির পরিবর্তে স্বাধীনতার মাসে আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলা একাডেমি। মেলা শুরু হয় ১৮ মার্চ।[১] প্রধানমন্ত্রীর টুঙ্গিপাড়া সফর উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত[১] জবি বিজ্ঞান ক্লাবের আহবায়ক আসাদুজ্জামান, সচিব ইসহাক[১] ফরিদপুরে মোটরসাইকেলসহ চোর চক্রের ৭ সদস্য আটক

২০২১ সালের বইমেলায় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ১০৭টি প্রতিষ্ঠানকে ১৫৪টি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৪৩৩টি প্রতিষ্ঠানকে ৬৮০টি স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। প্যাভিলিয়ন ছিল ৩৩টি। করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় বইমেলায় বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছিল স্বাস্থ্যসচেতনতায়। বইমেলার মূল থিম ছিল ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী’।

প্রসঙ্গত, স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমির গেটে চট বিছিয়ে বই বিক্রি শুরু করেছিলেন মুক্তধারা প্রকাশনীর মালিক চিত্তরঞ্জন সাহা। ১৯৭৭ সালে তার সঙ্গে আরো অনেকে যোগ দেন। ১৯৭৮ সালে বাংলা একাডেমির তত্কালীন মহাপরিচালক আশরাফ সিদ্দিকী বাংলা একাডেমিকে এ বইমেলার সঙ্গে সম্পৃক্ত করেন। পরের বছর মেলার সঙ্গে যুক্ত হয় বাংলাদেশ পুস্তক বিক্রেতা ও প্রকাশক সমিতি।

১৯৮৩ সালে মনজুরে মওলা বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের দায়িত্বে থাকার সময় ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’ নামে এ মেলা আয়োজনের প্রস্তুতি নেয়া হলেও তা আর করা যায়নি। পরের বছর বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে সূচনা হয় ‘অমর একুশে বইমেলা’র।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *