পেটেন্ট লঙ্ঘনে শাস্তি বাড়ছে

পেটেন্ট (স্বত্ব) না মানার শাস্তি বাড়ছে। শাস্তি বাড়িয়ে ‘বাংলাদেশ পেটেন্ট আইন, ২০২১’-এর খসড়ায় মন্ত্রিসভার বৈঠকে চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘পেটেন্ট ও ডিজাইন আইন ছিল ১৯১১ সালের। সেটা দিয়েই চলছিল। পরবর্তী সময়ে এত বেশি ডাইভারসিফিকেশন ও স্পেশালাইজেশন হয়ে গেছে যে একটা আইনে দুইটা কাভার করছিল না। পরে ২০১৬ সালে আইনটিকে দুই ভাগ করে একটা পেটেন্ট আইন, আরেকটি ডিজাইন আইনের খসড়া করা হয়েছিল। শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে আইনটি আনা হয়েছে।’ বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব অনুমোদনের কথা জানান। গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী ও সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মন্ত্রীরা ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে বৈঠকে যোগ দেন।

এছাড়া বৈঠকে ‘বাংলাদেশ শিল্প-নকশা আইন, ২০২১’-এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন ও আন্তর্জাতিক ভ্যাকসিন ইনস্টিটিউট (আইভিআই) প্রতিষ্ঠার চুক্তিতে অনুসমর্থনের প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব খসড়া পেটেন্ট আইন সম্পর্কে বলেন, খসড়া আইন অনুযায়ী, পেটেন্ট মালিক ২০ বছরের জন্য পেটেন্ট রাইট পাবেন। ২০ বছর পর এটা পাবলিক সম্পদ হয়ে যাবে। আদেশ পালনে ব্যর্থরা সুপারিশ করেছিলেন ২০-৮০ হাজার টাকার ক্ষতিপূরণ। এটাকে ৫-১০ লাখে উন্নীত করা হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আইনের অধীনে এখানে একটা রেজিস্টারের দপ্তর থাকবে। এ ব্যবস্থায় দপ্তর থেকে সবাই রেজিস্ট্রেশন করবে। একই সঙ্গে সুপারভিশন ও মনিটরিং করা হবে। এ রেজিস্টার ডিজাইন আইনেরও অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অধিদপ্তর হিসেবে কাজ করবে।

বৈঠকে ‘বাংলাদেশ শিল্প-নকশা আইন, ২০২১’-এর খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘আগের আইনের অধীনে ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস রেজিস্টার অধিদপ্তর ছিল, সেটা বহাল থাকবে। এ অধিদপ্তরের অধীনে একটি শিল্প ইউনিট থাকবে। এ আইনের অধীনে শিল্প-নকশা নিবন্ধনসংক্রান্ত সব কার্যক্রম সম্পন্ন হবে।’

তিনি আরো বলেন, ১৯৯৬ সালের ২৮ অক্টোবর ইউএনডিপির উদ্যোগে দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে একটি আন্তর্জাতিক ভ্যাকসিন ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার চুক্তি হয়, যেখানে বাংলাদেশও স্বাক্ষর করেছে। কিন্তু সেই ইনস্টিটিউটের পূর্ণ সদস্য হওয়ার জন্য আমাদের কেবিনেটের অনুমোদনের দরকার, সেজন্য এ প্রস্তাব তোলা হয়েছিল এবং তাতে অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এটা যদি আমরা করি, তাহলে বাংলাদেশে ভ্যাকসিন উৎপাদন এবং এ-সম্পর্কিত গবেষণাকাজে প্রশিক্ষণ, কারিগরি সহায়তা পাওয়া যাবে। এতে দেশের ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতাও বাড়বে। ভ্যাকসিন উৎপাদন, প্রয়োগ ও মান নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আরো যুগোপযোগী হবে। নতুন আবিষ্কৃত ভ্যাকসিনের প্রযুক্তি হস্তান্তরের মাধ্যমে দেশে নতুন ভ্যাকসিন উৎপাদন সহজতর হবে। ফলে দেশে স্বল্পমূল্যে ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে। আর ভ্যাকসিন রফতানির জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার যোগ্যতা অর্জনের পথও আমাদের জন্য সুগম হবে, যা বিদেশে বাংলাদেশের ভ্যাকসিনের বাজার সম্প্রসারণে সহায়ক হবে।

আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, আমাদের যেহেতু ফার্মাসিউটিক্যালস উৎপাদন ও মান মোটামুটি মানসম্মত, যা বিশ্বে প্রমাণিত। সুতরাং এক্ষেত্রে আমরা আশা করছি শিগগিরই বা দ্রুত এগুলো অর্জন করতে পারব। বর্তমান পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে এটা আরো বেশি প্রয়োজন বলে অনুভূত হয়েছে।

আইভিআইয়ের চুক্তিতে অনুসমর্থন না করলে দেশে টিকা তৈরির ক্ষেত্রে কোনো বাধা ছিল কিনা—এমন প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এতে কোনো সমস্যা ছিল না। ধরেন ফাইজারের সঙ্গে যদি কেউ চুক্তি করে, অরিজিনাল চুক্তি তো ফাইজারের। এখন ফাইজার যদি কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করে, তাদের সব প্রটোকল অনুযায়ী, তাহলে আর ওই চুক্তি লাগে না। তবে নতুন করে বাংলাদেশের কোনো প্রতিষ্ঠান, যেমন গ্লোব বায়োটেক যদি কোনো প্রডাক্ট এখান থেকে প্রডিউস করতে চায়, তাহলে আমাদের চুক্তির অধীনে শর্ত মানতে হবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরো জানান, অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামানের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে মন্ত্রিসভা। একুশে পদকপ্রাপ্ত অভিনেতা ও চিত্রনাট্যকার এটিএম শামসুজ্জামান গত শনিবার সকালে মারা যান।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *