উৎপাদন বাড়িয়ে চা রফতানি করা হবে: বাণিজ্যমন্ত্রী

চায়ের উৎপাদনক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সরকার বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, বিদেশে বাংলাদেশের চায়ের বিপুল চাহিদা রয়েছে। তাই চায়ের উৎপাদন বাড়িয়ে অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রফতানি করা হবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং বাংলাদেশ চা বোর্ডের উদ্যোগে গতকাল রাজধানীর ওসমানী মিলনায়তনে ‘প্রথম জাতীয় চা দিবস-২০২১’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মন্ত্রী। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, চা বাংলাদেশের একটি সম্ভাবনাময় রফতানি পণ্য। নতুন জাত উদ্ভাবন করে চায়ের উৎপাদন বৃদ্ধি করা হচ্ছে। দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদাও দিন দিন বাড়ছে। প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে দেশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় বেড়েছে। এখন গ্রামের মানুষও নিয়মিত চা পান করে।

জাতীয় চা দিবসের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথম বাঙালি হিসেবে চা বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্বভার গ্রহণ ছিল একটি ঐতিহাসিক বিষয়। ১৯৫৭ সালের ৪ জুন বঙ্গবন্ধু চা বোর্ডের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হয়েছিলেন। এ জন্য সরকার এদিন জাতীয় চা দিবস উদযাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বঙ্গবন্ধু চা বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিয়ে চা শিল্পের ব্যাপক উন্নয়ন এবং চা শ্রমিকদের কল্যাণে অনেক কাজ করেছিলেন। এরই ধারাবাহিকতার বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে চা উৎপাদন বৃদ্ধির নির্দেশনা দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ১৯৯৬ সালে দেশের উত্তরাঞ্চলের পঞ্চগড়ে চা উৎপাদন শুরু হয়েছে। সেখানে চা উৎপাদনের বিপুল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এখানে চা উৎপাদন করে চাষীরা লাভবান হচ্ছেন। ঠাকুরগাঁও ও লালমনিরহাটেও চা উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখানে সমতল ভূমিতেও চা উৎপাদন হচ্ছে। দিন দিন চা উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

দেশে চা উৎপাদনের পরিমাণ উল্লেখ করতে গিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, ২০১৯ সালে দেশের ১৬৭টি চা বাগানে চায়ের উৎপাদন ছিল ৯ কোটি ৬০ লাখ ৭০ হাজার কেজি। এর মধ্যে ছয় লাখ কেজি চা রফতানি হয়েছে। ২০২০ সালে উৎপাদন ছিল ৮ কোটি ৬৩ লাখ ৯০ হাজার কেজি। রফতানি হয়েছে ২১ লাখ ৭০ হাজার কেজি চা। যেখানে ২০১১ সালে দেশের মোট চা উৎপাদন হতো ৫ কোটি ৯১ লাখ ৩০ হাজার কেজি।

বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন, বাংলাদেশ টি বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. জহিরুল ইসলাম, এফবিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট মো. জসিম উদ্দিন, বাংলাদেশীয় চা সংসদের সভাপতি এম শাহ আলম এবং টি ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি শাহ মঈন উদ্দীন হাসান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

আলোচনা সভার আগে বাণিজ্যমন্ত্রী বেলুন উড়িয়ে এবং ফিতা কেটে প্রথম জাতীয় চা দিবসের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এছাড়া বাণিজ্যমন্ত্রী চায়ের উন্নতজাতের ক্লোন বিটি-২২ ও বিটি-২৩ আনুষ্ঠানিকভাবে অবমুক্ত করেন।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *