কঠিন পরীক্ষায় নিউজিল্যান্ডে টাইগাররা

১২ মাস আগে দেশের বাইরে ক্রিকেট খেলেছে বাংলাদেশ। গেল বছর ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানে টেস্ট সিরিজ খেলে দেশে ফিরে আসে টাইগাররা। এরপর করোনা ভাইরাসের আঘাত। ধীরে ধীরে মহামারি ভয়াবহ রূপ নিতে শুরু করে। তাতেই স্থগিত হয়েছে বাংলাদেশ দলের একাধিক বিদেশ সফর। ৭ মাস ঘরে বন্দি ছিলেন দেশের ক্রিকেটাররা। এরপর মাঠে খেলা ফিরলেও দেশের বাইরে সিরিজ খেলা নিয়ে থেকে যায় অনিশ্চয়তা। করোনার বিস্তার ঠেকাতে প্রতিটি দেশেরই রয়েছে কঠিন কোয়ারেন্টিন নীতি।
অবশ্য ধীরে ধীরে শর্তগুলো শিথিল হতে শুরু করেছে। সেই সুযোগে করোনা বিরতি ভেঙে নিউজিল্যান্ডের বিমান ধরেছে টাইগাররা। সেখানে গিয়ে টাইগারদের সব কঠিন নিয়ম-কানুনের মধ্যদিয়ে শুরু করতে হবে মাঠে নামার প্রক্রিয়া। শুরুতেই ৭ দিন থাকতে হবে সেলফ আইসোলেশনে। তখন হোটলে রুম থেকেই বের হতে পারবেন না কেউ। এরপর তারা অনুশীলনের সুযোগ পাবে কয়েকটি গ্রুপে ভাগ করে। তাও কোয়ারেন্টিনে থেকেই তা করতে হবে। এরপর মুক্তি মিলবে কিন্তু মাঠে শুরু হবে ব্যাট-বলের কঠিন পরীক্ষা। এ বিষয়ে ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল বলেন, ‘আমরা সবাই জানি যে নিউজিল্যান্ড কন্ডিশন আমাদের জন্য কঠিন। কিন্তু অসম্ভব কিছুই না। আমরা চেষ্টা করব যে জিনিসটা নিউজিল্যান্ডে কোনোদিন অর্জন করিনি, এবার সেটা অর্জন করতে পারি। আমরা আশাবাদী।’ সবশেষ বাংলাদেশ নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়েছিল ২০১৯ এ। সেবার ক্রাইস্টচার্চে আততায়ীর বন্দুক হামলা থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছিল টাইগাররা। তবে ঐ হামলাতে মৃত্যু হয় ৫৭ সাধারণ মানুষের। অনেকটা বিভীষিকা নিয়ে টেস্ট না খেলেই দেশে ফিরে আসে বাংলাদেশ দল। এবারও ক্রাইস্টচার্চে রয়েছে একটি ওয়ানডে। গতকাল বিকেল সাড়ে চারটায় দেশ ছেড়েছে বাংলাদেশ দল। দলের কোয়ারেন্টিন নিয়ে বিসিবির চিকিৎসক মঞ্জুর হোসাইন চৌধুরী বলেন, ‘নিউজিল্যান্ডে আমাদের কঠিন কোয়ারেন্টিন শর্ত মানতে হবে। প্রথম ৭ দিন ক্রিকেটাররা সবাই থাকবেন সেলফ আইসোলেশনে। এসময়ে দুটি কোভিড-১৯ পরীক্ষায় নেগেটিভ হলে এরপরের ৭ দিন কোয়ারেন্টিনে থেকে অনুশীলনের সুযোগ পাবে। তবে ২০ জন একত্রে অনুশীলন করতে পারবে না। দলকে কয়েকটি গ্রুপে ভাগ করে দেয়া হবে। ১৪ দিন পর একসঙ্গে সবাই মাঠে নামতে পারবে। সেলফ আইসোলেশনের সময় খাবারও রুমে দেয়া হবে। বের হওয়ার কোন সুযোগ থাকবে না। শুধু তাই নয় কোয়ারেন্টিনের সময়টাতে হোটেল রুমে কোন সার্ভিস দেয়ার লোক আসবে না। সেই সময়টাতে টয়লেট থেকে শুরু করে সবকিছু ক্রিকেটারদেরই পরিষ্কার করতে হবে।’ নিউজিল্যান্ডের স্বাগতিকদের বিপক্ষে কোন ফরম্যাটেই জয় নেই বাংলাদেশের। ২৩শে মার্চ তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ শুরু হবে ডানেডিনে। বাকি দুই ম্যাচ ক্রাইস্টচার্চ ও ওয়েলিংটনে। এরপর ২৮শে মার্চ হ্যামিলটনে শুরু টি-টোয়েন্টি সিরিজ। বাকি দুটি ম্যাচ হবে নেপিয়ার ও অকল্যান্ডে। দলের সিনিয়রদের ছাড়াও তরুণদের দিকে তাকিয়ে থাকবে বাংলাদেশ। দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত সৌম্য সরকার, ‘অবশ্যই ভালো কিছু হবে। সবাই যেভাবে মানসিক ও ক্রিকেটীয় প্রস্তুতি নিয়েছে, আশা করি সবাই ভালো করবে।’ নিউজিল্যান্ডের পেস কন্ডিশনের কথা ভেবেই দলে রাখা হয়েছে ৭ পেসার। তাই তরুণদের একাদশে সুযোগ পাওয়াটাও বেশ কঠিন। তবে সবাই মুখিয়ে আছেন নিজেদের সেরাটা দিতে। এই বিষয়ে তরুণ পেস অলরাউন্ডার সাইফউদ্দিন বলেন, ‘যেকোনো উইকেটে ভালো করা সম্ভব। আপনি সঠিক জায়গায় বল না করতে পারলে ব্যর্থ হওয়াটা স্বাভাবিক। এটা (একাদশে সুযোগ পাওয়া) নিয়ে আমি ভাবছি না। উইকেট ও কন্ডিশন বিবেচনায় একাদশ সাজানো হবে। আমি আশাবাদী একাদশে সুযোগ পাওয়া নিয়ে।’

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *