কোনো বাড়তি খরচ ছাড়াই ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ভিসার মেয়াদ বাড়িয়েছে সৌদি আরব। ভিসার মেয়াদ স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাড়বে। গত মঙ্গলবার এক বার্তায় রিয়াদে বাংলাদেশ দূতাবাস এ তথ্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, গত ২১ সেপ্টেম্বর স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিসা ও আকামার মেয়াদ বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে সৌদি কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হয়। এখানে পূর্ণভাবে ফ্লাইট পরিচালনের বিষয়টিও বিবেচনায় নিতে বলা হয়। যাতে আটকা পড়া বাংলাদেশী পেশাজীবী ও শ্রমিকরা তার নিজ কাজে ফিরতে পারেন। এ নিয়ে সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃপক্ষ লিখিতভাবে জানায়, স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাহির/ পুনঃপ্রবেশ ভিসা কোনো ধরনের চার্জ ছাড়াই চলতি বছরের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়ানো হলো। যাদের ভিসা এবং আকামার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, এটি তাদের জন্য প্রযোজ্য হবে।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, সৌদিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাভেদ পাটোয়ারি সৌদি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে ভিসা ও আকামার মেয়াদ ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বৃদ্ধির অনুরোধ করেন।
এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন নিজ দপ্তরে কুয়েত সফর নিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, কুয়েত ১৯৭৩ সালে আমাদের স্বীকৃতি দেয়। আর ১৯৭৪ সালে সদ্যপ্রয়াত দেশটির আমির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন। তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তারা ওআইসি বৈঠকে নিয়ে যান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কুয়েতে আমাদের অসংখ্য বাংলাদেশী কাজ করেন। শুধু শ্রমিকরাই নন, সেই সঙ্গে আমাদের একটি মিলিটারি কন্টিনজেন রয়েছে সেখানে। নতুন আমিরের সঙ্গে দেখা হলে তিনি বলেছেন ১৯৯১ সালে কুয়েতের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব সুরক্ষার জন্য বাংলাদেশ সামরিক বাহিনী দিয়েছে। এজন্য বাংলাদেশের প্রতি আমরা সবসময় কৃতজ্ঞ। বৈঠকে বাংলাদেশের প্রতি কুয়েতের কী ধরনের মনোভাব, কুয়েতের প্রতি বাংলাদেশের কী ধরনের মনোভাব—এগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কভিড-১৯ মোকাবেলা ও অর্থনীতিতে বাংলাদেশ বেশ ভালো করছে বলেও জানান কুয়েতের নতুন আমির।
কুয়েতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গ ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, দুদিনের মধ্যে ফ্লাইট চালুর বিষয়ে কুয়েত বৈঠকে বসবে। আমরা জানিয়েছি, করোনা মহামারীর সময় কুয়েত থেকে অনেক বাংলাদেশী চলে এসেছে। কুয়েত জানিয়েছে, করোনা মহামারীর কারণে তারা খুব উদ্বিগ্ন ছিলেন। তাই প্রথম দিকে কিছু জায়গা খালি করেছেন। এ সময় বাংলাদেশী শ্রমিকদের জন্য কুয়েতের দরজা খুলে দিতে অনুরোধ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কুয়েতের বেশ ভালো প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তারা যাতে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে সেই আহ্বান জানানো হয়েছে। বাংলাদেশের ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ হাই-টেক পার্কে বিনিয়োগের আহ্বান জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এ সময় দুই দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে আরো যোগাযোগ বাড়াতে পরামর্শ দেন কুয়েতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
কুয়েতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশে একটি তেল শোধনাগার তৈরির প্রস্তাব দেন ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, কুয়েত তেলসমৃদ্ধ দেশ। আর আরব সাগরের অস্থিরতা লেগেই রয়েছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশে কুয়েত একটি তেল শোধনাগার তৈরি করতে পারে। কোনো কারণে কুয়েতে তেলের ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেলে বাংলাদেশ থেকে ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারবে কুয়েত। এটিকে উত্তম প্রস্তাব বলেছেন কুয়েতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। কুয়েত এরই মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ায় এ ধরনের একটি শোধনাগার তৈরির চেষ্টা করছে। এ বিষয়ে কাজ করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন কুয়েতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।