রোহিঙ্গা সংকটের দীর্ঘস্থায়ী সমাধান চায় ইউএনএইচসিআর

মিয়ানমারে ও মিয়ানমারের বাইরে অবস্থানরত বাস্তুচ্যুত ও রাষ্ট্রহীন রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের জন্য বিশ্বের কাছে আবারো সহায়তা ও সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর। গতকাল এক বিবৃতিতে সংস্থাটি এ আহ্বান জানায়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ২০১৭ সালের আগস্টে রোহিঙ্গারা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছিল। এর তিন বছর পর আজও বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ আছে ও নতুন অনেক চ্যালেঞ্জ তৈরি হচ্ছে। বিশ্বব্যাপী কভিড-১৯ মহামারী পরিস্থিতিকে করেছে আরো জটিল। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী ও স্থানীয় বাংলাদেশী জনগণকে সাহায্যের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত পরিবর্তিত পরিস্থিতির নতুন চাহিদাগুলো মেটানো এবং এ সংকট সমাধানের লক্ষ্যে আরো বেশি কাজ চালিয়ে যাওয়া।

রোহিঙ্গাদের হিসাবে, তাদের প্রায় তিন-চতুর্থাংশ আজ মিয়ানমারের বাইরে আছে। ইউএনএইচসিআর ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ নিবন্ধন অনুযায়ী, কক্সবাজারে অবস্থান করছে প্রায় ৮ লাখ ৬০ হাজার রোহিঙ্গা। রোহিঙ্গাদের প্রতি বাংলাদেশ দেখিয়েছে মানবতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। বাংলাদেশ নিশ্চিত করেছে তাদের সুরক্ষা, ব্যবস্থা করেছে জীবন রক্ষাকারী মানবিক সাহায্যের। আজ এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের নিবন্ধিত প্রতি ১০ জন রোহিঙ্গার মধ্যে নয়জন বাস করে বাংলাদেশে। এ মহানুভবতার প্রতিদানস্বরূপ রোহিঙ্গা ও স্থানীয় বাংলাদেশী জনগণের জন্য নিরন্তর সহায়তা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া প্রয়োজন।

রোহিঙ্গা সংকটের পরিপূর্ণ সমাধান আছে মিয়ানমারে। অ্যাডভাইজরি কমিশন অন রাখাইন স্টেটের সব সুপারিশ পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমেই এটি সম্ভব; আর মিয়ানমার সরকারও সেটি করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও স্থায়ী প্রত্যাবাসনের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরিতে প্রয়োজন সর্বস্তরের অংশগ্রহণ, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ ও রোহিঙ্গাদের মধ্যে নতুন করে কার্যকরী আলোচনার সূত্রপাত এবং দুপক্ষের মধ্যে আস্থা তৈরির পদক্ষেপ। এসবের জন্য প্রয়োজন মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের চলাফেরার ওপর বিধিনিষেধ প্রত্যাহার, অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ গ্রামে ফেরার সুব্যবস্থা এবং রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব পাওয়ার বিষয়ে একটি পরিষ্কার রোডম্যাপ বলে জানানো হয় বিবৃতিতে।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *