বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণের সুদহার বাড়াল বাংলাদেশ ব্যাংক

বৈদেশিক মুদ্রায় স্বল্পমেয়াদি বাণিজ্যিক ঋণের সুদহার ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বিশ্বের আর্থিক বাজারে উচ্চ সুদহারের বর্তমান প্রবণতার কথা উল্লেখ করে ব্যাংকারদের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ সিদ্ধান্তের কথা জানায়। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বৈদেশিক ঋণের বার্ষিক সব সুদহার সীমা সংশোধন করা হয়েছে। 

Unibots.in

এখন থেকে সোফর (দ্য সিকিউরড ওভারনাইট ফিন্যান্সিং রেট), ইউরিবর (ইউরো ইন্টারব্যাংক অফার্ড রেট), ইত্যাদি সুদহারের সঙ্গে ৪ শতাংশ পর্যন্ত মার্কআপ বা মার্জিন যুক্ত করে গ্রাহককে ঋণ দিতে পারবে। যা আগে ৩ দশমিক ৫ শতাংশ যুক্ত হতো। মার্কআপ বাড়ানোর ফলে বাণিজ্য অর্থায়নে দেশের আমদানিকারকদের বৈদেশিক মুদ্রার ঋণের খরচ কিছুটা বাড়বে। 

তবে ব্যাংকাররা বলছেন, এর ফলে স্থানীয় ব্যাংক বিদেশ থেকে আগের চেয়ে বেশি সুদ দিয়ে তহবিল আনতে পারবে, গ্রাহকদের বৈদেশিক মুদ্রার জোগান দিতে পারবে। ব্যাংকগুলো এখন থেকে সোফরের সঙ্গে আরো ৪ শতাংশ সুদ যোগ করে মোট ৯ দশমিক ৩ শতাংশ হারে গ্রাহকদের ঋণ দিতে পারবে। ছয় মাসের গড় সোফর রেট অনুযায়ী এই হিসাব করা হয়েছে, যা বৃহস্পতিবার ছিল ৫ দশমিক ৩৮ শতাংশ। উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক আর্থিক বাজারের স্বল্পমেয়াদি ঋণের সুদ নির্ধারণের বেঞ্চমার্ক হচ্ছে সোফর সুদহার। 

বাংলাদেশ ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাণিজ্য সহায়ক এই নীতির ফলে এখন দেশে ডলারের প্রবাহ বাড়বে। কারণ বিদেশ থেকে এখন আরো বেশি ফান্ড নিতে পারবে ব্যাংকগুলো। এ কারণেই সুদহার বাড়ানো হয়েছে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে সুদহার বৃদ্ধি এবং ঋণমান যাচাইকারী সংস্থাগুলোর বাংলাদেশের ঋণঝুঁকি অবনমনের কারণে বিদেশি ঋণদাতারা ঋণ দিতে তেমন আগ্রহী হচ্ছে না। এই অবস্থায়, ব্যাংকাররা বৈদেশিক মুদ্রায় স্বল্পমেয়াদি বাণিজ্যিক ঋণ দেওয়ার সীমা বাড়ানো প্রয়োজন। 

বিভিন্ন ব্যাংকের ট্রেজারি কর্মকর্তাদের মতে, বাংলাদেশের ব্যাংকগুলো বিদেশি ঋণদাতাদের কাছ থেকে বাণিজ্য অর্থায়ন হিসেবে বছরে ৩ থেকে ৪ বিলিয়ন ডলার পায়, যা অফশোর ফাইন্যান্স নামেও পরিচিত। এদিকে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এক সপ্তাহের ব্যবধানে ৮৩ মিলিয়ন ডলার কমে বৃহস্পতিবার ১৯ দশমিক ৯৪ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে। আইএমএফ নির্দেশিত বিপিএম-৬ পদ্ধতিতে এই হিসাব করা হয়েছে। দেশে ডলারের প্রবাহ বৃদ্ধি না পেলে রিজার্ভে চাপ থাকবে। 

বিশ্লেষকরা বলছেন, রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স কমে যাওয়ার কারণে ডলার-সংকট তৈরি হয়েছে। এই সমস্যা সমাধান করতে হলে রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *