সাভারের ঢাকা রপ্তানী প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (ইপিজেড) একটি কারখানায় কিছুদিন আগে আমদানি করা কাপড়ের চালান ভর্তি একটি কনটেইনার আসে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে। একই কারখানার একটি তৈরি পোশাকের চালান পরের দিনই রফতানি হওয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বিধিনিষেধের কারণে যে কনটেইনারটি আমদানীকৃত কাপড়ের চালান নিয়ে এসেছিল প্রতিষ্ঠানটি, সেটিকে আর ব্যবহার করতে পারেনি কারখানা কর্তৃপক্ষ। এ প্রতিষ্ঠানের মতোই এতদিন আমদানি করা কনটেইনার রফতানির কাজে ব্যবহার করতে পারত না ইপিজেডের কোম্পানিগুলো। তবে এনবিআরের বিধিনিষেধটি সম্প্রতি শিথিল করা হয়েছে। ফলে এখন ইপিজেডের মধ্যে প্রবেশ করা আমদানি চালান ভর্তি কনটেইনারগুলো বরাদ্দ দিয়ে একই কনটেইনারে রফতানির জন্য প্রস্তুত চালান পাঠাতে পারবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এর ফলে এখন থেকে পরিবহন সময় কমে বাণিজ্য ব্যয় অনেক কমে আসবে। কারণ আগে আমদানি করা কনটেইনারগুলো চালান খালাস করে নির্ধারিত গন্তব্যে ফিরে যেতে হতো। আবার রফতানির চালানের জন্য বরাদ্দ দিয়ে সেই একই কনটেইনার পুনরায় ইপিজেডে নিয়ে এসে সেগুলোতে চালান ভর্তি করে পাঠানো হতো। এতে অর্থ ও সময় দুটোই বেশি ব্যয় হতো।
নব্বইয়ের দশকের শেষে আইনের মাধ্যমে যাত্রা করে বাংলাদেশ রপ্তানী প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেপজা)। পর্যায়ক্রমে ঢাকা, কুমিল্লাসহ বিভিন্ন গন্তব্যে গড়ে ওঠে দেশের আটটি ইপিজেড। রফতানি খাতের বিকাশে বিশেষ শুল্ক অবকাঠামো ও ব্যবস্থাসংক্রান্ত সহায়তার আকর্ষণে অনেক দেশী-বিদেশী বিনিয়োগকারী এ অঞ্চলগুলোয় এরই মধ্যে বিনিয়োগ করেছে।
ইপিজেডগুলো বিনিয়োগকারী আকর্ষণ করলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অবকাঠামো ব্যবস্থা নিয়ে অস্বস্তি ছিল বিনিয়োগকারীদের। কারণ এনবিআরের বিধিনিষেধ অনুযায়ী কঠোর শুল্কায়ন পদ্ধতি অনুসরণের কারণে এতদিন চালান ভর্তি কনটেইনারে কাঁচামাল আমদানি করে সেই একই কনটেইনারে পণ্যের চালান ভর্তি করে করে রফতানির লক্ষ্যে ব্যবহার করা যেত না। আমদানি কনটেইনার থেকে পণ্য খালাসের পর সেই কনটেইনারকে নির্ধারিত স্থানে ফিরে যেতে হতো। পরে রফতানির প্রয়োজনে আবারো খালি কনটেইনার নির্ধারিত স্থান থেকে ডেকে রফতানি চালান ভর্তি করে তা পাঠাতে হতো।
বেপজার জেনারেল ম্যানেজার (পাবলিক রিলেশন) নাজমা বিনতে আলমগীর বণিক বার্তাকে বলেন, যে কনটেইনারগুলো আসত, সেগুলো খালি ফেরত যেত। চলে যাওয়া এ কনটেইনারগুলোই আবার ফিরিয়ে এনে রফতানি পণ্য যেত। এ পদ্ধতিতে অনেক টাকা-পয়সা নষ্ট হতো এবং প্রক্রিয়াগুলো ব্যয়বহুল হয়ে যেত। এ প্রেক্ষাপটেই আবেদন করে বলা হয়েছিল, যে কাভার্ড ভ্যানগুলো আসবে সেগুলোর মধ্যে অপেক্ষমাণগুলোকে ওই সময়েই বরাদ্দ দেয়া হবে, তাহলে ফিরে গিয়ে আবার আসার প্রক্রিয়ায় যেতে হবে না। এতে লিড টাইম কমে আসবে, খরচও কম হবে, স্বল্প খরচে পণ্য চলে যেতে পারবে। এভাবে সময়ও কম লাগবে, টাকাও কম খরচ হবে।