মর্মান্তিক, অমানবিক: এক এম্বুলেন্সে ২২ লাশ

মর্মান্তিক এক দৃশ্য। দেখলে মানবাত্মা কেঁদে ওঠে। চোখে অশ্রু চলে আসে। এমন ভয়াবহতা, অমানবিকতাও কি সম্ভব? ভারতের মহারাষ্ট্রে একটি এম্বুলেন্সের ছবি দেখে কেঁদে উঠতে পারে আপনার হৃদয়ও। করোনায় মারা যাওয়া ব্যক্তিদের শেষ পরিণতি এত নিষ্ঠুর হতে পারে! তারা কি একটুও সম্মান, ভালবাসা পাওয়ার যোগ্য নন! মহারাষ্ট্রে একটি হাসপাতালের মর্গের বাইরে রাখা এই এম্বুলেন্স। তা দেখে কেন আপনার মন কেঁদে উঠবে! হ্যাঁ, এ জন্যই যে- এই একটি এম্বুলেন্সের ভিতর আটার বস্তার বন্দি করে একে একে ২২টি মৃতদেহ ফেলে রাখা হয়েছে। একটির ওপর আরেকটি। একটি লাশের মাথার দিকটা একটি আসনের ওপরে।
শরীরের বাকি অংশ এম্বুলেন্সের ভিতরেই নিচে পড়ে আছে। এম্বুলেন্সে করে এসব লাশ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে কোনো শ্মশানে। না, কোনো আত্মীয়-স্বজন নেই পাশে। তারা যখন এ দৃশ্য দেখবেন, একবার ভাবুনতো তাদের মানসিক অবস্থা কি দাঁড়াবে! এমনিতেই স্বজন হারানোর বেদনায় তারা মুষড়ে পড়েছেন, তার ওপর নিহত প্রিয়জনের মৃতদেহের সঙ্গে এমন অসম্মান কি করে মেনে নেবেন তারা! এ ঘটনা ঘটেছে মহারাষ্ট্রের বিড জেলার অম্বেজোগাইয়ে। সেখানকার স্বামী রামানন্দ তীর্থ মরাঠাওয়াড়া সরকারি মেডিকেলল কলেজের ঘটনা এটি। এ নিয়ে এবিপি টেলিভিশন চ্যানেল সচিত্র রিপোর্ট প্রচার করেছে। তাতে বলা হয়েছে স্থানীয় সূত্র বলেছে, মৃতদেহ এভাবে তোলার সময় সেখানে উপস্থিত ছিল পুলিশ। তারা এভাবে মৃতদেহ একটির ওপর আরেকটি এলোপাতাড়ি করে রাখতে বাধা দেয়নি। অভিযোগ আছে, মৃত রোগীর আত্মীয়রা এম্বুল্যান্সের এ দৃশ্যের ছবি তুলতে গেলে তাদের মোবাইল কেড়ে নেয়া হয়। দেহগুলো দাহ করার পর তাদের মোবাইল ফোন ফেরত দেয়া হয়েছে।

ওদিকে আনন্দবাজার পত্রিকা লিখেছে, ঘটনার কথা ছড়িয়ে পড়তেই নড়েচড়ে বসেছে সেখানকার প্রশাসন। ঘটনা নিয়ে বিড জেলার জেলা প্রশাসক রবীন্দ্র জগতপ এক সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, অম্বেজোগাইয়ের অতিরিক্ত জেলাশাসককে ঘটনা নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদি কারও দোষ থাকে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ওই হাসপাতালের ডিন শিবাজি সুকরে বলেছেন, সৎকার করতে দেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য মাত্র দু’টি এম্বুল্যান্স রয়েছে। আমরা আরও এম্বুল্যান্সের দাবি জানিয়েছি। কেউ মারা গেলে স্থানীয় প্রশাসনের হাতে দেহ তুলে দেয়া অবধি আমাদের দায়িত্ব। তারা কীভাবে তা নিয়ে যাবে, তা আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *