রাজীবের শাস্তি পুনর্বিবেচনা করবে বিসিবি

২০১৯ এর নভেম্বরে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে ৫ বছরের জন্য নির্বাসিত হন শাহাদাত হোসেন রাজীব। অভিজ্ঞ এই পেসারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি মাঠে প্রতিপক্ষ দলের ক্রিকেটার আরাফাত সানি জুনিয়রকে মারধর করেছেন। ঘটনাটি তিনি ঘটিয়েছেন সেই বছরেই জাতীয় লীগের (এনসিএল) শিরোপা নির্ধারণি ম্যাচে খুলনায়। এরপরই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) তাকে নিষিদ্ধ করে। এরই মধ্যে ১৫ মাস কেটে গেছে। চরম বাস্তবতার মুখোমুখি হয়ে গত ২৩শে ফেব্রুয়ারি বিসিবির কাছে শাস্তি মওকুফ ও খেলার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছেন রাজীব। তার ক্রিকেটে ফিরতে চাওয়ার কারণ ক্যান্সার আক্রান্ত মায়ের চিকিৎসার জন্য অর্থের প্রয়োজন। আর খেলতে না পারলে তা উপার্জন করাও এই পেসারের পক্ষে কঠিন।
প্রশ্ন হচ্ছে বিসিবি তার এমন মানবিক আবেদনে সাড়া দেবে কিনা! এ বিষয়ে বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজামুদ্দিন চৌধুরী সুজন জানিয়েছেন রাজীবের আবেদন বিবেচনা করবে বিসিবি। দৈনিক মানবজমিনকে বিসিবির সিইও বলেন, ‘এটি সত্যি যে আমরা রাজীবের আবেদন পেয়েছি। কিন্তু তার শাস্তি মওকুফের বিষয়ে একার সিদ্ধান্ত হতে পারে না। যে কারণে এরই মধ্যে তার আবেদন আমরা রীতি নির্ধারণী মহলে পাঠিয়ে দিয়েছি। বিসিবির শৃঙ্খলা কমিটি এটি পুনর্বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত জানাবেন। যদি তারা মনে করেন যে শাস্তি কমানো উচিত তারা সেভাবেই সিদ্ধান্ত নিবেন।’ অন্যদিকে আবেদন করার পরপরই রাজীব নিয়ম না মেনে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের একাডেমির মাঠে অনুশীলন শুরু করেছিলেন। নিয়ম অনুসারে তিনি নিষিদ্ধ থাকা অবস্থায় অনুমতি ছাড়া কোনোভাবে বিসিবির কোন ধরনের সুবিধা ব্যবহার করতে পারবেন না। এ বিষয়ে নিজামুদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘তিনি (রাজীব) আবেদন করেছেন এটি ঠিক। কিন্তু অনুশীলন শুরু করে দিয়েছেন সেই বিষয়ে আমরা অবগত ছিলাম না। তিনি এটি করতে পারেন না। তাকে অবশ্যই নিয়ম মেনেই অনুমতি নিয়ে অনুশীলন করতে হবে।’ শনিবার একাডেমির মাঠে অনুশীলন করলেও গতকাল রাজীব আর তা করেননি। বিষয়টি জানাজানির পর তাকে মাঠে না ঢুকতে দিতে সিকিউরিটি বিভাগকে জানানো হয়েছে। অন্যদিকে শনিবার দৈনিক মানবজমিনকে রাজীব জানান তার মা এখন ক্যান্সার আক্রান্ত। তৃতীয় স্টেজে আছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তাকে বাঁচানো কঠিন। যে কদিন বাঁচবেন তার চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হবে। কিন্তু ১৫ মাস ধরে ক্রিকেট খেলার বাইরে রাজীব। আরো ১৫ মাস তিনি মাঠে নামতে পারবেন না। কারণ, শেষ দুই বছর স্থগিত নিষেধাজ্ঞা থাকায় তিনি ৩ বছর মাঠের বাইরে থাকবেন। এতে ক্রিকেট থেকে তার আয়ের পথ বন্ধ। রাজীব বলেছেন, ‘আমি ২৩শে ফেব্রুয়ারি বিসিবির সিইও বরাবর খেলার জন্য আবেদন করেছি। তাই অনুশীলন শুরু করেছি মিরপুর মাঠে। কিন্ত আমি জানতাম না যে নিষিদ্ধ থাকা অবস্থায় আমি এই মাঠ ব্যবহার কারতে পারবো না। আমি না জেনেই ভুল করেছি। আমার আসলে কোনো উপায় নেই। আমার মা ক্যান্সার আক্রান্ত, তৃতীয় স্টেজে আছেন। তাকে বেশিদিন বাঁচানো যাবে না। কিন্তু চিকিৎসা তো চালাতে হবে। আমি নিষিদ্ধ হয়েছি প্রায় ১৫ মাস চলছে। আর কোনোভাবেই পারছিনা মাঠের বাইরে থাকতে। ক্রিকেটই আমার আয়ের পথ। আমিতো আর অন্য কোন কাজ জানি না। আর করোনার কারণে সব ধরনের উপার্জন বন্ধ। তাই মায়ের চিকিৎসা চালিয়ে নিতে আমার টাকার প্রয়োজন।

এ কারণেই খেলার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছি। আমি আসলে খুব ভুল করেছি। আশা করবো বিসিবি আমাকে ক্ষমা করবে।’

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *