পোস্টমর্টেম ছাড়াই ঢাকায় ইন্দোনেশিয়া দূতাবাস কর্মকর্তার দাফন

করোনা টেস্টের রিপোর্ট নেগেটিভ। সেইসঙ্গে মৃত্যুটিকে ঘিরে কোনো সন্দেহ বা প্রশ্ন না ওঠায় পোস্টমর্টেম ছাড়াই দাফন সম্পন্ন হয়েছে ঢাকায় মারা যাওয়া ইন্দোনেশিয়া দূতাবাস কর্মকর্তার। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে শুক্রবার (৫ই জুন) সন্ধ্যায় বনানীস্থ বেসামরিক কবরস্থানে সমাহিত হয়েছেন  দূতাবাসের প্রশাসনিক কর্মকর্তা সিটি হারওয়ানস্‌ইয়া। ইন্দোনেশিয়া মিশনের রিপোর্টের বরাতে সেগুনবাগিচার দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা সকালে মানবজমিনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। বলেন, সাধারণত কোনো বিদেশি মারা গেলে মৃত্যুর রহস্য উন্মোচনে লাশ পোস্টমর্টেম হয়। অস্বাভাবিক মৃত্যু হলে তো বটেই, স্বাভাবিক অবস্থায়ও এটা হয়। ফ্লাইটে মরদেহ বহনে সুরতহাল রিপোর্ট প্রদর্শন বাধ্যতামূলক। করোনার এই কঠিন সময়ে ঢাকায় মারা যাওয়া প্রথম কোনো বিদেশি, ইন্দোনেশিয়া মিশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা সিটি হারওয়ানস্‌ইয়ার মৃত্যুর কারণ কোভিড-১৯ কি-না? তা নিশ্চিত হতে তাৎক্ষণিক তার স্যাম্পল ল্যাবে পাঠানো হয়। অবিশ্বাস্য দ্রুততায় সেই রিপোর্ট আসে। রিপোর্ট নিশ্চিত করে যে, হারওয়ানস্‌ইয়ার মৃত্যু করোনায় হয়নি। দ্বিতীয়ত লাশ পরিবহনের প্রশ্ন। দূতাবাস জানায় জাকার্তা নয়, ঢাকাতেই তারা তাদের কর্মীকে দাফন করতে চায়। কারণ ফ্লাইটসহ অন্যান্য জটিলতা রয়েছে। দূতাবাসের চাওয়ার প্রেক্ষিতে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে (যেখানে যা লেগেছে) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছে।

বৃহস্পতিবার ভোরে কূটনৈতিক জোনের বাসায় আচমকা অচেতন হয়ে পড়েন সিটি হানওয়ানস্‌ইয়া। চটজলদি তাকে কাছাকাছি অবস্থিত ইউনাইটেড হাসপাতালে নেয়া হয়। কিন্তু জরুরি বিভাগে পৌঁছার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক ঘোষণা করেন পথেই সিটি হারওয়ানস্‌ইয়া মারা গেছেন। ইন্দোনেশিয়ার দূতাবাস পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এভাবেই রিপোর্ট করেছে জানিয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, ভোর ৫ টার দিকে ঘটনাটি ঘটে। ঢাকায় সিটি হারওয়ানস্‌ইয়া একাই (সিঙ্গেল) ছিলেন। করোনাকালে রোগ-শোকহীন ২৮ বছর বয়সী ওই বিদেশির মৃত্যুর ঘটনায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফে আনুষ্ঠানিক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হয়। এতে জানানো হয়, ইন্দোনেশিয়া দূতাবাসের প্রশাসনিক কর্মকর্তা সিটি হারওয়ানস্‌ইয়ার অকাল মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন। তিনি মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত  পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। ড. মোমেন তৎক্ষণাৎ ঢাকাস্থ রাষ্ট্রদূত রিনা পি. সুমারনোকে ফোন করে ঘটনার বিস্তারিত জানার চেষ্টা করেন এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সব ধরণের সহায়তার আশ্বাস দেন। রাষ্ট্রদূত রিনা তার প্রয়াত সহকর্মীর খোঁজ-খবর নেয়ার জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান।

উল্লেখ্য, করোনার এই কঠিন সময়ে জানাজা ও দাফন হওয়ায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কেউ তাতে অংশ নেননি। যদিও মন্ত্রণালয় পুরো বিষয়টি দেখভাল করেছে। দূতাবাসের প্রতিনিধিরাও সামাজিক দূরত্ব মেনে তাদের সহকর্মীর নামাজে জানাজা এবং দাফন কাজে যোগ দেন।।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *