বিলিয়নেয়ার ক্লাবে অ্যাপল প্রধান টিম কুক

নয় বছর আগে অ্যাপল প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবসের কাছ থেকে দায়িত্ব নিয়েছিলেন টিম কুক। এর কিছুদিন পরই স্টিভ জবস যখন মারা যান, তখন কোম্পানিটির বাজারমূল্য ছিল ৩৫ হাজার কোটি ডলার। কিন্তু টিম কুকের হাত ধরে এখন অ্যাপলের বাজারমূল্য দ্রুত ফুলেফেঁপে উঠেছে। একই সঙ্গে বৃদ্ধি পেয়েছে কুকের সম্পত্তিও। গত সপ্তাহেই অ্যাপলের শেয়ারমূল্য ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্য দিয়ে অ্যাপলের বাজারমূল্য প্রায় ২ ট্রিলিয়ন বা ২ লাখ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। আর টেক জায়ান্ট নির্বাহীদের মধ্যে বিলিয়নেয়ার ক্লাবে নাম লেখালেন কুক। ব্লুমবার্গের বিলিয়নেয়ার ইনডেক্স জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। খবর ব্লুমবার্গ ও বিবিসি।

অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) টিম কুকের সরাসরি মালিকানায় রয়েছে ৮ লাখ ৪৭ হাজার ৯৬৯টি শেয়ার, যা থেকে পে প্যাকেজের অংশ হিসেবে গত বছর কুকের আয় হয়েছিল সাড়ে ১২ কোটি ডলার বা ৯ কোটি ৬০ লাখ ইউরো। মূলত শেয়ার থেকে আয় এবং সিইও হিসেবে অ্যাপল থেকে প্রাপ্ত অর্থ কুককে বিলিয়নেয়ার ক্লাবে নিয়ে যেতে সহায়তা করেছে।

নভেল করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তিপণ্য এবং অনলাইনের ওপর মানুষ আগের তুলনায় বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে, যা আগামীতে আরো বৃদ্ধির সম্ভাবনা দেখছে টেক জায়ান্টরা। ফলে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ারের মূল্য লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে শুরু করেছে। আর এতেই প্রযুক্তি জায়ান্টগুলোর ব্যবসায় বড় প্রবৃদ্ধি হতে শুরু করেছে। ফলে অ্যাপল, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও অ্যামাজনের মতো জায়ান্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর মুনাফা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। করোনার আশীর্বাদে গত সপ্তাহে ফেসবুক প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গের ব্যক্তিগত সম্পত্তির পরিমাণ ১০০ বিলিয়ন ডলার বা ৭৬ বিলিয়ন ইউরোয় পৌঁছায়।

করোনার কারণে সিলিয়ন ভ্যালির টেক জায়ান্ট অ্যাপল প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে প্রথমবারের মতো ২ ট্রিলিয়ন ডলার বাজার মূলধনের রেকর্ড গড়তে যাচ্ছে। এর আগে গত বছরও প্রথম কোম্পানি হিসেবে অ্যাপল ১ ট্রিলিয়ন ডলারের ক্লাবে নাম লেখাতে সক্ষম হয়।

তবে অ্যামাজন প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস, ফেসবুকের মার্ক জাকারবার্গ ও টেসলার ইলোন মাস্কের তুলনায় টিম কুকের শেয়ারের পরিমাণ খুবই নগণ্য। এসব কোম্পানিতে তাদের বড় একটি অংশের মালিকানা থাকলেও অ্যাপলের মাত্র দশমিক শূন্য ২ শতাংশ অংশীদারিত্ব রয়েছে টিম কুকের।

অন্যদিকে আয়ের দিক থেকে শীর্ষদের তালিকায় থাকার কারণে ইউএস ফেডারেল ও ক্যালিফোর্নিয়ার আইন অনুযায়ী, প্রায় ৫০ শতাংশের বেশি আয়কর দিতে হবে টিম কুককে। এর বাইরে তাকে দাতব্য কাজে অনুদান হিসেবে ব্যয় করতে হবে একটি বড় অংশ। কারণ ২০১৫ সালে তিনি জানান, তার আয়ের একটি বড় অংশ তিনি অনুদান হিসেবে ব্যয় করবেন এবং এরই মধ্যে তিনি অ্যাপলের শেয়ার থেকে প্রাপ্ত লভ্যাংশ অনুদান হিসেবে ব্যয়ও করেছেন।

অ্যাপল এখন পর্যন্ত আইফোন ব্যতীত তেমন কোনো যুগান্তকারী নতুন পণ্য বাজারে নিয়ে আসেনি। এর পরও টিম কুকের কাঁধে ভর করে অ্যাপল নিজেদের সমৃদ্ধ অবস্থানে ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *