ওরা জীবিত নয়, মৃতও নয় কিন্তু বিপজ্জনক

আমেরিকার টেক্সাস রাজ্যের এক বিকারগ্রস্ত লেফটেন্যান্ট মুলডোন ও তার লোকজন স্থানীয় কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার অ্যাবির সঙ্গে একটি চুক্তি করে। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী অ্যাবি মুলডোনকে প্রচুর পরিমাণে মরণঘাতী কেমিক্যাল ডিসি-২ (যার ছদ্মনাম ‘প্রজেক্ট টেরর’) সরবরাহ করে। কিন্তু মুলডোন যখন কোনোভাবে জানতে পারে অ্যাবির কাছে আরো ডিসি-২-এর মজুদ আছে, তখন তাকে বন্দি করে। এ সময় অ্যাবি সেই কেমিক্যাল গ্যাস উন্মুক্ত করে দেয়। এতে পুরো শহরের লোকজন ধীরে ধীরে জম্বিতে পরিণত হতে থাকে। শুরু হয় মহামারী আর বেঁচে থাকার লড়াই।

এমন গল্পকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে ‘প্ল্যানেট টেরর’ চলচ্চিত্রের কাহিনী। ২০০৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত হরর কমেডি জনরার এ ছবিটি অতিরিক্ত সহিংসতা প্রদর্শনের জন্যও বিখ্যাত। ছবিতে মাত্র কয়েকজন সুস্থ মানুষের হাতে কীভাবে পুরো মানবসভ্যতা রক্ষার বিষয়টি নির্ভর করছে, তা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। কারণ যুদ্ধটা জীবিতদের বিরুদ্ধেও নয় আবার মৃতদের বিরুদ্ধেও নয়। এর মাঝামাঝি ধরনের ভয়ংকর জম্বিদের সঙ্গে লড়তে হবে।

ছবির গল্পে দেখা যায়, চাকরি ছেড়ে দেয়ার পর চেরি ডার্লিং তার রহস্যময় সাবেক প্রেমিক এল রের সঙ্গে একটি রেস্টুরেন্টে দেখা করতে যায়। এমন সময় পাশের মহাসড়কে শুরু হয় আক্রমণ। জম্বিদের আক্রমণে একে একে সুস্থ মানুষগুলোও জম্বিতে পরিণত হচ্ছে। হঠাৎই চেরি ও এল রে জম্বিদের দ্বারা আক্রমণের শিকার হয়। এ সময় তারা আক্রমণ থেকে বাঁচতে পারলেও জম্বিরা চেরির ডান পা হাঁটু পর্যন্ত ছিঁড়ে নিয়ে যায়। আক্রান্ত সবাইকে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় হাসপাতালে, যেখানে ডাক্তার উইলিয়াম ব্লক ও তার স্ত্রী ডাকোটা মিলে চিকিৎসা দেয়া শুরু করে।

এ সময় জম্বিদের আক্রমণের শিকার হয়ে ওই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসে ডাকোটার সাবেক প্রেমিক টামি। বিষয়টি নিয়ে উইলিয়াম ব্লক সন্দেহের বশবর্তী হয়ে নিজের স্ত্রীকে সিরিঞ্জ দিয়ে হাতে বেশ কয়েকবার আঘাত করার কারণে ডাকোটার হাতই অবশ হয়ে যায়। এ সময় কোনোমতে পালিয়ে আসে ডাকোটা এবং হাসপাতালে জম্বিদের আক্রমণে উইলিয়াম জম্বিতে রূপান্তরিত হয়। বাসায় এসে ডাকোটা তাদের ছেলে টনির হাতে পিস্তল দিয়ে বলে যাকেই দেখবে গুলি করবে। এমনকি নিজের বাবাকে দেখলে কোনো কথা ছাড়াই গুলি করবে।

এদিকে চেরি আর এল রেকে গ্রেফতার করা হয়। তবে এল রে কোনোমতে পালাতে সক্ষম হয়। এ সময় সে অ্যাবির সঙ্গে মিলে জম্বিতে রূপান্তরিত হওয়া লেফটেন্যান্ট মুলডোনকে হত্যা করে। এ সময় মুলডোনের সব সৈন্য নিয়ে আগে চেরিকে উদ্ধার করে। এরপর সবাই মিলে জম্বিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামে। কিন্তু যুদ্ধ করতে গিয়ে বুঝতে পারে পুরো শহরের অল্প কিছু মানুষই আর সুস্থ আছে। তাদের হাতেই নির্ভর করছে মানবসভ্যতা।

১০৫ মিনিট দৈর্ঘ্যের এ ছবিটি ইংরেজি ও স্প্যানিশ ভাষায় মুক্তি দেয়া হয় ২০০৭ সালের ৬ এপ্রিল। রবার্ট রদ্রিগেজের পরিচালনায় ছবিতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন রোজ ম্যাকগোয়ান (চেরি), ফ্রেডি রদ্রিগেজ (এল রে), জোস ব্রলিন (ডা. উইলিয়াম), মার্লি শেলটন (ডাকোটা), ব্রুস উইলিস (মুলডোন), নাভিন অ্যান্ড্রুস (অ্যাবি) প্রমুখ। ছবিটি সমালোচকদের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পেলেও দর্শকদের কাছ থেকে প্রত্যাশামত সাড়া পায়নি।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *