বিশ্বকে বদলে দেয়া উদ্যোগ অ্যামাজন…

২৬ বছর আগে গৃহীত ছোট একটি উদ্যোগ বিশ্বকে বদলে দিয়েছে। ১৯৯৪ সালের ৫ জুলাই জেফ্রি বেজোস (জেফ বেজোস) নামে এক ব্যক্তি ‘অ্যামাজন’ নামে একটি কোম্পানি নিবন্ধন করেছিলেন, যা এরই মধ্যে মানুষের খরচের ধরন এবং ভোক্তাদের পণ্য কেনার আচরণে আমূল পরিবর্তন এনেছে। এ পর্যন্ত আসতে জেফ বেজোস ও অ্যামাজনকে অনেক চড়াই-উতরাই পেরোতে হয়েছে। অ্যামাজনের কল্যাণে বেজোস এখন বিশ্বের শীর্ষ ধনী ব্যক্তি এবং অ্যামাজন ব্যক্তি খাতের অন্যতম দামি ও বৃহৎ কোম্পানি। বেজোস ও অ্যামাজনের ২০টি অজানা তথ্য নিয়ে আয়োজনের আজ প্রথম পর্ব—

‘অ্যামাজন’ নামটি অনভিপ্রেত ছিল: বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বড় খুচরা পণ্য বিক্রেতা অ্যামাজন, কিন্তু এর কোনো দোকান নেই। উদ্যোগের নাম ‘অ্যামাজন’ দেয়ার পরিকল্পনা ছিল না জেফ বেজোসের। তিনি জাদুকরী শব্দ অ্যাব্রাক্যাডাব্রার সঙ্গে মিল রেখে উদ্যোগের নাম ‘ক্যাডাব্রা’ রাখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ক্যাডাব্রার উচ্চারণ ক্যাডাভার (মরদেহ) শব্দের সঙ্গে মিল থাকায় নামটি এড়িয়ে যাওয়ার জন্য বেজোসকে রাজি করাতে পেরেছিলেন তার আইনজীবী।

দ্বিতীয় নির্ধারিত নামটিও অ্যামাজন ছিল না: জেফ বেজোস তার উদ্যোগের জন্য দ্বিতীয় যে নাম দিতে চেয়েছিলেন, সেটিও অ্যামাজন ছিল না। ক্যাডাব্রা বাদ দেয়ার পর উদ্যোগের নাম ‘রিলেন্টলেস’ দিতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এ নামটিও কোনো কারণে বাদ পড়ে।

লোগোতে ‘এ’ ও ‘জি’ ব্যবহারের কারণ: অ্যামাজনের লোগো দেখতে স্মাইলির মতো। এর মাধ্যমে কার্যক্রম সম্পর্কে বিস্তারিত বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে। অর্থাৎ ‘আমরা পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তে, সব ধরনের জিনিসপত্র সরবরাহ করতে পেরে খুশি’। পরবর্তী সময়ে অ্যামাজন জানায়, ভোক্তা চাহিদা অনুযায়ী সব ধরনের পণ্য সরবরাহই অ্যামাজনের প্রধান লক্ষ্য। অর্থাৎ আমরা এ টু জি সর্বত্রই আছি।

প্রকৌশলী নিয়োগে ডেটিং অ্যাপ ব্যবহার: ২০১৭ সালে অ্যামাজন ওয়েব সার্ভিসেসের প্রকৌশলী নিয়োগের জন্য ডেটিং অ্যাপ টিন্ডার ব্যবহার করেছিল অ্যামাজন। টিন্ডারে দেয়া বিজ্ঞাপনে বলা হয়েছিল, আপনি যদি অ্যামাজনের ক্লাউড সেবা বিভাগে কাজ করতে আগ্রহী হয়ে থাকেন, তাহলে ডান দিকে সোয়াইপ করুন।

অ্যাপল প্রতি মাসে অ্যামাজনকে ৩ কোটি ডলার পরিশোধ করে: অ্যামাজন ওয়েব সার্ভিসের সেবা ব্যবহারের জন্য প্রযুক্তি কোম্পানি অ্যাপল প্রতি মাসে অ্যামাজনকে ৩ কোটি ডলার পরিশোধ করে আসছে। অ্যাপলের দাবি, বিশ্বব্যাপী শতকোটি আইফোন ডিভাইস ব্যবহার হচ্ছে। এ বিপুলসংখ্যক আইফোন ব্যবহারকারী প্রতিনিয়ত অসংখ্য তথ্য উৎপাদন করছে, যা সংরক্ষণে অ্যামাজন ওয়েব সার্ভিস ব্যবহার করছে অ্যাপল।

অ্যামাজনে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন নিষিদ্ধ: ২০০৪ সালে কর্মীদের বিভিন্ন বিষয়ে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন দেয়া আনুষ্ঠানিকভাবে নিষিদ্ধ করে অ্যামাজন। এর পরিবর্তে কর্মীদের চার থেকে ছয় পেজের মধ্যে নতুন আইডিয়া বিষয়ে লেখার পরামর্শ দেয়া হয়।

পে টু কুইট প্রোগ্রাম: কর্মীদের জন্য ‘পে টু কুইট’ অফার চালু আছে অ্যামাজনে। অর্থাৎ কোনো কর্মী স্বেচ্ছায় অ্যামাজন ছাড়তে চাইলে তাকে ৫ হাজার ডলার পরিশোধ করে প্রতিষ্ঠানটি। কর্মীরা অ্যামাজনকে কতটা ভালোবাসে সেটা যাচাই করার জন্য এ প্রোগ্রাম। কোনো কর্মী এ প্রোগ্রামের আওতায় অ্যামাজন ছাড়লে তিনি স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠানটিতে কাজের সুযোগ হারান।

অ্যামাজনে রোবটের আধিপত্য: বিশ্বব্যাপী অ্যামাজনের ওয়্যারহাউজগুলোতে ৪৫ হাজারের বেশি রোবট কাজ করছে। পণ্য সরবরাহ কার্যক্রম আরো উন্নত ও সহজ করতে ক্রমান্বয়ে রোবটের সংখ্যা বাড়াচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।

বই ছিল প্রথম বিক্রীত পণ্য: অ্যামাজনের কার্যক্রম শুরুই হয়েছিল ইন্টারনেটভিত্তিক বই কেনাবেচার ওয়েবসাইট হিসেবে। ১৯৯৫ সালের ৩ এপ্রিল ‘ফ্লুইড কনসেপ্টস অ্যান্ড ক্রিয়েটিভ অ্যানালজিস’ নামে প্রথম বই বিক্রি করে অ্যামাজন। যদিও অ্যামাজন ডটকম এখন সব ধরনের পণ্য বিক্রি করছে। বিশ্বব্যাপী পণ্য ক্রয়ের সুবিধা দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *