‘রেড জোন মিরপুর’ ক্রিকেটারদের ট্রেনিং নিয়ে শঙ্কা!

প্রায় ৩ মাস হতে যাচ্ছে বাংলাদেশে বন্ধ সব ধরনের ক্রিকেট। যদিও এর মধ্যে ক্ষীণ আলোর রেখা দেখা দিয়েছে মাঠে ক্রিকেট মাঠে ফেরার। ১৫ই জুন থেকে ৩২ ক্রিকেটার নিয়ে ট্রেনিং শুরুর পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এমনটাই জানিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান চিকিৎসক ও মেডিক্যাল বিভাগের প্রধান দেবাশিষ চৌধুরী। কিন্তু  ‘হোম অব ক্রিকেট’ শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সেই ট্রেনিং শুরু নিয়ে দেখা দিয়েছে শঙ্কা। কারণ এরই মধ্যে মিরপুরকে করোনা ভাইরাসের জন্য ‘রেড জোন’ হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার। যে কারণে বর্তমান বাস্তবতায় এই ট্রেনিং শুরু অনেকটাই কঠিন। এমনটাই মনে করেন বিসিবির মিডিয়া বিভাগের চেয়ারমান জালাল ইউনুস।

তিনি বলেন, ‘আসলে দেশের করোনা ভাইরাসের পরিস্থিতি আগের চেয়ে খারাপ। ১৫ই জুন ট্রেনিং শুরু করা আমি মনে করি বেশ কঠিন। কারণ মিরপুরকে সরকার করোনা ভাইরাসের জন্য রেড জোন ঘোষণা করেছে। এখানে এসে ক্রিকেটারদের জন্য ট্রেনিংয়ে ভীষণ ঝুঁকি  থাকবে । আমরা চাই না কোনো ক্রিকেটার বিন্দুমাত্র ঝুঁকিতে পরুক। তারপরও আমরা অপেক্ষা করবো সেই পর্যন্ত। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবো। যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরিস্থিতির উন্নতি হয় তখন ভাবা  যেতে পারে কী করা যায়। গতকাল বাংলাদেশে করোনায় সর্বোচ্চ মৃত্যু ও আক্রান্তের রেকর্ড সংখ্যা ছাড়িয়েছে। যে কারণে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে বিসিবি ক্রিকেট মাঠে ফেরাতে সব ধরনের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। ঢাকা ছাড়াও, চট্টগ্রাম ও খুলনাকেও প্রস্তুত করা হচ্ছে যেন ক্রিকেটাররা ট্রেনিং শুরু করতে পারে। জাতীয় দলে অনেক ক্রিকেটারই চাইছেন ঢাকা না এসে নিজ নিজ বিভাগের মাঠে ট্রেনিং করতে। বিশেষ করে সিলেটের  পেসার ইবাদত হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘দেখেন যদি ঢাকা যাই অনেক সুবিধা পাবো জানি। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে ঢাকা গিয়ে ট্রেনিং করা খুবই কঠিন হবে। তাই সিলেটে হলে আমরা এখানে অল্প কয়েকজন ছিলাম। এতে দূরত্ব বজায় রেখে ট্রেনিং করা আমাদের জন্য ভালো হতো।’ চট্টগ্রামে অবস্থান করা জাতীয় দলের তরুণ অফ স্পিনার নাঈম হাসানও চান ট্রেনিং যেন নিজ শহরেই করতে পারেন। তিনি বলেন, ‘ঢাকার চেয়ে চট্টগ্রামে ট্রেনিং করতে পারলে ভালো হবে আমার জন্য।’
অন্যদিকে বিসিবির মেডিক্যাল বিভাগের প্রধান দেবাশিষ চৌধুরী চান ক্রিকেটারদের ঢাকা এনেই ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করতে। এতে তারা সর্বোচ্চ সুবিধা পাবে। তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, ক্রিকেটারদের এখন ঢাকায় এসে ট্রেনিং করা কঠিন মানতে হবে।  সেই জন্য মিরপুর ছাড়াও চট্টগ্রাম, খুলনা ও সিলেটকে প্রস্তুত করা হচ্ছে। তবে আমি মনে করি ঢাকায় এনে ট্রেনিং শুরু করতে পারলে ভালো। এতে করে তারা  ট্রেনিংয়ের সব সুবিধা পেত। এখন কেউ ঢাকার বাইরে করতে চাইলে তাদের জন্য কোচ ও ট্রেইনারের ব্যবস্থা করতে হবে। সেগুলোও আমাদের ভাবতে হবে।’
এছাড়াও ঢাকায় হলেও ৩২ জনের বেশি ক্রিকেটারকে ট্রেনিং করানো যাবে না বলে জানিয়েছেন দেবাশিষ চৌধুরী।  তিনি বলেন, ‘তালিকা তৈরি হচ্ছে। যা চূড়ান্ত করে দেবেন জাতীয় দলের নির্বাচকরা। তবে আমরা ঢাকায় ৩২ জন ক্রিকেটারকেই জায়গা দিতে পারবো ট্রেনিংয়ের জন্য। এর বেশি সম্ভব হবে না। এখানে একাডেমিতে কেউ থাকতে চাইলে সেই ব্যবস্থা করা হবে। তবে সেটি বেশি সংখ্যায় হবে না। যাদের ঢাকায় থাকার জায়গা একেবারেই নেই শুধু তাদের জন্য একাডেমিতে থাকার ব্যবস্থা হবে। তবে বড় কথা হচ্ছে আমরা সব পরিকল্পনা করে রাখছি। দেখি সব ঠিক থাকলে ১৫ই জুন ট্রেনিং শুরু হতে পারে।’
যদিও বিসিবি পরিচালক জালাল ইউনুসের মতে ক্রিকেট মাঠে ফেরা এখন আরো কঠিন হয়েছে। তিনি বলেন, ‘পরিস্থিতির তো উন্নতি হয়নি। বরং আগের চেয়ে খারাপ। এই মুহূর্তে তাই আমাদের চিন্তা ক্রিকেটের  চেয়ে জীবন বড়। তাই যদি বাস্তবতা চিন্তা করি এই জুনে মাঠে ক্রিকেট ফেরার সম্ভাবনা একেবারেই কম। আমাদের এখন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা ছাড়া আর কিছু করার নেই। যদি ১৫ তারিখের মধ্যে কিছু পরিবর্তন আসে আমরা ভাববো। ঝুঁকি নেয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না।’

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *