হোয়াইট হাউসে কর্মকর্তাদের পদত্যাগের হিড়িক

যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। সন্ধ্যা ৬ টা থেকে জারী করা হয়েছে কারফিউ। ট্রাম্প সমর্থক সন্ত্রাসীদের হঠিয়ে দিয়ে ক্যাপিটাল হিলের দখল নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ইলেক্টোরাল ভোটের সার্টিফিকেশনের কাজ শেষ করতে যৌথ অধিবেশনে আবার মিলিত হয়েছেন কংগ্রেস ও সিনেট সদস্যরা।

এদিকে, হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ নিরাপত্তা উপদেষ্টা অব্রায়ানসহ ৩ জন কর্মকর্তা পদত্যাগ করতে চলেছেন। ফাষ্টলেডি মেলানিয়া ট্রাম্পের চীফ অফ স্টাফ স্টেফানি গ্রিশম পদত্যাগ করেছেন। হোয়াইট হাউসের স্টাফরা ট্রাম্পকে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আহবান জানিয়েছেন।

ক্যাপিটাল হিল ভবন ঘিরে রেখেছে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী।
মোতায়েন করা হয়েছে শতাধিক এফবিআই এজেন্ট, ইউএস মার্শাল, এটিএফ, পুলিশ প্যারা ম্যালিটারী সহ বিভিন্ন সংস্থার লোকজন। পার্শ্ববর্তী রাজ্য থেকে ডাকা হয়েছে অতিরিক্ত ন্যাশনাল গার্ড সদস্যদের। ওয়াশিংটনের পার্শ্ববর্তী ভার্জিনিয়ায় জরুরি অবস্থা জারী করেছেন গভর্নর।

উল্লেখ্য, সন্ত্রাসীদের হামলা ও ধ্বংসাত্মক ঘটনায় ট্রাম্প সমর্থক আ্যশলি বেবিট নিহত হয়েছেন। তিনি সান ডিয়াগো থেকে ওয়াশিংটনে সমাবেশে যোগ দিতে আসেন। পুলিশসহ বহু আহত হয়েছেন। ২ জলকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। টুইটার ও ফেইসবুক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের একাউন্ট সাময়িকভাবে স্হগিত করে দিয়েছে। কয়েকজনকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। বিভিন্ন সূত্রে অন্তত ৩৩ জনকে গ্রেফতার বা আটক করার খবর পাওয়া গেছে। ওয়াশিংটনে ৩টি হাই এক্সক্লুসিভ ডিভাইস উদ্ধার করেছে পুলিশ।

এ ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। মানুষের মাঝে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ উৎকন্ঠা। কারফিউ চললেও ট্রাম্প সমর্থকরা এখনও রাজপথ দখল করে আছে। তবে মার্কিন জাতীয় আইন পরিষদ ভবন ক্যপিটাল হিল থেকে সন্ত্রাসীদের বের করে দিতে সক্ষম হয়েছে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী। দুপুরে অতর্কিত হামলা চালিয়ে বিপুল সংখ্যক ট্রাম্প সমর্থক সন্ত্রাসী ক্যাপিটাল হিল ভবনে ঢুকে পড়ে এবং ভবনের দখল নেয়। তারা প্রায় আধা দিন ধরে ক্যাপিটাল হিলে তান্ডব চালায়। ভাংচুর করে যুক্তরাষ্ট্র আইন পরিষদ ভবনের জানালা। স্পীকার ন্যান্সি প্যালোসির অফিস থেকে নিয়ে যায় মূলাবান ট্রফি। ট্রাম্প বিরোধী সিনটরদের খুঁজতে থাকে রুমে রুমে গিয়ে। পুরো ভবনজুড়ে চলে এসব সন্ত্রাসীদের অরাজকতা। দেখা দেয় আতংক। এসময় ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স, ভাইস প্রেসিডেন্ট ইলেক্ট কমালা হ্যারিস, স্পীকার ন্যান্সি প্যালোসিসহ সিনেটর ও কংগ্রেসের সদস্যসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তিদের নিরাপত্তা রক্ষীরা দ্রুত অজ্ঞাত নিরাপদ স্হানে সরিয়ে নেয়। নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত সদস্যরা এসময় ক্যাপিটাল হিলের স্টাফদের নিরাপদ জায়াগায় নিয়ে যায়। তখন ফ্লোরে কংগ্রেস ও সিনেটের যৌথ অধিবেশন চলছিল ইলেক্টোরাল ভোটের সার্টিফিকেশন নিয়ে। সভায় সভাপতিত্ব করছিলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স। তবে স্টাফরা সংরক্ষিত ইলেক্টোরাল ব্যালট নিরাপদ স্হানে সরিয়ে নিতে সক্ষম হয়।

বেলা ১১ টার পর বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার সমর্থকদের সমাবেশে বক্তব্য দেন হোয়াইট হাউসের সামনে। প্রেসিডেন্ট বক্তব্যে হামলার জন্য উস্কে দেন, উত্তেজিত করে তোলেন উপস্হিত উগ্রবাদী সমর্থকদের। ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতাসহ অনেকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ইম্পিচমেন্টের দাবী তুলেছেন। কংগ্রেস উইমেন ইলহান ওমরসহ কিছু আইনপ্রণেতা এবিষয়ে একটি বিল নিয়ে কাজ করছেন। ইলেক্টোরাল ভোট সার্টিফিকেশনের জন্য যৌথ অধিবেশন চলছে। আজ রাতেই সার্টিফিকেশন সম্পন্ন হওয়ার কথা।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *