আনুগত্যের প্রতি অপ্রতুল ক্ষতিপূরণ

রিবাল বলেন, ‘অনুগতরা বাশারের হাতে শাসনদ্বন্ডটি পৌঁছে দিকে চেয়েছিলেন এবং নিশ্চিত করেছিলেন যে, তার ক্ষমতায় আরোহনে কোনো বিরোধী পক্ষ নেই এবং যে কেউ এর বিরোধিতা করলে তারা তাকে শেষ করে দেবেন। এ কারণেই তারা আমাদের বাড়ি এবং সমর্থকদের আক্রমণ করেছিল।’

রিফাতের অনেক শিশু সন্তান বাশারের প্রতি আনুগত্যের শপথ করেছিল এবং সিরিয়ায় বেঁচে ছিল কিন্তু এখনও তারা আক্ষেপের মধ্যে বেঁচে আছে। তাদের মধ্যে একজন, দাউরাইদ আল-আসাদ, শাসনতন্ত্রের সাথে অঙ্গাঙ্গী জড়িত ছিল এবং কিছুকাল অবধি বাশারের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিল। তবে, মাখলুফ তার ভিডিও প্রকাশের পরপরই গত ৭ মে দাউরাইদ একটি কড়া টুইট করে বাশারকে তার পদবী ভাগ করে নেওয়া শত শত আত্মীয়ের সাথে দেখা করতে বলে যারা বাশারের মতো সুবিধাজনক জীবন উপভোগ করেননি।

সে টুইট করে, ‘তারা বলেছে যে, সিরিয়া আসাদ পরিবার দ্বারা শাসিত হয়েছে। আমার একটি অনুরোধ আছে. পরিবারের ১শ’ থেকে ২শ’ সদস্য কখনও আপনার সাথে দেখা করেননি এবং তারা আপনাকে দেখতে চায়। তাদের মধ্যে অনেকে বড় হয়েছে, তাদের সন্তান হয়েছে তবে তারা কেবল টিভিতে আপনাকে দেখেছে।’

আমেরিকাবাসী প্রাক্তন সিরিয় ক‚টনীতিক বাসাম বারাবান্দী বলেছেন যে, দাউরাইদের নতুন সাহসের এক উচ্চ পর্যায়ের উদ্দেশ্য রয়েছে। তিনি বলেন, ‘এ ধরনের ধৃষ্টতা কখনই সহ্য করা হয়নি।’ বাসাম বলেন, ‘এখন দাউরাইদ তার পিতা রিফাত আল-আসাদকে বিকল্প হিসাবে উপস্থাপনের জন্য বাশারকে প্রকাশ্যে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে। যদি দাউরাইদ অনুভব না করতেস যে, পরিবারটি বাশার উপর অসন্তষ্ট, তবে তিনি এই কথা বলার সাহস করতেন না।’
রিবাল এবং দাউরাইদের বাশার বিরোধিতা আংশিকভাবে রাজনৈতিক ক্ষমতার দাবিতে তাদের পরিবারের দাবি দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছে। তবে মামাতো ভাই জেনারেল আদনান আল-আসাদসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা মনে করেন করেন যে, তারা পারিবারিক ব্যবসা থেকে বাদ পড়েছেন এবং মাখলুফের ইচ্ছা অনুযায়ী সম্পদ শ্রেফ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।

আদনান একটি বেসমারিক যোদ্ধা বাহিনী চালাতেন এবং ১৯৮২ সালে হাফেজের পক্ষে মুসলিম ব্রাদারহুডের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন যা হামা গণহত্যা হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছে এবং যেখানে তার সম্প্রদায়ের হাজার হাজার ভাই ও বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছিল। তবে সম্প্রতি তিনি মাখলুফকে যে চিঠি লিখেছেন, তাতে তিনি মন্তব্য করেন যে, তার আনুগত্যের প্রতি অপ্রতুল ক্ষতিপূরণ করা হয়েছে বলে তিনি বোধ করেছেন।

তবে তিনি মাখলুফের অবস্থাকে মায়া কান্না বলে অভিহিত করেছেন এবং তাকে টাকার তিমিদের মধ্যে সবথেকে মূল্যবান নীল তিমি হিসাবে বর্ণনা করেছেন। পাশাপাশি তিনি নিজেকে এক দুর্নীতিবাজ শাসনের আসল শিকার হিসাবে চিত্রিত করেছেন এবং তার চাচাতো ভাই প্রেসিডেন্টর বিষয়ে সতর্ক অবস্থান নিয়েছেন।

আদনানের চিঠিতে বলা হয়, ‘আমি আমার সম্পত্তি আমার পরিবারের চাহিদা মেটাতে বিক্রি করে দিচ্ছি, কারণ ৪২ বছর সামরিক চাকরির পরে আমার বেতন প্রায় ৫০ মার্কিন ডলার।’ তবে, চিঠিটি একটি চাটুকারিকতার মতো, যেখানে তার অভিযোগের সাথে লেখা হয়েছে যে, সরকার বারবার কীভাবে তার সুযোগ নিয়েছে, অর্থাৎ তিনি কীভাবে সরকারের সেবা করেছেন। (চলবে)

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *