উত্তরবঙ্গে সার কারখানা নির্মাণ প্রক্রিয়া দ্রুত করার নির্দেশ শিল্পমন্ত্রীর

সারের আমদানিনির্ভরতা কমাতে উত্তরবঙ্গে সার কারখানা নির্মাণ প্রক্রিয়া দ্রুত এগিয়ে নিতে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনকে (বিসিআইসি) নির্দেশ দিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। তিনি বলেন, লাখ লাখ টন ইউরিয়া সার বিদেশ থেকে আমদানির পরিবর্তে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে সারের জোগান বাড়াতে নতুন সার কারখানা নির্মাণ করা হচ্ছে।

গতকাল বিসিআইসি আয়োজিত দুই দিনব্যাপী ব্যবস্থাপনা পরিচালক সম্মেলন ২০২০-এর সমাপ্তি অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শিল্পমন্ত্রী এ নির্দেশনা দেন। ভার্চুয়াল মাধ্যমে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বিশেষ অতিথি ছিলেন।

বিসিআইসির চেয়ারম্যান মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ ইনস্যুলেটর অ্যান্ড স্যানিটারি ওয়্যার (বিআইএসএফ) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী আবু সাদেক তালুকদার এবং ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া ফার্টিলাইজার প্রকল্পের পরিচালক মো. রাজিউর রহমান মল্লিক বক্তব্য রাখেন।

কভিডকালীন শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সার ফ্যাক্টরিসহ অন্যান্য কারখানা চালু থাকায় কৃষি উৎপাদনের ধারা অব্যাহত রয়েছে মন্তব্য করে শিল্পমন্ত্রী বলেন, করোনা মহামারীর মধ্যেও মানুষের জীবন-জীবিকার সুরক্ষার বিশাল দায়িত্ব শিল্প মন্ত্রণালয়ের ওপর বর্তায়। এ দায়িত্ববোধ থেকে নিরবচ্ছিন্ন সার সরবরাহ নিশ্চিত করে শিল্প মন্ত্রণালয় কৃষি উৎপাদন অব্যাহত রাখতে সচেষ্ট রয়েছে। সার কারখানা পর্যায়ে উৎপাদন যাতে কোনো অবস্থায় ব্যাহত না হয়, সে লক্ষ্যে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। সার কারখানার উৎপাদন সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তাত্ক্ষণিক সিদ্ধান্ত নেয়ার লক্ষ্যে ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের প্রশাসনিক ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হবে। একই সঙ্গে কারখানাগুলোর উৎপাদনশীলতা বাড়াতে কারিগরি জনবলের প্রশিক্ষণ ও প্রয়োজন অনুযায়ী নতুন জনবল নিয়োগ করা হবে।

শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, যারা সার ও কীটনাশক মজুদ করে কৃত্রিম সংকটের চেষ্টা করবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। দেশের দক্ষিণাঞ্চলে কোনো সার কারখানা না থাকায় তিনি সেখানে একটি সার কারখানা স্থাপনের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানার নির্মাণকাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করার তাগিদ দেন। এ লক্ষ্যে প্রকল্পসংশ্লিষ্ট বিদেশী প্রকৌশলী ও জনবলের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন তিনি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিসিআইসির আওতাধীন কারখানাগুলোর জমির খাজনা পরিশোধ করে দ্রুত নামজারি করতে হবে। এটি না করা হলে সরকারি জমি বেদখল হয়ে যেতে পারে। তিনি কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে কারখানার জমি সরকারের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আনারও তাগিদ দেন।

তিনি বলেন, যেসব বাফার গোডাউনের জমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে, সেখানে গোডাউন নির্মাণের পরবর্তী কার্যক্রম দ্রুত শুরু করতে হবে। বাফার গোডাউনে সংরক্ষিত সারের হিসাব যথাযথভাবে সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে। এ লক্ষ্যে প্রয়োজন হলে লোকবল নিয়োগ করতে হবে। পরিকল্পনা মাফিক সার কারখানাগুলো নিয়মিত মেরামতের নির্দেশনাও দেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী।

উল্লেখ্য, এ সম্মেলনে বিসিআইসির আওতাধীন কারখানাগুলোয় উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, ব্যয় সাশ্রয়, জনবলের দক্ষতা উন্নয়ন ও নামজারি, ওভার টাইম ভাতা যৌক্তিকীকরণ, ব্যবস্থাপকদের আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা বৃদ্ধিসহ অন্যান্য বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা ও সুপারিশ গ্রহণ করা হয়।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *