পাপনের চোখে চার সেরা ক্রিকেটার

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভা শুরুর আগেই তামিম ইকবাল জানিয়ে দিয়েছেন তিনি বিশ্বকাপে খেলবেন না। কিন্তু তার এই সিদ্ধান্ত নিয়ে বিসিবি’র ভাবনা কী! অবশেষে গতকাল সন্ধ্যার আগে এলেন নাজমুল হাসান পাপন। সংবাদমাধ্যমে তুলে ধরলেন মিটিংয়ের নানা বিষয়। সেই সঙ্গে তামিমের সিদ্ধান্তকে জানালেন স্বাগত। তবে বললেন- তামিম চাইলে খেলতে পারতো। কারণ, বিসিবি সভাপতির সেরা চার ক্রিকেটারের তালিকাতে তিনিও একজন। পাপন বলেন, ‘আমার দেখা সবচেয়ে সেরা ওপেনার তামিম ইকবাল। সেরা ব্যাটসম্যান মুশফিক, সেরা অধিনায়ক মাশরাফি।

বাংলাদেশের সেরা খেলোয়াড় সাকিব আল হাসান। তামিম যদি দলে আসে, সে সব সময় প্রথম পছন্দ, বাদ দেয়ার প্রশ্ন আসে না।’ গতকাল দুপুর ১ টায় বাংলাদেশ দলের ওয়ানডে অধিনায়ক ফেসবুক লাইভে এসে জানিয়েছেন তিনি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলবেন না। তার কারণও ব্যাখ্যা করেছেন তিনি। আর তাতেই বাংলাদেশ ক্রিকেটে বইতে শুরু করে আলোচনা-সমালোচনার গরম হাওয়া।
অন্যদিকে ১৭ মাস তিন সপ্তাহ টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের বাইরে থাকা তামিমকে বিশ্বকাপ দলে রাখলেও হতো নানা আলোচনা-সামালোচনা। বিসিবিকে সেই বিব্রতকর পরিস্থিতি থেকে উদ্ধারও করেছেন তামিম ইকবাল তার ভিডিও বার্তা দিয়ে। পাপন বলেন, ‘একটা সমস্যা, তামিম অনেক দিন টি-টোয়েন্টি খেলছে না। নিউজিল্যান্ড, জিম্বাবুয়েতে টি-টোয়েন্টি খেলেনি। ওর ইনজুরি আছে। অনেকে প্রশ্ন করে, ও তাহলে ওডিআই খেললো কেন? ও ওডিআইয়ের অধিনায়ক, ঝুঁকি নিয়ে খেলেছে। সে এমনই, দায়িত্ব থাকলে সিরিয়াসলি খেলে। এখনকার দলটা ভালো খেলছে। হতে পারে আমাদের হোম কন্ডিশনে। যখন দল ভালো খেলে, খুব একটা দল চেঞ্জ করতে চাই না। সব চিন্তা করে ও যেটা বলেছে, সে ভালো কথাই বলেছে। ও জানে স্কোয়াডে থাকলে সে খেলবেই। সে মনে করেছে এটা হলে অনেকের জন্য ইনজাস্টিস হতে পারে। ও যেহেতু লম্বা সময় খেলছে না, এই চোট থেকে ফিরে বিশ্বকাপ খেলাটাও কঠিন।’
তামিমের এভাবে সরে যাওয়া নিয়ে থাকছে নানা প্রশ্নও। তাহলে কি বিসিবি’র চাপ ছিল তার ওপর? যদিও বিসিবি সভাপতি ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত বলেই জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এটা তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। ও আমাদের প্রথম পছন্দ। এ বিশ্বকাপ দলেও ছিল। কিন্তু নিজের ঘোষণার পর এই স্কোয়াডে সে থাকবে না। আজ আমাদের যে দল দিয়েছিল, সেখানেও সে ছিল। কিন্তু সে যেহেতু প্রত্যাহার করে নিয়েছে এখন থাকবে না। সামনে আরও বিশ্বকাপ আছে, সে আবার খেলবে আশা করি। সিদ্ধান্তটা সহজ নয়, এটা সাহসী সিদ্ধান্ত। সবাই বিশ্বকাপ খেলতে চায়।’
তামিমের সিদ্ধান্তের অন্য কারণও খোঁজা হবে
হঠাৎ করেই তামিমের এমন সিদ্ধান্ত নেয়ার কি অন্য কোন কারণ আছে! বিশেষ করে টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের বা দলের সঙ্গে তার দূরত্ব বেড়েছে বলেই কি এমন সিদ্ধান্ত! বিসিবি সভাপতি অবশ্য জানিয়েছেন তিনি এর অন্য কারণও খুঁজে দেখবেন। তিনি বলেন, ‘তামিমের ব্যাপারটা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে অনেকদিন ধরে। নিউজিল্যান্ডে টি-২০ খেলবে না জানিয়েছিল। জিম্বাবুয়েতেও জানিয়েছিল। অস্ট্রেলিয়া এল, তখনও জানিয়েছিল। এর বাইরে কোনো কাহিনী আছে কিনা, বসতে হবে। থাকতে পারে। জানি না। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ কিন্তু টেস্ট দলে ছিল না। ওকে আমার বাসায় নিয়ে বসেছিলাম। জিজ্ঞেস করেছি বারবার, টেস্টে সে আগ্রহী কি না। জানা মতে সে সবচেয়ে উপযুক্ত টেস্টে। তিন সংস্করণের মধ্যে। সে আমাকে প্রতিবার বলেছে খুব আগ্রহী টেস্ট খেলতে। আমরা বলেছিলাম কে কোন সংস্করণ খেলবে দাও, সে লিখে দিয়েছে টেস্ট খেলবে যদি দলে নেয়া হয়। এত কিছুর পর তাকে যখন পাঠানো হলো, সে কিন্তু লেট ইনক্লুশন ছিল। সে যখন ঘোষণাটা দিলো এটা একেবারে অপ্রত্যাশিত ছিল। তামিমের সঙ্গে এটা মেলাতে পারছি না। তামিমেরটা আমাদের জানা ছিল। রিয়াদেরটা অপ্রত্যাশিত ছিল। এভাবে উচিত নয়। এভাবে আকস্মিক কোনো প্লেয়ার ঘোষণা দিতে পারে না।’
এরই মধ্যে প্রকাশ করার কথা ছিল কেন্দ্রীয় চুক্তি। কথা ছিল বোর্ড সভায় অনুমোদন হলেই বিসিবি তা জানাবে। কিন্তু চূড়ান্ত হলেও তা প্রকাশ করেনি বিসিবি। যদিও নাজমুল হাসান জানিয়েছেন লাল বলের চুক্তিতে নেই রিয়াদ। আর সাদা বলের চুক্তিতে থাকলেও টি-টোয়েন্টি চুক্তিতে রাখা হয়নি তামিমকে। তিনি বলেন, ‘চুক্তিটা মে টু ডিসেম্বর। এতে অনেকে আছে। অনেকে নাই। তামিম যেহেতু বলছে, টি-টোয়েন্টিতে নাই সে। আবার ওডিআই, টেস্ট আছে। রিয়াদ যেহেতু ওখানে ঘোষণা দিয়েছে, এখনো সামনাসামনি কিছু বলে নাই। সে টেস্টে নেই। তামিম যদি খেলে তাহলে অন্তর্ভুক্ত হবে।’

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *