স্বাস্থ্যবিধি মেনে ১ জুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবিতে শিক্ষামন্ত্রীকে স্মারকলিপি

শিক্ষার্থীরা স্মারকলিপিতে লেখেন- শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। শিক্ষাই একটি জাতির সার্বিক উন্নয়নের চাবিকাঠি। করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে গত ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে আমাদের দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। প্রকারান্তরে আমাদের জাতীয় যে উন্নয়ন ও অগ্রগতিই যেন থমকে আছে। গত প্রায় দেড় বছর ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার ফলে পুরো শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসের সম্মুখীন। শিক্ষার্থীরা দীর্ঘ সময় ধরে শিক্ষা কার্যক্রমের বাইরে থাকার ফলে তারা নানামুখী সমস্যার সম্মুখীন। আমরা দেখেছি করোনাকালে সারাদেশের মানুষের উল্লেখযোগ্য একটা অংশের রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে। কারণ শিক্ষার্থীদের বড় একটা অংশই নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। শিক্ষাজীবন শেষে পরিবারের হাল ধরার দায় থাকে। একদিকে পরিবারগুলো ক্ষতি শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষাজীবন শেষ করতে পারছে না। এদিকে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমাও পেরিয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও অনেকে বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্যও আবেদন করতে পারছে না। সব মিলিয়ে সারাদেশের শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ জীবন এখন অনিশ্চয়তার দোলাচলে। এছাড়াও সারাদেশে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘ সময় ধরে শিক্ষা-কার্যক্রমের বাইরে থাকায় তাদের মধ্যে হতাশা, মাদকাসক্ত হওয়া, নানাবিধ অন্যায়ে জড়িয়ে পড়া ও আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলে সারাদেশে কয়েক কোটি শিক্ষার্থীর বিপন্ন প্রায় জীবনকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে শিক্ষা-কার্যক্রম স্বাভাবিক করা ছাড়া কোনও গত্যন্তর নেই।

করোনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকাকালে সরকারের পক্ষ থেকে অনলাইনে শিক্ষা-কার্যক্রম পরিচালনা করা হলেও নানাবিধ সমস্যার কারণে বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই শিক্ষা কার্যক্রমের সাথে যুক্ত হতে পারেনি। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের তথ্য মতে ৬০-৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমের সাথে যুক্ত হতে পারেনি। বর্তমানে প্রযুক্তির যুগে অনলাইনে শিক্ষা-কার্যক্রম বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সম্ভব হলেও আমাদের দেশে তা নানা কারণেই সফলতা পায়নি। তার অন্যতম কারণ হচ্ছে দেশের অধিকাংশ অঞ্চলে ইন্টারনেট সংযোগের গতি খুবই নিম্নমানের। সংবাদমাধ্যমের তথ্য মতে, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে ইন্টারনেটের গতি একমাত্র আফগানিস্তান বাদে সবচেয়ে দুর্বল। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের উল্লেখযোগ্য একটা অংশের কাছে উপযুক্ত ডিভাইস না থাকায় তারাও চলমান অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমের সাথে যুক্ত হতে পারেনি।

আমরা দেখেছি ইন্টারনেট সংযোগের নিম্নমানের ফলে গত ২৬ তারিখে অনলাইন সংবাদ সম্মেলনের সময় মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী নিজেই বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিলেন।
[১] করোনার কারনে বিশ্বের অনেক বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ হলেও চট্টগ্রাম বন্দর ২৪ ঘণ্টা চালু ছিল ≣ [১] ৩৩৩ নম্বরে কল করলেই খাদ্য সহায়তা: মেয়র আতিকুল ইসলাম ≣ [১] বাসায় রেখেই খালেদা জিয়ার চিকিৎসা, যুক্ত হয়েছে নতুন ওষুধ, সিটি স্ক্যান রিপোর্ট পর্যালোচনা করলেন ঢাকা, লন্ডন ও নিউইয়র্কের চিকিৎসকরা

ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন বর্ষের পরীক্ষা অনলাইনে গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই ধরনের সিদ্ধান্ত উচ্চশিক্ষার ধারণার পরিপন্থী। কারণ এর ফলে উচ্চশিক্ষাকে কেবল পরীক্ষা নির্ভর ও সার্টিফিকেট সর্বস্ব করে ফেলা হবে। অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের বৃহৎ একটি অংশ প্রায় দেড় বছর শিক্ষা-কার্যক্রমের বাইরে ছিল৷ এখন যদি অনলাইনে পরীক্ষা নেয়া হয় তাহলে উচ্চশিক্ষার কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেয়া হবে।

কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এই যে চরম দুর্দশা সৃষ্টি হয়েছে তা লাঘবের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে শিক্ষা-কার্যক্রম স্বাভাবিক করার কোনও বিকল্প নেই। তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে শিক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিক করারসহ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আপনার কাছে নিম্নোক্ত ৪ দফা দাবি জানাচ্ছি। আপনার কাছে আকুল আবেদন, সারাদেশে কয়েক কোটি শিক্ষার্থীর জীবনের অনিশ্চয়তা রোধে নিম্নোক্ত দাবিগুলো মেনে নিতে আপনার মর্জি কামনা করছি।

দাবি সমূহ : ১. স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে আগামী ১ জুন সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে। ২. স্থগিত ও আটকে থাকার পরীক্ষাগুলো গ্রহণের জন্য দ্রুত রুটিন প্রকাশ করতে হবে। ৩. করোনাকালে শিক্ষার যে ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে নিতে জাতীয় বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে।

সারাদেশের শিক্ষার্থীবৃন্দের পক্ষে, ১. মশিউর রহমান (জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়) ২. জি কে সাজিদ (ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়া) ৩. নায়েক নূর মুহম্মদ (সরকারী তিতুমীর কলেজ, ঢাকা) ৪. শামসুল ইসলাম (পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়) ৫. মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়)।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *