প্রদর্শনী প্লটে তাহেরপুরী জাতের পেঁয়াজের পরিবর্তে লালতীর সরবরাহের ঘটনার তদন্ত ছয় মাসেও শুরু করেনি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। অভিযুক্তের বিচার না হওয়ায় পরবর্তী সময়ে এ ধরনের কাজ সরকারের গবেষণা কার্যক্রমের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শৈলকূপা উপজেলার হাকিমপুর ইউনিয়নের সাধুহাটি গ্রামের মাঠে উন্নত বীজ উৎপাদনের লক্ষ্যে গত অর্থবছর কৃষি অফিস এক একর জমিতে বারী পেঁয়াজ-১ (তাহেরপুরী) প্রদর্শনী প্লট তৈরি করে।
চাষী মনিরুল ইসলাম জানান, এসএএও কনোজ কুমার তাকে চাষাবাদে নানাভাবে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে বারী পেঁয়াজ-১ বীজ উৎপাদনে উৎসাহিত করেন। কিন্তু সেই সময় তথ্য গোপন করে বারী পেঁয়াজ-১-এর পরিবর্তে ৩৫ মণ লালতীরের বীজ সরবরাহ করেন তিনি। বর্তমানে প্লটে লালতীর জাতেরই পেঁয়াজের ফলন হয়েছে। যদিও সাইনবোর্ডে তাহেরপুরী জাতের কথা উল্লেখ করা আছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক সূত্রে জানা যায়, বারী পেঁয়াজ-১-এর প্রদর্শনী প্লট করে কৃষি বিভাগের নজরে আসতে চেয়েছিলেন কনোজ কুমার। কিন্তু চাষী মনিরুল ইসলাম বারী পেঁয়াজ-১ প্লট তৈরিতে আগ্রহ না দেখালে তাকে ভুল বুঝিয়ে প্লটের জমি নির্দিষ্ট করে লালতীরের বীজ লাগিয়ে দেয়া হয়।
সাধুহাটি গ্রামের চাষী বাচ্চু মণ্ডল জানান, প্রদর্শনী প্লটে লালতীরের বীজ আবাদ হয়েছে সবাই জানে। তবে কী কারণে বারী-১-এর সাইনবোর্ড টানানো, তা সাধারণ চাষীদের বোধগম্য নয়।
এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট মাঠকর্মী (এসএএও) কনোজ কুমার জানান, অফিস থেকে সরবরাকৃত বীজই কৃষক মনিরুল ইসলামের প্লটে রোপণ করা হয়েছিল। তবে কীভাবে প্লটে লালতীর উৎপাদন হয়েছে সে বিষয়টি এড়িয়ে যান।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার কুণ্ডু জানান, বীজ উৎপাদন, সংগ্রহ, সংরক্ষণ কৃষি বিভাগের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কোনো ব্যক্তির স্থূল কর্মকাণ্ডের জন্য সরকারের কৃষি বিভাগের বীজ গবেষণাগার বিতর্কিত হবে এমন দায়ভার অফিস বহন করবে না।
তিনি বলেন, ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃপাংশু শেখর বিশ্বাস এবং যশোরস্থ আঞ্চলিক অফিসের অতিরিক্ত পরিচালক পার্থপ্রতিম সাহাকে এ বিষয়ে জানানো হলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেননি। এতে বড় ধরনের এ দুর্নীতি ধামাচাপা পড়ে যাচ্ছে। আগামী মৌসুমে এ অঞ্চলে বারী পেঁয়াজ-১ চাষে আগ্রহী চাষীরা আবারো বীজ প্রতারণার শিকার হতে পারেন।
ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃপাংশু শেখর বিশ্বাস জানান, বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তদন্ত কমিটির মাধ্যমে তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ করেছে। যেকোনো সময় তদন্ত রিপোর্ট জানা যাবে।