পাঁচ বছরে ৬ হাজার ৭১৮ কোটি টাকার পণ্য রফতানি

পণ্য জট না থাকা ও ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে ব্যবসায়ীদের আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর। রফতানি গন্তব্যের দূরত্ব কম হওয়ায় খরচ কমছে। গুরুত্ব বাড়ছে ভোমরার। বাড়ছে পণ্য আমদানি-রফতানির পরিমাণ। বন্দরটি দিয়ে গত পাঁচ বছরে ৯ লাখ টনের বেশি পণ্য রফতানি হয়েছে, যার মূল্য ৬ হাজার ৭১৮ কোটি টাকা। ২০১৬-১৭ অর্থবছর থেকে ২০২০-২১ বছরে এসব পণ্য রফতানি করা হয়েছে। ভোমরা শুল্ক স্টেশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি রফতানি হয় খাদ্যপণ্য। বন্দরটি দিয়ে রফতানি করা পণ্যের মধ্যে রাইস ব্রান অয়েল (তুষের তেল), মধু, ক্লিনিক ক্লথ, পাটের সুতা, ঝুট কাপড়, পাটের চট, নারকেলের শলা, প্রাণের জুস, লিচু ড্রিংকস, প্রাণের চানাচুর ও চিপচ অন্যতম।

শুল্ক স্টেশনের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬-১৭ অর্থবছর থেকে ২০২০-২১ পর্যন্ত ভোমরা বন্দর দিয়ে ৯ লাখ ১৬ হাজার ৪৮২ টন বিভিন্ন প্রকার বাংলাদেশী পণ্য রফতানি করা হয়েছে। এর মধ্যে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১০ হাজার ৯৬৫ টন, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১ লাখ ২৫ হাজার ৮৭৮, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৩ লাখ ১২ হাজার ৪৬৩, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ২ লাখ ৫০ হাজার ৯৮৪ এবং সর্বশেষ ২০২০-২১ অর্থবছরে ২ লাখ ১৬ হাজার ১৯২ টন পণ্য রফতানি হয়েছে। রফতানীকৃত এসব পণ্যের মূল্য ৬ হাজার ৭১৮ কোটি ৫ লাখ টাকা।

ভোমরা বন্দর ব্যবহারকারী মেসার্স সুন্দরবন এজেন্সির স্বত্বাধিকারী দ্বীপংকর ঘোষ বলেন, বিদায়ী ২০২০-২১ অর্থবছরে তাদের পণ্য রফতানি বেশি হয়েছে। রফতানীকৃত এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে পাটের সুতলি, রাইস ব্রান অয়েল ও প্রাণ গ্রুপের কয়েক প্রকার পণ্য।

ভোমরা স্থলবন্দরের রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স গনি অ্যান্ড সন্সের ব্যবস্থাপক অশোক কুমার জানান, তার প্রতিষ্ঠানের অন্যতম রফতানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে ঝুট কাপড়। প্রতি মাসে ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার টন ঝুট পণ্য রফতানি করেন তারা।

তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানি-রফতানি বাড়লেও সেই তুলনায় বাড়ছে না বন্দরের সক্ষমতা। ফলে অনেক সম্ভাবনা থাকলেও সেটি কাজে লাগানো যাচ্ছে না। ভোমরা স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান নাসিম এ বিষয়ে বলেন, ভোমরা বন্দর দিয়ে ভারত থেকে পণ্য আমদানিতে যেমন ব্যবসায়ীদের আগ্রহ আছে, তেমনি দেশীয় পণ্য রফতানিও সহজ হচ্ছে। এ বন্দরের সক্ষমতা বাড়লে আগামীতে পণ্য রফতানি আরো বেশি হবে। তবে এ বন্দরে পণ্য আমদানিতে রয়েছে নানা ধরনের জটিলতা। পূর্ণাঙ্গ বন্দর হয়েও সব ধরনের পণ্য আমদানি করতে পারেন না ব্যবসায়ীরা।

সাতক্ষীরা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ সভাপতি নাসিম ফারুক খান মিঠু জানান, দেশের অন্যান্য বন্দরের তুলনায় ভোমরা বন্দর খুবই সম্ভাবনাময়। এ বন্দর ব্যবহার করে ব্যবসায়ীরা খুব সহজে পণ্য আমদানি-রফতানি করতে পারেন।

ভোমরা স্থলবন্দরের দায়িত্বরত কাস্টমসের বিভাগীয় সহকারী কমিশনার আমীর মামুন বণিক এ বিষয়ে বলেন, ব্যবসায়ীদের চাহিদার ওপর নির্ভর করে পণ্য রফতানি বা আমদানি হয়। তাছাড়া পণ্যজট না থাকার পাশাপাশি যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো ভোমরা বন্দর ব্যবহরে আগ্রহী হয়ে উঠছে।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *