প্রবৃদ্ধির নেশায় সরকার বাজেটে স্বাস্থ্য, কৃষি, সামাজিক সুরক্ষা, কর্মসংস্থান ও শিক্ষাসহ জনস্বার্থের সব খাত চরমভাবে উপেক্ষিত: বাম গণতান্ত্রিক জোট

সমীরণ রায়: [২] প্রস্তাবিত বাজেটকে প্রত্যাখ্যান করে বাম গণতান্ত্রিক জোট এক প্রতিক্রিয়ায় নেতারা বলেন, করোনাএই সংকটে সরকারি ও বিরোধী দলসমূহ, সুশীল সমাজসহ সর্বস্তরের মানুষ এতদিন যে আলোচনা করে আসছিল, দেশের মানুষ আশা করেছিল সরকার আগামী বাজেট প্রণয়নে ও বরাদ্দে অতীতের গতানুগতিকতা থেকে বেরিয়ে উৎপাদনশীল ও জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট খাতে মনযোগ দেবেন। কিন্ত বাজেটে তার কোনো প্রতিফলনই দেখা গেল না। বাজেট বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় চলতি বছরের সংশোধিত বাজেটে ২২ হাজার ৬২৭ কোটি টাকা কমেছে। অর্থ্যাৎ সরকারের আয় কমেছে।

[৩] তারা বলেন, বিনা ভোটে ও জবরদস্তিমূলক ভাবে ক্ষমতায় থাকা সরকার অতীতের ধারাবাহিকতায় সম্পূর্ণ আমলাতন্ত্রিক পদ্ধতিতে বাজেট প্রণয়ন করেছে। যেখানে জনস্বার্থকে অগ্রাধিকার না দিয়ে লুটেরা ধনিক, কালো টাকার মালিক, সামরিক-বেসামরিক আমলাদের স্বার্থকেই প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। খাতওয়ারি বাজেট বিশ্লেষণ করলে তার সুস্পষ্ট প্রতিফলন দেখা যায়। এ ছাড়া সরকারকে যেন তথাকথিত প্রবৃদ্ধির অন্ধ মোহে পেয়ে বসেছে।

[৪] তারা আরও বলেন, করোনা সংকটে দেশের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ, বুদ্ধিজীবী, অর্থনীতিবিদ, জনস্বাস্থ্যবিদ, কৃষি অর্থনীতিবিদ, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সাংবাদিকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের প্রত্যাশা ছিল এবারের বাজেটে স্বাস্থ্য, কৃষি, সামাজিক সুরক্ষা, খাদ্য নিরাপত্তা, কর্মসংস্থান, শিক্ষা ও গবেষণাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হবে। কিন্ত এবারের বাজেটে তা হয়নি।

[৫] তারা বলেন, দেশে করোনা সংকটের কারণে বিনা চিকিৎসায় মানুষ মারা যাচ্ছে, হাসপাতালে সিট নেই, ডাক্তার-নার্সসহ স্বাস্থ্য কর্মীর চরম সংকট, পর্যাপ্ত করোনা পরীক্ষা নেই, লাখ লাখ প্রবাসী শ্রমিক দেশে ফিরছে, বিভিন্ন গবেষণা জরিপে দেখা যাচ্ছে ৩৫ ভাগ পরিবারের কমপক্ষে ১ জন চাকুরি হারিয়েছে। সবজি, মাছ, দুধ, মুরগি, ফলসহ কৃষক ফসলের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না, খামারীরা রাস্তায় দুধ-ডিম-মুরগী ফেলে দিচ্ছে। শিক্ষক, স্বাস্থ্য কর্মী, শ্রমিকেরা বেতন ও মজুরির দাবিতে আন্দোলন করছে। বাজেট প্রস্তাবনায় এই মানুষদের দিকেই তো বেশী নজর দেয়া দরকার ছিল।

[৬] শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রতিক্রিয়ায় এই অভিমত ব্যক্ত করেন বাম গণতান্ত্রিক জোট কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সমন্বয়ক ও বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বজলুর রশীদ ফিরোজ, সিপিবি সভাপতি মুজাদিুল ইসলাম সেলিম, সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম, বাসদ এর সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাসদ (মার্কসবাদী)’র সাধারণ সম্পাদক মুবিনুল হায়দার চৌধুরী, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জুনায়েদ সাকী প্রমুখ।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *