একজন মানুষ ইসলাম গ্রহণের পর তার ওপর সর্বপ্রথম যে আমল আবশ্যক তা হলো নামাজ। যা ধনী-গরিব, এতিম-মিসকিন সবাইকে পালন করতে হয়। ইসলামের অন্যান্য ইবাদতের দিকে লক্ষ করলে দেখতে পাই, সব ইবাদত সবার ওপর ফরজ হয় না। কিছু কিছু ইবাদত নির্দিষ্ট কিছু মানুষের ওপর ফরজ হয়। যেমন- হজ-জাকাত। কিন্তু নামাজ তার ব্যতিক্রম। নামাজ সবাইকে আদায় করতে হবে।
রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘কাফের ও মুসলমানের মাঝে অন্যতম পার্থক্য হলো নামাজ আদায় করা বা না করা।’ আল্লাহ তায়ালা মানুষে ওপর প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ বা আবশ্যক করে দিয়েছেন। আর এ নামাজকে যথাসময়ে আদায় করাও আবশ্যক করেছেন। যাদের নামাজ ঠিক আছে তাদের বাকি সব কিছু ঠিক বলে গণ্য হয়। আর যাদের নামাজ ঠিক নেই তাদের কিছুই ঠিক নেই।
<হাদিসে এসেছে, এমন অনেক মানুষ আছে যারা আল্লাহর হুকুম পালনে নামাজ আদায় করে ঠিকই কিন্তু তাদের নামাজ কবুল হয় না। রাসুল (সা.) এমন কয়েক শ্রেণির কথা উল্লেখ করেছেন।
১. আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি গণককে হাত দেখায় তার নামাজ ৪০ দিন পর্যন্ত কবুল হবে না। আর যদি গণকের কথায় বিশ্বাস স্থাপন করে তবে তার ঈমান নষ্ট হয়ে যাবে অর্থাৎ সে কাফের হয়ে যাবে।’ (আত-তারগিব ওয়াত তারহিব : ৪৫৯৮)। অন্য হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি কোনো গণকের কাছে গিয়ে কোনো (ভূত কিংবা ভবিষ্যৎ ভালো-মন্দ বা অদৃশ্য) বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে, তার ৪০ দিনের নামাজ কবুল হয় না।’ (মুসলিম)
২. কোনো মুসলিম যদি মদ পান করে তবে তার ৪০ দিনের নামাজ কবুল হয় না। হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আমার উম্মতের মধ্যে যে ব্যক্তি মদ পান করবে, আল্লাহ ওই ব্যক্তির ৪০ দিনের নামাজ কবুল করবেন না।’ (নাসায়ি : ৫৬৬৪)
৩. নামাজ আদায় করার সময় যারা খুশু-খুজুভাবে আদায় করে না, নামাজের প্রতিটি রোকন তথা রুকু-সেজদা যথাযথ আদায় করে না, তাদের নামাজও হয় না। হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘হে মুসলিমরা! ওই ব্যক্তির নামাজ হয় না, যে ব্যক্তি রুকু ও সেজদায় নিজেদের পিঠ সোজা করে না।’ (মুসনাদে আহমদ, ইবনে মাজা)
৪. যে ব্যক্তি আজান শোনার পর কোনো ওজর ব্যতীত বাড়িতে নামাজ আদায় করে তার নামাজও কবুল হয় না। হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আজান শোনার পরও মসজিদে জামায়াতে এসে নামাজ আদায় করে না, কোনো ওজর না থাকলে ওই ব্যক্তির নামাজও কবুল হয় না।’ (আবু দাউদ)