পানি ঢুকে তলিয়ে গেছে ১০৫ হেক্টর জমির ফসল

গত কয়েক দিনের ভারি বর্ষণ ও উজান নেমে আসা ঢলে নওগাঁর মান্দা উপজেলার আত্রাই ও শিব নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। মান্দার শিব নদের টেংরা এলাকায় দুই বছর আগে ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ মেরামত না করায় পানি প্রবেশ করে প্লাবিত হয়েছে ১০৫ হেক্টর জমির ফসল। ভেসে গেছে শতাধিক পুকুরের মাছ। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কয়েক হাজার কৃষক।

এদিকে দীর্ঘদিন ধরে পানিবন্দি থাকায় অধিকাংশ ক্ষেতের ফসলই নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষি কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, পানি যদি দ্রুত নেমে না যায় তাহলে ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়বে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নওগাঁর মান্দার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের শিব নদীর বেড়িবাঁধ টেংরা এলাকায় ২০১৮ সালে কেটে দেয় গ্রামবাসী। এর পর থেকে ভাঙনকবলিত এলাকা মজবুতভাবে মেরামত করা হয়নি। যখনই নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে তখনই ভেঙে যাওয়া অংশ দিয়ে বাইরে এসে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। তবে এবার ভারি বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে পানি বৃদ্ধির পরিমাণ অন্য বছরের তুলনায় অনেক বেশি। এতে তেঁতুলিয়া ও কালিকাপুর ইউনিয়নের প্রায় ১০৫ হেক্টর জমির ধান ও অন্যান্য রবিশস্য পানিতে প্লাবিত হয়েছে।

জানা গেছে, দক্ষিণ দিকে শিব নদীতে কোনো বাঁধ না থাকায় পানিতে প্লাবিত হতো তীরবর্তী গ্রামগুলো। তখন নিজেদের রক্ষা করার জন্য ওইসব গ্রামের মানুষ নদীর বেড়িবাঁধের টেংরা এলাকায় ৪০ ফুট কেটে দেয়। ভেঙে যাওয়া অংশটুকুর মেরামতকাজ ভালো না হওয়ার কারণে পরবর্তী সময়ে তা আবার ভেঙে যায়। সম্প্রতি শিব নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সেই পানিতে প্লাবিত হয়ে গেছে তেঁতুলিয়া ও কালিকাপুর ইউনিয়নের ১০৫ হেক্টর জমির ধান ও অন্যান্য ফসল। পানিতে ভেসে গেছে শতাধিক পুকুরের মাছ। এছাড়া পানি প্রবেশ করে গ্রামীণ কাঁচা রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। প্রতিদিন যেভাবে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে এতে গ্রামবাসী আতঙ্কে রয়েছে।

তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ব্রজেন্দ্রনাথ সাহা বলেন, ভাঙা অংশ দিয়ে হঠাৎ করেই পানি প্রবেশ করে আমার শতাধিক বিঘা পুকুরের মাছ পানিতে ভেসে গেছে। আমি এ অংশটুকু মেরামত করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার লিখিতভাবে আবেদন করেছি। আর আমাদের বড় ধরনের কোনো বরাদ্দও নেই যে তা দিয়ে পরিষদের পক্ষ থেকে মেরামত করব। দ্রুত এ ভেঙে যাওয়া বাঁধটুকু ভালোভাবে মেরামতের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

মান্দা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাকিবুল ইসলাম জানান, ভাঙা অংশ দিয়ে পানি ঢুকে ১০৫ হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে যায়। এর মধ্যে আউশ ধান রয়েছে ১০০ হেক্টর। বাকি পাঁচ হেক্টর বিভিন্ন সবজি। পানি দ্রুত না নামলে ক্ষতি বাড়তে পারে। তবে সামগ্রিক ক্ষতি নিরূপণে আরো সময় লাগবে।

নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান খান বণিক বার্তাকে বলেন, স্থানীয়রা কেটে দেয়ার জন্যই বাঁধের ওই অংশটুকু বারবার ভেঙে যায়। কিন্তু বাঁধটি পাহারা দিয়ে রাখা সম্ভব নয়। তাই স্থানীয়দের সচেতন হতে হবে আগে। এছাড়া এ অংশটুকু দ্রুত মেরামত করার জন্য কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানাব। বরাদ্দ পাওয়া গেলে দ্রুতই কাজ শুরু হবে।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *