প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাস্তুহারা হবে ১ কোটি ৮০ লাখ মানুষ

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জলবায়ু পরিবর্তনসহ বিভিন্ন কারণে অচিরেই ১ কোটি ৮০ লাখ মানুষ বাস্তুহারা হবে এবং ২০৪১ সালে সেটি ২ কোটি ১৩ লাখে গিয়ে দাঁড়াবে। অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ পরিচালিত জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অভিবাসন সংক্রান্ত এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ আয়োজিত ‘অ্যাড্রেসিং ক্লাইমেট চেঞ্জ ইনডিউসড মাইগ্রেশন ইন বাংলাদেশ: টেকিং হিউমেন রাইটস বেজ অ্যাপ্রোচ’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে এ তথ্য জানানো হয়।

ওয়েবিনারে গবেষণায় প্রাপ্ত বিভিন্ন তথ্য উপস্থাপন করেন অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের অফিসার আনহারা রব্বানী ও মারিয়া আক্তার। তারা জানান, নারী ও পুরুষের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বৈচিত্র্যপূর্ণ দক্ষতার অভাব রয়েছে। পাশাপাশি স্থানীয় সরকার পর্যায়ে অভিবাসনে বাধ্য পরিবারগুলোকে সহায়তার জন্য কোনো পদ্ধতি বা ইনফরেমশন সিস্টেম গড়ে ওঠেনি বলেও গবেষণায় উঠে এসেছে। অভিবাসী মানুষদের মধ্যে সব সময় উচ্ছেদ হওয়ার ভয় তাড়া করে বলে জানা যায় গবেষণায়।

এ সমস্যা উত্তরণে ন্যাশনাল স্ট্র্যাটেজি প্ল্যান বাস্তবায়ন, অষ্টম পঞ্চবার্ষিকের সঙ্গে ডেল্টা প্ল্যানের সমন্বয়, জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলগুলোয় নারী ও যুবকদের দক্ষতা বিকাশে ব্যবস্থা গ্রহণ, ডিজিটাল রিস্ক ও রেজিলিয়েন্স ইনডেক্স প্রতিষ্ঠা, অভিবাসী কর্মীদের জন্য দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন সময়ে জীবিকার সুযোগের ওপর একটি তথ্য কেন্দ্র স্থাপন করাসহ কয়েকটি প্রস্তাবনা দেয়া হয়।

অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির বলেন, ‘বিভিন্ন দুর্যোগ অনেক মানুষকে অভিবাসন গ্রহণ করতে বাধ্য করে। জলবায়ু উদ্বাস্তুদের মধ্যে যখন খাসজমি বিতরণ করা হয়, তখন নারীদের বিষয়টি অগ্রাধিকার দিতে হবে। পলিসি নির্ধারণের ক্ষেত্রে নারী ও তরুণসহ বিভিন্ন মহলের অংশগ্রহণের সুযোগ থাকতে হবে এবং সর্বোপরি সাধারণ জনগণের অভিমত শুনতে হবে।

জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিবাসনকে একটি পুশ ফ্যাক্টর উল্লেখ করে সেন্টার ফর পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (সিপিআরডি) চিফ এক্সিকিউটিভ সামসুদ্দোহা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত শহরমুখী অভিবাসীরা মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। শহরাঞ্চল এসব জলবায়ু উদ্বাস্তু মানুষের জন্য অনুকূলে নেই। যারা অভিবাস নিয়ে শহরমুখী হচ্ছেন তাদের জন্য উপযুক্ত কর্মসংস্থানের অভাব রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিবাসন নিয়ে বিশেষায়িত ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার আহ্বানও জানান তিনি।

ওয়েবিনারে আরো বক্তব্য রাখেন ব্র্যাক-কেএফডব্লিউ ক্লাইমেট ব্রিজ ফান্ড সেক্রেটারিয়েটের প্রধান ড. এমডি গোলাম রব্বানী, ইন্টারন্যাশন্যাল সেন্টার ফর মাইগ্রেশন পলিসি ডেভেলপমেন্টের কান্ট্রি কো-অর্ডিনেটর ইকরাম হোসেন।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *