‘নেপালের গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে, একে বাঁচান’

নেপালে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে। তাই এই গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে আন্তর্জাতিক সমর্থন চেয়েছেন নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির (এনসিপি) একাংশের চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল ওরফে প্রচণ্ড। তার মতে, প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির অধীনে নেপালের গণতন্ত্র হুমকিতে রয়েছে। এই দেশটিতে রাজনৈতিক চাপানউতোর চলছে প্রায় দু’মাস। এ সময়ে পার্লামেন্ট বিলুপ্ত করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। কিন্তু ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, বৃটেন বা চীন সহ কোনো বড় দেশ সেখানকার রাজনীতি নিয়ে কথা বলেনি। এ খবর দিয়েছে অনলাইন কাঠমান্ডু পোস্ট। এমন অবস্থায় দেশটির রাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল থেকে জটিল আকার ধারণ করছে।
প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি গত ২০ শে ডিসেম্বর পার্লামেন্ট বিলুপ্ত ঘোষণা করেন। এর প্রতিবাদে বুধবার কাঠমান্ডুতে বড় সমাবেশ আয়োজন করে পুষ্প কমল দাহালের নেতৃত্বাধীন এনসিপি। সেখানে বক্তব্য রাখেন পুষ্প কমল দাহাল ওরফে প্রচণ্ড। সেই সমাবেশে তিনি বলেন, নেপালের গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে। তাই আমি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন প্রত্যাশা করি। বিশেষ করে যাদের দেশে রয়েছে বিশ্বের বৃহৎ গণতন্ত্র, বিশ্বাস করেন গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও আদর্শ। আর আমাদের প্রতিবেশীদের প্রতি অনুরোধ করি কেপি শর্মা ওলির গৃহীত কর্মকা-ের বিরুদ্ধে কথা বলুন।
নেপাল কমিউনিস্ট পার্টি এখন দু’ভাগে বিভক্ত। একভাগের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল ওরফে প্রচণ্ড এবং মাধব কুমার নেপাল। অন্য গ্রুপে নেতৃত্বে রয়েছেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। কেপি শর্মা ওলি পার্লামেন্ট বিলুপ্ত ঘোষণার পর বিরোধী অংশ বিক্ষোভ করে যাচ্ছে। পার্লামেন্ট বিলুপ্ত করার দু’দিন পরেই নেপাল কমিউনিস্ট পার্টি ভেঙে যায়। নেপাল কমিউনিস্ট পার্টি নিজেদের বলে দাবি করতে থাকেন পুষ্প কমল দাহাল ওরফে প্রচণ্ড এবং মাধব কুমার নেপাল। অন্যদিকে ওলির অংশ দাবি করতে থাকেন পার্টির মালিক তারা। কেপি শর্মা এ দাবিতে গত শুক্রবার বিক্ষোভ করে। তার জবাবে বুধবার একই রকম বিক্ষোভ করে পুষ্প কমল দাহাল ওওরফে প্রচণ্ড ও মাধব কুমার নেপাল নেতৃত্বাধীন অংশ। এদিন বক্তব্যে যেমনটি বলেছেন প্রচণ্ড, ঠিক একই রকম বক্তব্য রেখেছেন মঙ্গলবার। এদিনও তিনি নেপালের গণতন্ত্র রক্ষায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন প্রত্যাশা করেন। পাশাপাশি রাজধানী কাঠমান্ডুতে অবস্থানরত বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে আলোচনা করেন তিনি। তবে এখানে লক্ষ্য করার বিষয়, পুষ্প কমল দাহাল ওরফে প্রচণ্ড বাদে তার অংশ থেকে অন্য কোনো নেতা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে কোনো সহায়তা চান নি। কিন্তু আন্তর্জাতিক মহল থেকে এখনও কোনো পক্ষ অবলম্বন করার খবর পাওয়া যায়নি। তবে প্রথম দেশ হিসেবে ভারত তার প্রতিক্রিয়া দিয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেছেন, নেপালে সাম্প্রতিক পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি আমরা। এটা তাদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আভ্যন্তরীণ ব্যাপার। নেপালই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। তবে একজন শুভাকাঙ্খী এবং প্রতিবেশী হিসেবে নেপালকে সমর্থন দিয়ে যাবে ভারত। এর জনগণের শান্তি, সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলায় সমর্থন দেবে ভারত। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র, বৃটেন, চায়না কেউ এ পর্যন্ত কোনো কথা বলেনি।
কাঠমান্ডুতে অবস্থিত পশ্চিমা মিশনের কমপক্ষে দুটি কূটনৈতিক সূত্র বলেছেন, নেপালের সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ১০ দিন আগে রাষ্ট্রদূত, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, বৃটেন ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে ভার্চ্যুয়াল বৈঠক হয়েছে। এতে ভারত ও চীনের রাষ্ট্রদূতরা অংশ নেন নি।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *