ইসমাঈল আযহার: [২] ইসলাম কখনো জোর করে কারো ওপর কোনো হুকুম চাপিয়ে দেয় না। ইসলাম ভারসাম্যপূর্ণ ধর্ম। এতে একেবারে শিথিলতাও নেই আবার খুব কড়াকড়ি বা জোর-জবরদস্তিও নেই। কুরআনের ভাষায় যাকে সিরাতে মুস্তাকিম বলা হয়েছে।
[৩] ঈমাণের পর ইসলামে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিধান হলো নামাজ। সমাজের দিকে তাকালে দেখা যায়, অনেকে সামান্য অসুস্থ হলেই চেয়ারে বসে নামাজ আদায় করতে শুরু করেন। আবার অনেকে খুব বেশি অসুস্থ হলেও নামাজে চেয়ার ব্যবহার করেন না। যেসব ব্যক্তিরা চেয়ারে বসে নামাজ আদায় করতে পারবেন না, নি¤েœ উল্লেখ করা হলো।
১) যে ব্যক্তি শরীয়তের দৃষ্টিতে মাযূর নয়, অর্থাৎ কিয়াম (দাঁড়ানো), রুকু-সিজদা করতে সক্ষম, তার জন্য জমিনে বা চেয়ারে বসে নামাজ আদায় করাই জায়েয নয়। অথচ কখনো কখনো দেখা যায়, এ ধরনের সুস্থ ব্যক্তিও সামনে চেয়ার পেয়ে চেয়ারে বসে নামাজ আদায় করে নেয়।
২) শুধু আরামের জন্য অথবা সাধারণ কষ্টের বাহানায় চেয়ারে বসে নামায পড়লে নামাজ আদায় হবে না। এমনকি যমিনে বসে পড়লেও আদায় হবে না।
৩) যার পায়ে বা কোমরে ব্যথা। দাঁড়িয়ে স্বাভাবিক নিয়মে রুকু-সিজদা করে নামাজ পড়লে শরীরে ব্যথা লাগে। কিন্তু তার ব্যথা এ পরিমাণ নয়, যা সহ্যের বাইরে। বরং এ ব্যথা নিয়ে সে কিয়াম ও রুকু-সিজদা করে নামাজ পড়তে পারে। তবে তার জন্যও জমিনে বা চেয়ারে বসে নামাজ পড়ার কোনো সুযোগ নেই।
৪) যে কিছুটা অসুস্থ। কিন্তু তার অসুস্থতা এ পর্যায়ের নয় যে, সে কিয়াম ও রুকু-সিজদা করে নামাজ পড়তে সক্ষমই নয়, বা এভাবে নামাজ পড়লে তার রোগ বেড়ে যাবে কিংবা রোগ নিরাময় হতে বিলম্ব হবে তাও নয়। এমন অল্প অসুস্থতার অজুহাতে চেয়ারে বসে নামাজ পড়লে নামাজআদায় হবে না।
৫) যে ব্যক্তি নামাজে কিয়াম, সিজদা করতে পারে। কিন্তু পা ভাঁজ করে তাশাহহুদের সুরতে বসতে পারে না। তবে সে যেকোনো পদ্ধতিতে জমিনে বসতে পারে এবং সিজদা করতে পারে তার জন্যও চেয়ারে বসে নামাজ পড়া জায়েয নয়। সে যেভাবে সম্ভব মেঝেতে বসে নামাজ আদায় করবে এবং কিয়াম ও রুকুও যথানিয়মে আদায় করবে।
৬) যে ব্যক্তি নামাজে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করতে সক্ষম নয়, কিন্তু মেঝেতে বসে নামাজ আদায় করতে পারে। এমন ব্যক্তি যদি চেয়ারে বসে নামাজ আদায় করতে শুরু করে কিন্তু সে সিজদা এবং তাশাহহুদের জন্য চেয়ার থেকে নেমে বসতে সক্ষম না হয় তাহলে তার জন্য চেয়ারে নামাজ আদায় জায়েয নেই।
৭) যে ব্যক্তি নামাজে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়তে সক্ষম, আবার জমিন বা সমতলে বসতেও পারে এবং সিজদাও করতে পারে, কিন্তু নামাযে দাঁড়ানো অবস্থা থেকে বসতে পারে না, তেমনি বসলে আবার দাঁড়াতে পারে না, তার জন্যও চেয়ারে বসে নামাজ আদায় জায়েয নয়। বরং সে পুরো নামাজ নিচে বসে আদায় করবে, যাতে যথানিয়মে সিজদা করতে পারে; নতুবা তার নামায সহীহ হবে না।