নির্মাণসামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধি মূল্য সমন্বয় ও রেট শিডিউল হালনাগাদের দাবি ঠিকাদারদের

দেশে এমএস রড ও অন্যান্য লৌহজাত পণ্য, পাথর, সিমেন্ট, ইট, স্যানিটারি, ইলেকট্রিক্যালসহ সব ধরনের নির্মাণসামগ্রীর দাম ২৫ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পাওয়ার দাবি করেছে দেশের নির্মাণ খাতের ঠিকাদার ও ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কনস্ট্রাকশন ইন্ডাস্ট্রি (বিএসিআই)। এ অবস্থায় চলমান কাজগুলোয় আইন অনুযায়ী মূল্য সমন্বয় এবং বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী সব দরপত্রের রেট শিডিউল হালনাগাদের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান বিএসিআইয়ের নেতারা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনটির সাবেক সভাপতি শেখ মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রায় ৪৫ শতাংশ দাম বেড়ে বর্তমানে প্রতি টন রড ৮০ থেকে ৮২ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। একইভাবে অন্যান্য নির্মাণসামগ্রীর দাম শ্রেণীভেদে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। শ্রমিক, সুপারভাইজার ও দক্ষ জনবলের মজুরি বেড়েছে প্রায় ৭০ শতাংশ। পাশাপাশি জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে লিটারে ১৫ টাকা। ফলে নির্মাণসামগ্রীর পরিবহন খরচও বেড়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, আইনে চলমান কাজের সঙ্গে নির্মাণসামগ্রীর মূল্য সমন্বয়ের বিধান থাকলেও তা সমন্বয় করা হয়নি। অন্যদিকে ২০১৮ সালের রেট শিডিউলে উন্নয়ন কাজের দরপত্র আহ্বান করা হচ্ছে। এসবের প্রভাবে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন উন্নয়ন কাজের সঙ্গে যুক্ত ঠিকাদাররা। কাজের স্বাভাবিক অগ্রগতি অর্জন না হওয়ার তারা বিল পাচ্ছেন না। ব্যাংকের ঋণও শোধ করতে পারছেন না। ঠিকাদারদের আর্থিক সক্ষমতা ব্যাপকভাবে হ্রাস পাচ্ছে। এমন অবস্থায় চলমান উন্নয়ন কাজগুলোর মূল্য সমন্বয়, বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী সরকারি দরপত্রের রেট শিডিউল হালনাগাদ এবং প্রকল্পের কাজে ব্যবহূত পানি ও বিদ্যুত্সংক্রান্ত খরচ গণপূর্ত অধিদপ্তরের রেট শিডিউলে সন্নিবেশিত করার দাবি জানান তিনি।

রফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের দাবি বাস্তবায়ন করা না হলে সরকারের সব নির্মাণ প্রকল্প স্থবির হয়ে পড়বে। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাধাগ্রস্ত হবে। একই সঙ্গে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে বিরূপ প্রভাব পড়বে এবং এক বিশাল শ্রমগোষ্ঠী কর্মহীন হয়ে পড়বে। পাশাপাশি ঠিকাদাররা ব্যাংকঋণ পরিশোধ করতে না পেরে দেউলিয়া হয়ে যাবেন; সে কারণে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএসিআইয়ের সভাপতি প্রকৌশলী সফিকুল হক তালুকদার, সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী এম খোরশেদ আলম, বর্তমান সহসভাপতি প্রকৌশলী বিমল চন্দ্র রায়, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ঠিকাদার সমিতির সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক, বাংলাদেশ গণপূর্ত ঠিকাদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক বাবুল আক্তার বাবলা, প্রকৌশলী হাসান মাহমুদ বাবু প্রমুখ।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *