অভিনয়কে ব্যাহত না করে নির্দেশনায় যুক্ত থাকতে চাই

লকডাউন শিথিলের পর ২ জুন শুরু হয় ছোট পর্দার শুটিং। দীর্ঘদিন পর শুটিংয়ে ফিরেই ব্যস্ত হয়ে পড়েন অভিনেতা আনিসুর রহমান মিলন। ঈদকে সামনে রেখে তিনি বেশ কয়েকটি নাটকে অভিনয় করেছেন। পাশাপাশি নির্দেশনার কাজও করছেন। সম্প্রতি টকিজের মুখোমুখি হয়ে কথা বলেছেন সাম্প্রতিক কাজ ও পরিস্থিতি নিয়ে। সাক্ষাত্কার নিয়েছেন রাইসা জান্নাত

ঈদকে ঘিরে কেমন ব্যস্ততা চলছে?

এবার আমি নতুন কিছু নির্মাতার সঙ্গে কাজ করছি। যাদের সঙ্গে আগে কাজ করা হয়নি। যেমন নির্মাতা আদিবাসী মিজানের দুটি একক ও একটি সাত পর্বের নাটক, আশরাফুল চঞ্চলের ডায়মন্ড নেকলেস, সকাল আহমেদের আরাধ্যসহ বেশ কয়েক জন নির্মাতার নাটকে কাজ করেছি।

এবার ঈদে তাহলে আপনাকে অনেক নাটকে দেখা যাবে?

হ্যাঁ, এবং সেগুলো বিভিন্ন ধরনের। এবার ভিন্নধর্মী কিছু গল্প নির্বাচন করেছি। কাজ মোটামুটি শেষ। অল্প কিছু বাকি আছে।

আপনি তো ঈদের তিনটি নাটকের নির্দেশনায় রয়েছেন। নাটকগুলোয় নির্দেশনার পাশাপাশি অভিনয়ও করছেন কি?

হ্যাঁ। এজাজ মুন্নার রচনায় মুনিরা মঞ্জিল, মাসুম শাহরিয়ারের রচনায় গালিবের গপ্পো ও জাকির হোসেন উজ্জ্বলের দুই মজনু নাটকের গল্পগুলোয় নির্দেশনার পাশাপাশি আমাকে পর্দাতেও দেখতে পাবেন দর্শকরা।

নিজের নির্দেশিত নাটকে কাজ করা কতটা চ্যালেঞ্জিং?

আমি যখন কোনো কিছুর নির্দেশনা দিই, তখন নিজের জন্য এমন চরিত্র বাছাই করি যেন সে চরিত্রে খুব বেশি চাপ না থাকে। নিজেকে কম তুলে ধরার চেষ্টা করি। আগামীতে কিছু গল্প নিয়ে কাজের ইচ্ছা আছে। সেগুলোতে হয়তো নিজে অভিনয় করব না।

আপনার নির্দেশিত নাটকের গল্পগুলো দর্শকদের ভালো নাটকের চাহিদা কতখানি পূরণ করবে বলে মনে করছেন?

গল্পগুলো অসাধারণ। একদম আলাদা। আমি নির্দেশনার পাশাপাশি যেসব নাটকে অভিনয় করছি, সেগুলোও ভিন্নধর্মী। নাম শুনে মনে হবে খুব হালকা। কিন্তু গল্পের গভীরতা অনেক।

করোনার কারণে নির্মাতা, কলাকুশলীদের দীর্ঘদিন ঘরবন্দি থাকতে হয়েছে। কাজে ফেরার পর বুদ্ধিবৃত্তিক চিন্তার জায়গায় কোনো পরিবর্তন লক্ষ্য করেছেন কি?

পৃথিবীতে অপরিহার্য বলে কেউ নেই। আমাকে ছাড়াও ইন্ডাস্ট্রি চলবে। এ বোধদয়টা করোনা পরিস্থিতির কারণে সবার মাঝে এসেছে বলে আমার মনে হয়। এখন এটাকে বজায় রাখতে হবে। তাহলে হয়তো ইন্ডাস্ট্রিতে একটা সুস্থ জায়গা আমরা পাব।

আপনি তো বেশ কিছুদিন ধরে শুটিং করছেন। প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুটিং হচ্ছে কি? শুটিং হাউজগুলোর কী অবস্থা?

আমরা যেসব সেটে কাজ করছি, সেখানে স্বাস্থ্যবিধির বিষয়গুলো ভালোভাবে মেনে চলার চেষ্টা করছি। আর যেসব হাউজ সচেতন, আমরা কাজের ক্ষেত্রে সেগুলোকে প্রাধান্য দিচ্ছি। কিন্তু অনেকেই আছেন যারা হয়তো ভাবছেন আমরা আমরাই তো কিছু হবে না। কিন্তু করোনা কীভাবে ছড়িয়ে পড়বে, সেটা আমাদের অজানা। এজন্য আরো সচেতনতা প্রয়োজন।

করোনা সংক্রমণ এড়াতে সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কথা মাথায় রেখে শুটিং করতে হচ্ছে। এভাবে কাজ করা কঠিন মনে হচ্ছে কিনা?

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা কিন্তু সাধারণ বিষয়। এটাই করার কথা ছিল আমাদের। এতদিন এসব করা থেকে বিরত ছিলাম আমরা। করোনার মধ্যে মানুষ এগুলো অনুশীলন করতে শুরু করেছে। এটা চালিয়ে যাওয়া প্রয়োজন।

আমার শেষ প্রশ্ন, আগামীতে নির্দেশনা নিয়ে আপনার দীর্ঘমেয়াদি কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা?

তিনটি চলচ্চিত্রের গল্প প্রস্তুত করেছি। আমি হয়তো ওয়েব ফরমেটে যাব। কারণ প্রেক্ষাগৃহে ছবি মুক্তি দেয়া এখন কঠিন। আশা করছি মনের মতো করে কাজগুলো করতে পারব। আর দৈনন্দিন কাজের ক্ষেত্রে হয়তো নাটকে অভিনয়ের পাশাপাশি নির্মাতা হিসেবে একটি সিরিয়ালের শুট করতে পারি। করোনার তিন মাসে আমার ব্রেন খালি হয়েছে। বুঝতে পেরেছি আমার সৃজনশীল কাজের আরেকটি অংশ হচ্ছে পরিচালনা করা। অভিনয়কে ব্যাহত না করে কাজটির সঙ্গে থাকতে চাই।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *