যে শর্তে অনুদান পাচ্ছেন রোমান সানা

মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে সব খেলার মতো বন্ধ আরচারি। বিশ্বের সব দেশের আরচারি ফেডারেশনই ক্ষতিগ্রস্থ। এখনো আন্তর্জাতিক খেলাধুলার অনুমতি দেয়নি বিশ্ব আরচারির সর্বোচ্চ সংস্থা। কবে নাগাদ আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট মাঠে গড়াবে, সেটাও বলা যাচ্ছে না। খেলা না থাকায় ফেডারেশনগুলো আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে, আর্থিক সমস্যায় পড়েছেন অনেক আরচারও। এ সংকটময় সময়ে বিশ্ব আরচারি ফাউন্ডেশন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বিশ্বের নানান দেশের আরচারদের দিকে। যেখানে রয়েছে বাংলাদেশের এক নম্বর আরচার রোমান সানার নামও।
করোনায় ক্ষতিগ্রস্থ আরচারদের জন্য একটা ত্রাণ তহবিল গঠন করেছে এ দুটি সংস্থা, ১ লাখ ৯০ হাজার ইউএস ডলার (প্রায় ১৬ কোটি ৬৬ হাজার টাকা) জমা হয়েছে সেই তহবিলে ।
সেখান থেকে বাংলাদেশের তিরন্দাজ রোমান সানা পাচ্ছেন ৫০০০ ইউএস ডলার (প্রায় ৪ লাখ ২২ হাজার টাকা)। এ টাকা দেয়ার আগে বিশ্ব আরচারি ফাউন্ডেশন আবার জুড়ে দিয়েছে শর্ত। নিজের ইচ্ছেমত পুরো টাকা খরচ করা যাবে না। এর মধ্যে ৮০ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা খরচ করতে হবে আরচারি সংশ্লিষ্ট কাজে। বাকিটা খরচ করা যাবে ব্যক্তিগত প্রয়োজনে। এক্ষেত্রে নিজের মায়ের চিকিৎসার জন্যই বাকি ২০ শতাংশ খরচ করবেন তিনি। বাংলাদেশ আরচারি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রাজীব উদ্দীন চপল জানিয়েছেন, ‘আমরা রোমান সানার জন্য কিছু দিন আগে বিশ্ব আরচারি সংস্থায় একটা অনুদানের আবেদন করেছিলাম। ওরা সব কিছু যাচাই বাছাই করে এই অনুদান দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। টাকা পাওয়ার বিষয়টা প্রক্রিয়াধীন আছে। আশা করছি, খুব দ্রুত রোমানের ব্যাংক একাউন্টে টাকা জমা হয়ে যাবে।’ দেশের আরচারির সবচেয়ে বড় এই তারকাকে অনুদান পাইয়ে দিতে বড় ভূমিকা রেখেছেন জাতীয় দলের জার্মান কোচ মার্টিন ফ্রেডরিখ। তিনি বলেন, ‘এই অনুদান পেতে আমাকে অনেক কাগজপত্র পাঠাতে হয়েছে বিশ্ব আরচারি সংস্থায়। শেষ পর্যন্ত ও এই টাকা পাচ্ছে বলে আমি খুব খুশি। তবে এই টাকাটা শুধু ওর পরিবারের জন্যই নয়, নিজের পারফরম্যান্সের উন্নতির জন্যও খরচ করতে হবে।’ সারা বিশ্ব থেকে ১২২ জন তীরন্দাজ এই অনুদান পেতে আবেদন করেন। এর মধ্য থেকে বিশ্ব আরচারি সংস্থার বাছাই কমিটি বেছে নেয় ৩৫ জন তীরন্দাজকে। কমিটি এই ৩৫ জন তীরন্দাজের পরিবারের আর্থিক অবস্থা, গত দুই বছরের আন্তর্জাতিক পারফরম্যান্সও আমলে নিয়েছে। পাশাপাশি এই অনুদান তীরন্দাজরা কীভাবে খরচ করবেন, সেটার একটা পরিকল্পনাও বিশ্ব আরচারি সংস্থাকে জানাতে হয়েছে। অনুদান পাওয়ার খবরটা শুনে বেশ উচ্ছ্বসিত রোমান, ‘আমি কোচের মাধ্যমে এই অনুদানের জন্য আবেদন করেছিলাম। শুনে খুব ভালো লাগছে। তবে আমি এখনো নিশ্চিত নই কত টাকা পাব। বর্তমান পরিস্থিতিতে এই টাকাটা আমার অনেক উপকারে আসবে। আমার অসুস্থ মায়ের ওষুধ কিনতেই প্রতি মাসে খরচ হচ্ছে ৫ হাজার টাকা।’ বাংলাদেশ থেকে শুধু রোমান সানাই পাচ্ছেন এই অর্থ। উপমহাদেশের দেশগুলোর মধ্যে ভারতের দুজন ও শ্রীলঙ্কার এক আর্চার পাচ্ছেন এই অনুদান।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *