আমের ক্ষতি কাঁঠালে পুষিয়ে নেয়ার আশা সাতক্ষীরার বাগান মালিকদের

ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল সাতক্ষীরার অসংখ্য আম বাগান। এতে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিলেন বাগান মালিকরা। তবে চলতি মৌসুমে জেলায় কাঁঠালের ফলন ভালো হয়েছে। চাহিদার পাশাপাশি ভালো দাম পাওয়ায় আমের ক্ষতি কিছুটা হলেও পুষিয়ে যাবে বলে আশা করছেন ব্যবসায়ী ও বাগান মালিকরা।

সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে সাতক্ষীরার সাতটি উপজেলায় কাঁঠাল উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৮ হাজার ৫০০ টন। এর মধ্যে সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় ৫ হাজার ৬০০ টন, কলারোয়ায় ৩ হাজার ৩০০, তালায় ৯৫০, দেবহাটায় ৯০০, কালীগঞ্জে ৫ হাজার ৮০০, আশাশুনিতে ৮৫০ ও শ্যামনগর উপজেলায় ৬৫০ টন। তবে সবচেয়ে বেশি কাঁঠাল উৎপাদন হয়েছে সাতক্ষীরা সদর ও কালীগঞ্জ উপজেলায়। সূত্রটি আরো জানায়, গত বছর জেলায় কাঁঠাল উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৬ হাজার টন। সে তুলনায় চলতি মৌসুমে দুই হাজার টন বেশি লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এ উৎপাদন লক্ষ্য সামনে নিয়ে এবার জেলায় ২ হাজার ৮০ হেক্টর জমিতে কাঁঠাল বাগান হয়েছে। এর মধ্যে সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় ৮৪০ হেক্টর, কলারোয়ায় ৪২৫, তালায় ৬০, দেবহাটায় ৩৫, কালীগঞ্জে ৫৮০, আশাশুনিতে ৯৫ ও শ্যামনগরে ৪৫ হেক্টর। তবে গতবারের তুলনায় এবার ১০ শতাংশ বেশি জমিতে কাঁঠাল উৎপাদন হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তারা। গত বছর জেলায় ১ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে কাঁঠাল উৎপাদন হয়।

সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার কুশুলিয়া গ্রামের আনোয়ার হোসেন জানান, অন্য যেকোনো বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে প্রত্যেকটি গাছে কাঁঠালের ফলন খুবই ভালো হয়েছে। এরই মধ্যে স্থানীয় পাইকারের কাছে ৫৫ হাজার টাকা দরে ১২টি গাছের কাঁঠাল বিক্রি করা হয়েছে। এছাড়া নিজ পরিবারের খাওয়ার জন্য তিনটি কাঁঠাল গাছ রেখে দিয়েছেন। তবে গত বছরের তুলনায় চলতি বছর ভালো দামে গাছ বিক্রি করতে পেরেছেন বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, গত বছর একই পরিমাণ গাছের কাঁঠাল ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন, যা চলতি বছর ৫৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন।

সাতক্ষীরার জাহানাবাজ গ্রামের পাইকারি ফল ব্যবসায়ী শরিফুল ইসলাম জানান, চলতি মৌসুমে ৮ লাখ টাকায় ১২টি আম বাগান ও আটটি কাঁঠাল বাগান কিনেছেন তিনি। কিন্তু সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ১২টি আম বাগানের ৯০ শতাংশ আম নষ্ট হয়ে গেছে। এখন একমাত্র কাঁঠালের ব্যবসা যদি ভালো যায় তাহলে কিছুটা হলেও আমের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া যাবে। তবে অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় চলতি মৌসুমে সাতক্ষীরার অধিকাংশ এলাকায় কাঁঠালের ফলন ভালো হয়েছে বলে জানান তিনি।

সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. নজরুল ইসলাম জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্পানে জেলার অধিকাংশ আম বাগান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে চলতি মৌসুমে কাঁঠালের ফলন খুবই ভালো হয়েছে জেলায়। ভালো দাম পাওয়া গেলে কিছুটা হলেও আমের ক্ষতি পুষিয়ে যাবে বলে আশা করছেন তিনি।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *