ম্রো ভূমিতে বিনোদন পার্ক নয়

পার্বত্য জেলা বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড়ে পাঁচ তারকা হোটেল ও পর্যটন স্থাপনা নির্মাণ বন্ধে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী ম্রোরা প্রতিবাদ জানিয়েছে, যার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন দেশের বিশিষ্ট নাগরিকরা। তারা ম্রো অধ্যুষিত এলাকায় এ ধরনের প্রকল্প বাতিলসহ পার্বত্য অঞ্চলে ভূমি কমিশন কার্যকর করার দাবি জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবান জেলার চিম্বুক-থানচি সড়কে আদিবাসী ম্রো অধ্যুষিত ৩০২ নং লুলাইং মৌজা ও ৩৫৫ নং সেপ্রু মৌজার ভেতরে কাপ্রু পাড়া, দলা পাড়া ও শোং নাম হুং (তথাকথিত ‘চন্দ্রপাহাড়’) জনপদে সিকদার গ্রুপের বিতর্কিত অঙ্গপ্রতিষ্ঠান আর অ্যান্ড আর হোল্ডিং লিমিটেডের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ‘ম্যারিয়ট হোটেলস অ্যান্ড রিসোর্ট’ (হোটেল ও বিনোদন পার্ক) নামে একটি সুবিস্তৃত পাঁচ তারকা স্থাপনা নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে।

এর প্রতিবাদ জানিয়ে গতকাল বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান দেশের বিশিষ্ট নাগরিকদের পক্ষে একটি বিবৃতি পাঠান। সেখানে বলা হয়, ম্রো জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকা, প্রাকৃতিক সম্পদে প্রথাগত অভিগম্যতা, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও নিরাপত্তা দাবির প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছি।

সিকদার গ্রুপের পাঁচ তারকা হোটেল ম্যারিয়টের নির্মাণকাজ বন্ধের দাবিতে ৮ নভেম্বর ম্রো জনগোষ্ঠী এক কালচারাল শোডাউন করে। তারা পাঁচদিনের মধ্যে নির্মাণকাজ বন্ধের দাবি জানিয়েছিলেন। তাদের সমর্থন জানিয়ে বিবৃতিদাতারা বলেন, এ স্থাপনা নির্মাণের কারণে ম্রো সম্প্রদায়ের ১০ হাজার নাগরিক তাদের ভিটেমাটি, আবাসস্থল এবং জুম ফসলি জমির ওপর আগ্রাসন হিসেবে দেখছে। চিটাগং হিল ট্র্যাকস কমিশনও এ প্রকল্প নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে।

বিবৃতি দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল, অর্থনীতিবিদ হোসেন জিল্লুর রহমান, নিজেরা করির সমন্বয়কারী খুশী কবির, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, চাকমা রাজা দেবাশীষ রায়, গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী, সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, সিপিডির সম্মানিত ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য ও মোস্তাফিজুর রহমান, অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, সেন্ট্রাল উইমেন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পারভীন হাসান, অর্থনীতিবিদ এমএম আকাশ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, গীতি আরা নাসরিন, নারী অধিকারকর্মী হামিদা হোসেন, আইনজীবী শাহদীন মালিক, সারা হোসেন, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নূর খান, লেখক ও গবেষক মহিউদ্দিন আহমেদ, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের শাহীন আনাম, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সঞ্জীব দ্রং প্রমুখ।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *