বিদেশী বিনিয়োগ টানতে দেড় লাখ কোটি রুপির প্রণোদনা

বৈশ্বিক ম্যানুফ্যাকচারারদের ভারতে বিনিয়োগে আকৃষ্ট করতে ১ লাখ ৪৬ হাজার কোটি রুপির (২ হাজার কোটি ডলার) প্রণোদনা কর্মসূচির অনুমোদন দিয়েছে দেশটির সরকার। যেসব কোম্পানি ভারতের ১০টি শিল্প খাতে ম্যানুফ্যাকচারিং কারখানা স্থাপন করবে, কেবল তারাই এই প্রণোদনা কর্মসূচির সুবিধাভোগী হবে। গতকাল মন্ত্রিসভা কমিটির এক বৈঠক শেষে ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ এ কথা জানান। খবর ব্লুমবার্গ।

কর্মসূচির আওতায় থাকা শিল্প খাতগুলোর মধ্যে রয়েছে অটোমোবাইল, সৌর প্যানেল, স্পেশাল্টি-স্টিল মেকিং, টেক্সটাইল ইউনিট, খাদ্য প্রক্রিয়াজাত, বিশেষায়িত ওষুধপণ্য উৎপাদন। মোট ১০টি খাতে পাঁচ বছর মেয়াদে এ প্রণোদনা সুবিধা দেয়া হবে।

নির্মলা সীতারমণ বলেন, ‘এটি এমন একটি পদক্ষেপ, যা ভারতের ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে দ্রুত প্রাণসঞ্চার করবে। এ কর্মসূচি ভারতকে বৈশ্বিক ম্যানুফ্যাকচারিং হাব হিসেবে আত্মপ্রকাশেও সহায়তা করবে।’

ভারতের নীতিগত পরিকল্পনা প্রণয়নকারী সংস্থা নীতি আয়োগ এ কর্মসূচির প্রস্তাবনা তৈরি করেছে। চলতি বছরের শুরুতে চীন থেকে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে ভারতমুখী করতে যে কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছিল, তারই আদলে এবারের পরিকল্পনা সাজানো হয়েছে। ওই কর্মসূচির আওতায় স্যামসাং ইলেকট্রনিকস, ফক্সকনসহ প্রায় দুই ডজন কোম্পানি ভারতে মোবাইল ফোন তৈরির কারখানা স্থাপনে ১৫০ কোটি ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

কভিড-১৯ মহামারীতে বিপর্যস্ত অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বরাবরই বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করে আসছেন। মহামারীর কারণে অর্থনৈতিক কার্যক্রম বিঘ্নিত হওয়ায় চলতি অর্থবছরে নিজেদের ইতিহাসে সবচেয়ে বাজে সংকোচন দেখার আশঙ্কায় রয়েছে ভারত। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য মোদি প্রশাসন বিভিন্ন উদ্যোগ হাতে নিয়েছে। এরই মধ্যে তারা করপোরেট কর এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সর্বনিম্নে নামিয়ে এনেছে। দেশটিতে প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগের শর্তগুলোও শিথিল করা হয়েছে, যেন সেখানে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের ব্যবসা স্থাপনের প্রক্রিয়া আরো সহজ হয়।

অর্থনীতিকে আত্মনির্ভরশীল করতে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি দেশটির জিডিপিতে ম্যানুফ্যাকচারিং খাতের অবদান ২৫ শতাংশে উন্নীত করতে চাইছেন। বর্তমানে ভারতের জিডিপিতে এ খাতের অবদান ১৬ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি অবদান রয়েছে সেবা খাতের—প্রায় ৫৫ শতাংশ।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *