ফেনীর পরশুরামে মা-বাবার উপরে অভিমান করে ঘর ছেড়ে পালানো এক কিশোরীকে (১৪) ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলার আসামি সফিকুর রহমান সফিককে (৩৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার মধ্যরাতে উপজেলার মোহাম্মদপুর গ্রামের উত্তর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার সফিকুর রহমান সফিক ওই গ্রামের মো. নুর নবী ছেলে বলে জানিয়েছেন পরশুরাম থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আশরাফ হোসেন।
নির্যাতিতা কিশোরীর বাবা জানায়, পরশুরাম উপজেলার দক্ষিণ কেতরাঙ্গা গ্রামের স্থানীয় একটি নুরানী মাদ্রাসার শিক্ষার্থীকে গত ৭ই মার্চ সন্ধ্যায় বাবা-মা বকাঝকা করে। এর কিছুক্ষণ পর সবার অগচরে কিশোরী বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। পরে রাতভর খোঁজাখুঁজি করেও কিশোরীকে না পেয়ে পরদিন সকালে আশপাশের এলাকায় খোঁজ করে বাবা। ওই দিন (গত ৮ মার্চ) দুপুরে স্থানীয়রা উপজেলার উত্তর তালবাড়ীয়া গ্রামের সিধল চৌধুরীর পুকুর পাড় সংলগ্ন কালি মন্দিরের পাশ থেকে কিশোরীকে উদ্ধার করে।
এসময় কিশোরী তার বাবাকে জানায়, রাতে সে উত্তর তালবাড়ীয়া গ্রামে গেলে সফিকুর রহমান সফিক ফুঁসলিয়ে তাকে মন্দিরের পাশে নির্জন স্থানে নিয়ে ধর্ষণ করে। ভয়ে কিশোরী সারারাত ওই স্থানে বসে ছিলো।
বিষয়টি জানার পর বাবা থানায় অবগত করতে চাইলে অভিযুক্ত সফিকুর রহমানের বাবা মো. নুর নবী ১০ হাজার টাকা দিয়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। কিশোরীর বাবা টাকা নিতে অপারগতা প্রকাশ করলে স্থানীয়ভাবে নুর নবী ফের চাপ প্রয়োগ করে। পরে তিনি ও তার মেয়ে পালিয়ে ফেনী শহরের এক আত্মীয়ের বাড়িতে আত্মগোপন করে।
পরশুরাম থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আশরাফ হোসেন জানায়, স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ নির্যাতিতা কিশোরী ও তার বাবাকে শুক্রবার সন্ধ্যায় ফেনী শহরের একটি বাসা থেকে উদ্ধার করে। রাতে কিশোরী ও তার বাবাকে পরশুরাম থানায় নিয়ে গেলে কিশোরীর বাবা বাদি হয়ে অভিযুক্ত সফিকুর রহমান সফিককে আসামি করে মামলা দায়ের করে।
এসআই আশরাফ হোসেন আরো জানায়, পুলিশ রাতে অভিযান চালিয়ে আসামি সফিকুর রহমান সফিককে গ্রেপ্তার করেছে। নির্যাতিত কিশোরীর শারীরিক পরীক্ষার জন্য শনিবার সকালে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হবে। পরবর্তীতে ২২ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণ করার জন্য কিশোরীকে আদালতে নেয়া হবে। একই সাথে আসামীকে শনিবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।